নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট | 180 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
সুন্দরী এক মহিলার আতংকে নিউইয়র্কের ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশি বংশোদভূত ‘বৃষ্টি’ নামের এই মহিলার হাতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন ডজনের অধিক ব্যবসায়ী। অধিকাংশ ট্রাভেল ব্যবসায়ী তাদের কর্মচারিদের এই মহিলার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃষ্টি নিজেকে ট্রাভেল এক্সপার্ট হিসেবে পরিচয় দেন। বিভিন্ন ট্রাভেলস এজেন্সীর কাছ থেকে তার গ্রাহক বা ক্লায়েন্টদের টিকেট কিনে দেন। নিজেকে পরিচয় দেন আমেরিকান এয়ারলাইন্স বা ডেল্টা এয়ারলাইন্সের কর্মচারি হিসেবে। কিছুদিন মেসি স্টোরেও কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। প্রতারণার ফাঁদ তিনি পেতে রেখেছেন অন্যান্য ব্যবসাতেও। জ্যাকসন হাইটস কিংবা জামাইকার অনেক ব্যবসায়ীই তার প্রতারণার শিকার। গ্রোসারী ব্যবসা থেকে রেষ্টুরেন্টে ব্যবসায়ীরাও তার হাতে ক্ষতিগ্রস্থ। রেষ্টুরেন্টে খাবার পর ‘পার্টস আনতে ভুলে যাবার ঘটনা’ তার অহরহ। সাধারন গ্রহবধুরাও তার হাত থেকে রেহাই পান নি। সস্তায় ট্রাভেল টিকেট কিনে দেবার লোভ দেখিয়ে জামাইকা এলাকার অনেক মহিলার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। গত ১০ বছর ধরেই তিনি কমিউনিটির মানূষকে ঠকিয়ে ডলার হাতিয়ে নিচ্ছেন।
প্রতারণার দায়ে বৃষ্টি একাধিকবার হাজত বাস করেছেন। কিন্তু তিনি থেমে নেই। নিউইয়র্কের অধিকাংশ ট্রাভেল ব্যবসায়ীই তার ব্যাপারে এলার্ট। তার কাছে কেউ টিকেট বিক্রি করে না। কিন্তু তিনি থেমে নেই। নতুন কেউ ট্রাভেলস ব্যবসা শুরু করলেই তাকে টার্গেট করেন বন্যা। দু’একটি টিকেট কিনে ও ভালো পেমেন্ট করে আস্থা গড়ে তোলেন। এরপর বড় অংকের টিকেট কিনে লাপাত্তা। তার দেয়া চেক হয় বাউন্স। টেলিফোন ধরা বন্ধ করে দেন। তার হাতে প্রতারিত উল্লেখ্যযোগ্য ট্রাভেল এজেন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা ট্রাভেলস, কর্ণফুলি, এস্টোরিয়া ট্রাভেলস,জমজম ও মা ট্রাভেলস। বাংলা ট্রাভেলস এর কাছে তার দেয়া বাউন্সড ৬/৭টি চেক এখনও রয়েছে। যদিও তা কয়েক বছর আগের। বন্যা তাদের এজেন্সীতে এখন নিষিদ্ধ। জমজম ট্রাভেলস বৃষ্টির চেক বাউন্স হবার সাথে সাথে ইস্যুকৃত টিকেটগুলো বাতিল করেছে। কিন্তু তাকে কয়েকশত ডলার পেমেন্ট করতে হয়েছে ক্যানসেলেশন ফি বাবাদ। সে বেশির ভাগ টিকেট করেন জরুরী ফ্লাইং’র কাষ্টমারদের। জরুরী ভিত্তিতে টিকেট কিনে চেক ইস্যু করেন। যাত্রী পরদিন বা ২ দিন পর ফ্লাই করে। চেক ক্লিায়ারেন্স হতে ২ থেকে ৩ দিন লাগে। চেকগুলো ডিজঅনার হয়ে ফেরত আসে। এরপর বৃষ্টিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। অল্প কিছু অর্থ পে করে বাকী টাকা কিছুক্ষন পর জেলে পাঠাচ্ছি বা কাল নিয়ে আসবো তার কমন ডায়ালগ। অধিকাংশ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, সুন্দর ব্যবহার ও আন্তরিকতার সাথে কথা বলে এক ধরনের ‘হিপনোসিস’ করার দক্ষতা তার রয়েছে। নতুন যে কেউ তার ফাঁদে পা দিয়ে সহজেই প্রতারিত হতে পারেন। রাহমানিয়া ট্রভেলস সর্তকতা অবলম্বন করায় তার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ট্রাভেলস এজেন্টসদের সংগঠন (আটাব) এই মহিলার সাথে ব্যবসা করতে সদস্যদের মৌখিক সর্তক করেছেন।
সহজেই বন্ধু বানানোর কৌশল বৃষ্টির রয়েছে। বন্ধু হয়ে ২ হাজারের বেশি ডলার খুইয়েছেন মিসেস খান। ক্ষুদ্র ঋণ আদালতের শরণাপন্নও হয়েছেন তিনি। পারিবারিক বিপদের কথা বলে জামাইকার তার বাসায় গিযে ২ হাজার ডলার ধার নিয়েছিলেন। বছর গড়িয়ে গেলেও তা ফেরত পান নি। স্বামী সহ বসবাস করেন জামাইকায়। প্রতারণাকেই বৃষ্টি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
Posted ১২:২০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam