শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হত্যা নয়, দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনা

ডেস্ক রিপোর্ট   |   রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   145 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

হত্যা নয়, দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনা

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দুরন্ত বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের শিকার নন; নৌ দুর্ঘটনার জেরে পানিতে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। তাঁকে বহনকারী নৌকাকে একটি লঞ্চ ধাক্কা দেয়। এতে নৌকাটি উল্টে যায়। মাঝি ও চার যাত্রী বেঁচে গেলেও দুরন্তকে খুঁজে পাননি স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। তাঁর পায়ের জুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বিপ্লবের বোন শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ওই ধরনের জুতাই তাঁর ভাই পায়ে দিতেন।

নিখোঁজ থাকার পাঁচ দিন পর গত ১২ নভেম্বর নৌ পুলিশ বুড়িগঙ্গা নদীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পানগাঁও থেকে বিপ্লবের লাশ উদ্ধার করে। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। সংশ্নিষ্ট চিকিৎসক বলেছিলেন, মৃতদেহের মাথার পেছনে ও বুকে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আঘাতের ধরন দেখে মনে হয়েছে, মাথায় সমান কোনো বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এ কারণে তিনি ধারণা করেন, এটি হত্যাকাণ্ড হতে পারে।

এখন মামলার তদন্ত-সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় লঞ্চ বা নৌকার সঙ্গে মাথায় আঘাত লাগতে পারে। তাঁরা মোটামুটি নিশ্চিত যে এটি হত্যাকাণ্ড নয়। বিপ্লব আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সদস্য ছিলেন।

কেরানীগঞ্জের খোলামোড়ায় তাঁর কৃষি খামার ছিল। ওই এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একাই থাকতেন তিনি। ৭ নভেম্বর খামার থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় ৯ নভেম্বর তাঁর বোন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ নিশ্চিত হয়, বিপ্লব ঘটনার দিন বিকেলে কামরাঙ্গীরচর মুসলিমবাগ এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় ছিলেন।

লাশ উদ্ধারের পর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বোন শাশ্বতী। মামলাটি কাগজে-কলমে নৌ পুলিশ তদন্ত করলেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থাও জড়িত হয়। অবশ্য বাদীপক্ষ মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করার জন্য ইতোমধ্যে পুলিশ সদরদপ্তরে আবেদন করেছে। এ দিকে রোববার ডিবি বিপ্লবের মৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবে।

পিবিআই ঢাকা জেলার এসআই ইমরান সালেহ বলেন, মামলার পর তারা ছায়াতদন্ত শুরু করে। বিপ্লব কৃষি খামার থেকে বের হয়ে কোন পথে যেতে পারেন- এমন ধারণা পেয়ে সেসব এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজে দেখা গেছে, কোনাখোলা থেকে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন দুরন্ত। তাতে আরও কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। তিনি জিনজিরা ফেরিঘাটে যান।

ইমরান জানান, পরে বিপ্লব বটতলা ঘাট থেকে শামসু মাঝির নৌকায় ওঠেন বুড়িগঙ্গা পার হয়ে সোয়ারীঘাটে যাওয়ার উদ্দেশে। বটতলা পার থেকে নদীর তিনভাগের দুইভাগ আসামাত্র ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করা মর্নিংসান-৫ নামে একটি লঞ্চ নৌকাটিতে ধাক্কা দেয়। এতে নৌকা উল্টে যায়। মাঝিসহ যাত্রীরা পড়ে যান নদীতে। আলেক মাঝিসহ কয়েকজন মিলে চার যাত্রী ও মাঝি শামসুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। লোকজন নৌকাটিও উদ্ধার করে। একজন নিখোঁজ থাকায় ঘটনায় মাঝি শামসু ভয়ে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে পালিয়ে যান। তাঁকে শনাক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর নৌকা থেকে বিপ্লবের জুতা উদ্ধার করা হয়। সেই জুতা এবং বিপ্লবের ছবি দেখে তাঁকে শনাক্তও করেছেন মাঝি শামসু।

‘সুস্পষ্ট’ প্রমাণ চায় পরিবার

বিপ্লবের মৃত্যু নিয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণের দাবি জানিয়েছে তাঁর পরিবার। শনিবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধনে এ দাবি জানান তাঁর স্ত্রী শারমিন তামান্না ও ছোট বোন শাশ্বতী বিপ্লব।

শাশ্বতী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা সবকিছুর সুস্পষ্ট প্রমাণ চাই। দুরন্ত কীভাবে মারা গেছে, আমাদের তার সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে হবে। জোর করে কোনো গল্প বিশ্বাস করাতে পারবেন না।’

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com