
খেলা ডেস্ক | শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ | প্রিন্ট | 11 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়ে গেছে খণ্ডকালীন মেয়াদে। তাদের কাছ থেকে এখন পারফরম্যান্স বুঝে নেওয়ার পালা। এ কাজটি করতে গিয়ে হিসাব মেলাতে পারছেন না বিসিবি কর্তারা। ফিল সিমন্স ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অধীনে জাতীয় দলের এতটা বাজে ক্রিকেট খেলার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না পরিচালকরা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি২০ ম্যাচে চারজন ওপেনার খেলানোর সিদ্ধান্তের রহস্যের জট খুলতে পারছেন না তারা। বিসিবি কর্মকর্তারা বুঝতে পারছেন না কার সিদ্ধান্তে পরিচালিত হচ্ছে দল। এসব উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে গোলকধাঁধায় পড়ে গেছেন তারা।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে একগাদা অভিযোগ জমা পড়েছে। একাদশ নির্বাচন ও ক্রিকেটারদের রোল ঠিক করে দেওয়ায় তাঁর ভূমিকা বেশি থাকে বলে গুঞ্জন। ঢাকা থেকে একজন পরিচালক জানান, সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের মতো গুরুতর অভিযোগও ক্রিকেটারদের কাছ থেকে পেয়েছেন তারা। যদিও ক্রিকেটার এবং কোচিং স্টাফের সঙ্গে কথা বলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম কোচিং স্টাফের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। বিসিবির বাইরে জোর গুঞ্জন আছে, সালাউদ্দিনের কথায় জাতীয় দলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রধান কোচ ফিল সিমন্স অনেকটা উপদেষ্টা কোচের ভূমিকা পালন করছেন।
অনুশীলন ও ম্যাচ চলাকালে সালাউদ্দিনের তৎপরতা দেখে অনেকে বিষয়টি বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। নির্বাচক প্যানেলের দেওয়া ১৬ জন এবংএকাদশ নির্বাচনে তিনি জোরালো ভূমিকা পালন করেন বলেও বোর্ডের কাছে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে সালাউদ্দিনকে গতকাল হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সফরে জাতীয় দলের ব্যর্থতায় সালাউদ্দিনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বিষয়টি মানতে নারাজ নাজমুল আবেদীন। তিনি গতকাল ঢাকা থেকে ফোনে বলেন, ‘প্রধান কোচের ভূমিকা কম থাকার কারণ নেই। একাদশ নির্বাচন করেন প্রধান কোচ এবং অধিনায়ক। নির্বাচকের সঙ্গেও কথা বলেন তারা। যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে, আমি মনে করি না তা সঠিক। তেমন কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধান কোচই দল পরিচালনার সব সিদ্ধান্ত নেন। বাকি কোচিং স্টাফরা সমন্বয় করে প্রধান কোচকে সহযোগিতা করেন।’
ফাহিম জানান, টিম ম্যানেজমেন্টকে বোর্ড থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচকরাও তাদের কাজ করেন স্বাধীনভাবে। জাতীয় দলে পছন্দের ক্রিকেটার নেওয়ার ক্ষেত্রে সহকারী কোচের কোনো ভূমিকা নেই বলে জানান প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। একাদশ নির্বাচনে কোচ এবং অধিনায়কের সিদ্ধান্তই শেষ কথা বলে জানান তিনি।
টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, সিরিজের প্রথম টি২০ ম্যাচে চারজন ওপেনার খেলানোর সিদ্ধান্তে সালাউদ্দিনের ভূমিকা ছিল না। শ্রীলঙ্কায় দলের সঙ্গে থাকা প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমার পর্যবেক্ষণ হলো- প্রধান কোচ প্রথম দিকে সালাউদ্দিনের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন খেলোয়াড়দের সম্পর্কে ভালো জানতেন না বলে। আস্তে আস্তে সেটা কমে এসেছে। আমি যখন প্রথম নির্বাচক প্যানেলে আসি জাতীয় লিগের খেলোয়াড় চিনতে আমারও একই সমস্যা হয়েছে।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে নিক পোথাস যে রোল পালন করতেন সালাউদ্দিনের এখন সেই রোল। কোচের নির্দেশনা নিয়ে কে কখন ব্যাট করবে, বল করবে, সেগুলো দেখেন। বিদেশে দলের সঙ্গে থাকার ফলে আমি দেখেছি- কাজের ক্ষেত্রে কোচ সালাউদ্দিনের ওপর নির্ভর করলেও একাদশ নির্বাচনে ভূমিকা নেই। বরং সিমন্স সব কোচের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন। একাদশ নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়েই হয়।’
দলের ভেতরে সালাউদ্দিনের প্রভাব না থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠার কারণ কী? বাস্তবতা যেটাই হোক সহকারী কোচের পায়ের নিচের মাটি নরম হচ্ছে বলে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ পুনর্বিন্যাস করার সিদ্ধান্ত হলে সালাউদ্দিনের চুক্তি বাতিল করা হতে পারে।
Posted ৮:২১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
nykagoj.com | Stuff Reporter