নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১২ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট | 119 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
বাংলাদেশে নির্বাচনের আগেই র্যাবের মতো পুলিশের ওপর স্যাংশন আসতে পারে। মার্কিন পর্যবেক্ষনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকাকে গুরুত্বের সাথে নজরে নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে পুলিশকে ব্যবহারের অভিযোগ ক্ষমতাসীনরা ছাড়া সকল দলই করে আসছে। পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সম্প্রতি ঢাকা সফরকারি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈশ্বিক দূনীতি বিরোধী সমন্বয়কারি রিচার্ড নেফিউর এর কাছে ভিডিও ডকুমেন্টসসহ তুলে ধরেছে বিএনপি । পুলিশ বাহিনীর দূনীতির ক্ষতিয়ানও তুলে ধরেছে তারা। এ’ছাড়া গত ১৫ দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতায় পুলিশের ভূিমকাকে দায়ি করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।ঢাকায় অবস্থানকালে নেফিউর ৫০ এর অধিক ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করেছেন। যাদের বক্তব্যে পুলিশ ও প্রশাসনের দূনীতি এবং পক্ষপাতমূলক আচরনকে রাজনৈতিক সহাবস্থানের বড় বাধা বলে প্রাধান্য পায়। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে আলোচনায় নেফিউর সরাসরি এ দুটি সংস্থার কথা উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি তিনি রাজনীতিতে অর্থায়নের র্দুবৃত্তের ভূমিকায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ব্যাখা করেন। পররাষ্ট্র সচিব অত্যন্ত কৌশলে নরম সরে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশনকে দুর্নীতি দমনের টুলস হিসাবে ব্যবহার করে। দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসার ওপরে স্যাংশন আসতে পারে। এতে যুক্তরাষ্ট্র কাছে টানতে পারে কানাডা ও যুক্তরাজ্যকে। বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই এই ৩টি দেশ যৌথভাবে লেবানিজ কিছু ব্যবসায়ীর ওপর স্যাংশন দিয়েছে। লেবানন সেন্ট্রাল ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর রিয়াদ সালামাহ ও তার ৪ সহযোগী এই স্যাংশনের আওতায় পড়েছেন। উল্লেখ্য বাংলাদেশ সফরকারি এই মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈশ্বিক দূনীতি বিরোধী সমন্বয়কারি রিচার্ড নেফিউর লেবাননে দূর্নীতির ওপর গত ৩টি মাস কাজ করেছেন।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর গত ৯ জুলাই বেলারুশের ১০১ জনের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদের মধ্যে রাজনীতিবিদ ও কয়েকজন বিচারপতিও রয়েছেন। সেদেশে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার অভিযোগ রয়েছে তাদেও বিরুদ্ধে।
এদিকে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, সরকার বিদেশিদের চাপের মধ্যে আছে কিনা।জবাবে তিনি বলেন, বিদেশীদের চাপে নয়। বিবেকের চাপে আছি।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় অনেকদিন ধরে পশ্চিমা কূটনীতিকরা সরব থাকলেও এতদিন অনেকটাই চুপ ছিলো প্রতিবেশী ভারত। সেই নীরবতা ভেঙ্গে গত ৩ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে সেটি দেশটির জনগণই ঠিক করবে। একই সঙ্গে “শান্তি থাকবে, সহিংসতা থাকবে না এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে” এমন আশা ব্যক্ত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে নির্ধারণ করবে নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সেভাবেই হওয়া উচিত। নেফিউরের লাগামহীন বৈঠক, পররাষ্ট্র সচিব, আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও ভারতীয় পররাষ্ট্র দফতরের বক্তব্যের পর ঢাকার রাজনীতিতে নানা আলোচনা স্থান পাচ্ছে। সরকার সর্মথিত একটি টেলিভিশনের টক শো’তে একজন আলোচক পুলিশের ওপর মার্কিন স্যাশন জারি হলে তিনি অবাক হবেন না বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশে নির্বাচন মনিটরিং করে এমন একটি সংস্থার প্রধানের কাছে সাপ্তাহিক আজকালের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনে পুলিশ ও প্রশাসনের ভুমিকা নিরপেক্ষ রাখা সম্ভব কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। তিনি আজকালকে বলেন, প্রশ্নটি হচ্ছে নির্বাচনটি কোন ধরনের সরকার বা কার অধীনে হবে। সরকারের ধরনই বলে দেবে কোন সংস্থার ভূমিকা কি হবে। আর বিদেশিরা? জবাবে তিনি বলেন, তারা নির্বাচনে সরাসরি সম্পৃক্ত হবে না বা তা হবার সুযোগও নেই। তবে পুলিশ বা প্রশাসনের ভূমিকা যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের বড় বাধা হিসেবে সামনে চলে আসে তবে তারা নির্ঘাত স্যাশন খাবে।
এদিকে দূর্নীতির বিষয়টিকে সামনে এনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও রাজনীকিদের ওপর স্যাশন দেবার আলোচনা গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে মার্কিন প্রশাসনে। মার্কিন দূর্নীতি দমন বিভাগের তথ্যানুসারে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার হয় মূলত: ১১টি দেশে। এই দেশগুলো হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, কাতার, কানাডা, সাইপ্রাস,ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখন সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থের স্থিতি কমেছে অস্বাভাবিক ভাবে। এই দুটি দেশে পাচারকৃত অর্থ জব্দ হতে পারে এমন শংকা থেকেই এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে পাচারকারীরা তাদের অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ড থেকে সরিয়ে ফেলা শুরু করে। যে তিনটি দেশে যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ড থেকে বাংলাদেশীদের অর্থ গেছে সেই দেশ ৩টি হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া।
Posted ২:৪৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১২ আগস্ট ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam