
জাতীয় ডেস্ক | রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫ | প্রিন্ট | 16 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মো. সোহাগ (৩৯) নামে এক ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাটিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর)-তে উল্লিখিত ১৯ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে সাতজনকে র্যাব, সেনাবাহিনীসহ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
রোববার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১১তম সভা শেষে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার বাইরে গোয়েন্দা দল বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করে যাচ্ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে মঈন ও তারেককে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। গত শুক্রবার বিকেলে আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাছাড়া শুক্রবার রাতেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার রাতে এ ঘটনায় ডিবি আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সবমিলিয়ে এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয়জনকে ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে নারকীয়ভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ দেশব্যাপী সাম্প্রতিককালে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বদ্ধপরিকর। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশনে যাচ্ছে, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্তে আরো আসামি পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে ডিবির টিম সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় প্রশাসনিক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো শিথিলতা ছিল কিনা তা সরকার গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনার হত্যাকাণ্ডেও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সরকার এ মর্মে বিশ্বাস করে, অপরাধী অপরাধীই, তা সে যে দলেরই হোক না কেন। রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও দেওয়া হবে না। কোনও অপরাধীকেই পুলিশ প্রশ্রয় দেবে না।
সামাজিক অস্থিরতা, অসহিষ্ণুতা, নৈতিক স্খলন, প্রভৃতি কারণে সমাজে অপরাধপ্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দেশ ও সমাজ থেকে অপরাধ কমিয়ে আনার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমাদের সবার। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মিডিয়া, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, অভিভাবক, ছাত্র, শিক্ষক, সাধারণ জনতাসহ সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আর কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়- এ বিষয়ে জনসচেতনতা জরুরি। জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কোনও ঘটনা বা অপরাধ ঘটলে সেটা যেন যত দ্রুত সম্ভব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন- খুন, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, অপহরণ, নারী নির্যাতন, মব সহিংসতা, মাদক চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার যেকোনো সময় চিহ্নিত অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণসহ সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। সরকার জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী যেকোনো কার্যক্রম কঠোর হস্তে দমন করবে।
Posted ১০:১১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
nykagoj.com | Stuff Reporter