নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 258 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
লাখো আমেরিকানসহ হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশির ব্যাংক একাউন্ট থেকে ডলার চুরি হয়ে যাচ্ছে। উধাও হয়ে যাচ্ছে অর্থ। ব্যাংকগুলো তা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিনই সিটির ব্যাংকগুলোতে কাষ্টমাররা তাদের লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে হাজির হচ্ছে শাখাগুলোতে। টেলিফোন সার্ভিস সেন্টারে কল করে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কান পাতলে প্রতিদিনই রেষ্টুরেন্টগুলোতে বাংলাদেশিদের এ কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। অনেকেই আতংকে ব্যাংক কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড আপাতত ব্যবহার বন্ধ রাখছেন। এ হ্যাকিং এর প্রধান টার্গেট হচ্ছে ব্যাংক কার্ড বা ডেবিট কার্ডগুলো। মঙ্গলবার জ্যাকসন হাইটস্থ চেজ ব্যাংকের শাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় কয়েকজন কাষ্টমারকে। তারা অভিযোগ নিয়ে এসেছেন কার্ড থেকে টাকা চুরির ঘটনায়।
‘হ্যাকার চোরদের’ ব্যাংক থেকে ডলার তুলে নেয়া নিয়ে কথা হয় কমিউনিটি একটিভিস্ট এটর্নি মঈন চৌধুরীর সংগে। তিনি বলেন, আমি নিজেও এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। সিটি ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। এ সব অপকর্মের সাথে ব্যংক কর্মচারিরাও জড়িত বলে আমরা ধারনা। তিনি বলেন, এটা এক ধরনের ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিনই আমার ক্লায়েন্টরা ব্যংক একাউন্ট হ্যাক হবার কথা জানাচ্ছেন। কমিউনিটির সকলের প্রতি আহবান, আপনার একাউন্ট প্রতিদিন মনিটর করুন। অনলাইন ব্যাকিং এর ক্ষেত্রে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও ২ ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করুন।
আটলান্টিক সিটিতে বসবাস করেন ফরহাদ সিদ্দিক। তিনি আজকালকে তার স্টেটমেন্ট দেখিয়ে বলেন, একই দিনে আমার পিএনসি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড থেকে স্থানীয় গ্যাস স্টেশনে ৩ বার চার্জ হয়েছে। আমি সাধারনত স্টেটমেন্ট দেখি না। হঠাৎ করে এমন লেনদেন দেখে বিস্মিত হয়েছি।
জ্যাকসন হাইটসের ব্যবসায়ী মমিন মজুমদার প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, আমাদের একটি একাউন্ট থেকে গত মাসে ৭ দিনের মধ্যে হ্যাকাররা ৯ হাজার ডলার তুলে নিয়েছে। অবশ্য তারা ক্যাশ তোলে নি। বিভিন্ন স্টোরে ব্যাংক কার্ড ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন,ম্যানহাটনের চেইন স্টোর ‘শ্যাকস’ এ দামি দামি কাপড়চোড় কিনেছে। জর্জিয়া ও কানেকটিকাটে বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টে খরচ করেছে। এ ঘটনার পরপরই চেজ ব্যাংকে যোগাযোগ করি। তারা ২ দিনের মধ্যে রিকাভারির করার কথা বলে। ৩ দিনের মধ্যে পুরো টাকা ফেরত পেয়েছি।
ব্যাংকরেট পরিচালিত সার্ভে উল্লেখ করা হয়েছে, শতকরা ৪৪ ভাগ আমেরিকান মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে তাদের একাউন্ট ম্যানেজ করে। দিনদিন এ হার বাড়ছে। সাইবার সিকিউরিটি প্রোবলেম এখন দুনিয়াজুড়েই। সর্তকতাই রক্ষাকবজ। ফেডারেল ট্রেড কমিশনের(এফটিসি) তথ্যানুসারে, ২০২১ সালে কমিশন ২ কোটি ৮০ লাখ ফ্রড রিপোর্ট পেয়েছিল। যাতে সাধারন মানুষ খুইছে ৫.৮ বিলিয়ন ডলার। গত তিন মাসে ৫০ লাখের ওপর আমেরিকানের ব্যাংক একাউন্ট হামলার মুখোমুিখ হয়েছে। সর্বশেষ ‘সাইবার থেপট’ প্রসংগে এফবিআই’পাবলিক সার্ভিস এনাউন্সমেনট প্রদান করেছে। তাদের তথ্যানুসারে,গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ব্যাংকিং হ্যাক বহুগুণে বেড়েছে। বিশেষ করে ‘ফেক ব্যাংকিং’ অ্যাপস ব্যবহার করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে চোরেরা। এ’ছাড়া ‘ডার্ক ওয়েব’ থেকে ব্যাংকিং ইনফরমেশন কিনে নিচ্ছে । সে তথ্য ব্যহার করা হচ্ছে ব্যাংকিং সেক্টরে। একাউন্ট মনিটর করাই সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ।
Posted ৩:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam