নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট | 289 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
নিউইয়র্ক সিটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাপকহারে বর্ণবাদী হামলার শিকার হচ্ছেন। গত কয়েক মাসে কুইন্স, ম্যানহাটন, ব্রুকলিন ও ব্রংকসে প্রায় ২০ এর অধিক বাংলাদেশি এ ধরনের হামলার শিকার হয়েছেন। কোন ধরনের কারন বা উস্কানী ছাড়াই বাংলাদেশিদের দেখে ‘গো ব্যাক ইয়োর কান্ট্রি’ মন্তব্য করছে। এর প্রতিবাদ করলেই হামলার কবলে পড়তে হয়। অনেক সময় রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় তারা গায়ের উপর থুথু ছুঁড়ে মারে। ছিনতাই এর ঘটনা ঘটছে অহরহ। এ হামলার সাথে জড়িতদের অধিকাংশই কৃঞ্চাঙ্গ বা স্পেনিশ বংশোদভূত।
গত মঙ্গলবার দিনের বেলায় জনসন্মুখে কনি আইল্যান্ডে কৃঞ্চাঙ্গ এক মহিলা সাংবাদিক মাহাথির ফারুকীর স্ত্রীর উপর হামলা করে। এতে তার কপাল ও ঠোট ফেটে যায়। ঘটনার আগ থেকেই কৃঞ্চাঙ্গ ঐ মহিলা মিসেস মাহাথিরকে উত্যক্ত করছিল। নিরপত্তাহীনতার কথা ভেবে তিনি এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশকে জানান। তারা কিছুক্ষন সেখানে অবস্থান করেন। কিছু সময়ের জন্য পুলিশ ঐ স্থান ত্যাগ করলে একই মহিলা আরও ২ বা ৩ জনকে নিয়ে এসে মিসেস মাহাথির স্ত্রীকে প্রচন্ডভাবে মারধর করে। তার মুখ ও ঠোট দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ সময় জ্বনাব মাহাথির গাড়ি পার্কিং এর জন্য ঘটনাস্থল থেকে দূরে ছিলেন। ফোন পেয়ে মাথির এসে স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ হামলাকারি মহিলাকে ভিডিও ফুটেজ দেখে খুজছে। রাতে চিকিৎসা শেষে মাহাথির স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় ফেরেন।
একই দিন ম্যানহাটনে হামলার শিকার হন ব্রুকলিন বাসিন্দা প্রবাসী বাংলাদেশি নিয়াজ মোর্শেদ। ৪ জুলাই মংগলবার সকাল ৮টায় কাজ থেকে বাসায় ফেরার পথে ম্যানহাটনে ৮ এভিনিউ এবং ২৩ স্ট্রিট সাবওয়ে স্টেশনে এক কৃঞ্চাঙ্গের হাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। এর ২ দিন আগেই নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু সাবওয়েতে হামলার কবলে পড়েন। তার একটি হাত ভেংগে গেছে। তিনি বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ব্রংকসের পার্ক চেষ্টার এলাকার আবুল হোসেন গেল মাসে জুম্মার নামাজ শেষে হেটে বাসায় ফেরার পথে হেট ক্রাইমের শিকার হন। কোন কারন ছাড়াই এক কৃঞ্চাঙ্গ যুবক তার পাঞ্জাবি ধরে টান দেয়। প্রতিবাদ করায় তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার ওপর ফেলে দেয়। এ ঘটনা দেখে স্থানীয় বাংলাদেশি লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারি দৌড়ে পালিয়ে যায়। ব্রংকসের ওয়েস্টচেষ্টার স্কয়ারস্থ এবিসি স্টোরের কাছে হেজাব পড়া বাংলাদেশি এক মহিলাকে লক্ষ্য করে স্প্যানিশ এক যুবক থুথু মারে। প্রতিদিনই এমনই হয়রানি, হামলা ও হেট ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। গেল বছরই ব্রকলিনের সাবওয়ে তে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির সভাপতি ডাঃ এনামুল হকের ভাগনীকে ট্রেনের নিচে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। ম্যানহাটনে সিলেট এলাকার বয়োবৃদ্ধ মাওলানা ইলিয়াছুর রহমানকে ধাক্কা দিয়ে প্লাটফর্মের ওপর থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল। এতে তার ঘাড় ভেঙ্গে যায়। কমিউনিটির অতি পরিচিত মুখ স্কুল শিক্ষিকা আলিয়া ফেরদৌসীকে উড হেভেন সাবওয়েতে সিড়িতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল স্প্যানীশ কতিপয় উগ্র কয়েক যুবক। তার মাথায় ও বুকে মারাত্মক জখম হয়। দীর্ঘ দিন তিনি মাউন্ট সাইনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অধিকাংশ বাংলাদেশিই ছোট খাট ঘটনায় পুলিশকে রিপোর্ট করেন না। বা করতে চান না। নিউইয়র্ক পুলিশ প্রশাসন এ ধরনের ঘটনায় সাথে সাথে রিপোর্ট করার আহবান জানিয়েছে। তারা বলেছেন, এতে হেট ক্রাইম সংগঠিত হয় এমন এলাকাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। প্রয়োজনে তা প্রতিরোধে পুলিশী টহল জোরদার করা যেতে পারে।
Posted ৩:২০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জুলাই ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam