নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 259 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
মেয়র অফিসের লোকজন দায়ি-মুসা
বাংলাদেশি কমিউনিটি অনেক শক্তিশালী-জাকি
নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামসের ব্রংকসের পার্কচেষ্টার আগমনকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটে গেল। মেয়র কেন আসলেন না তা নর্থ ইস্ট ব্রংকসের পার্কচেষ্টারে এখন আলোচনার বিষয়। দুই শতাধিক বাংলাদেশি ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্কস্টোরের গোলডেন প্যালেসে গিয়ে জানতে পারেন মেয়র আসছেন না।তাৎক্ষনিকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। অনুষ্ঠান বাতিলের ঘোষণা কেন আগ থেকে দেয়া হয়নি। এ দিন শতশত কমিউনিটির মানুষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেয়ে ছিলেন। অনেকে সকালে মুখে মুখে জানতে পারেন মেয়র আসছেন না। এই কর্মসূচি নিয়েও ছিল বিভ্রান্তি। কে এর আয়োজক। তা নিয়েও কানাঘুষা ছিল। কি জন্য এ অনুষ্ঠান তা নিয়ে ছিল নানামুখি প্রচারনা। একটিতে লেখা ছিল মেয়রের সবংর্ধনা। ছাপানো এ দাওয়াত পত্র বা ফ্লায়ারে অবশ্য বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দের নাম দেখা যায়। এই ফ্লায়ারে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন এম এন মজুমদার, আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী জ্যাকি,বিল্লাল ইসলাম. এ ইসলাম মামুন,মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, খলিলুর রহমান, শেখ মুসা ড্রামি (আফ্রিকান বংশোদভূত, কমিউনিটি একটিভিস্ট), আরিফ রেজা, মনজুর চৌধুরী জগলু ও ইব্রাহিম বারভূইয়া। অন্য একটি দাওয়াতপত্রে দেখা যায়, এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বা অরগানাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আফ্রিকান বংশোদভূত কমিউনিটি একটিভিস্ট শেখ মুসা ড্রামি। বিভিন্ন মিডিয়া পারসনদের কাছে পাঠানো টেক্সট মেসেসে যোগাযোগের জন্য তারই ই-মেইল ব্যবহার করা হয়। যাতে বলা হয়, বাংলাদেশের ৫১তম বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে মেয়র উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশিদের প্রোগাম বলা হলেও বিস্মযের বিষয় হচ্ছে, এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বা অরগানাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আফ্রিকান বংশোদভূত কমিউনিটি একটিভিস্ট শেখ মুসা ড্রামি। যা’হোক প্রধান অতিথি বা যার সবংর্ধনা তিনিই জানতেন এই অনুষ্ঠানের কথা। তার কর্মসূচিতেও ছিল না। তিনি ঐদিন ছিলেন শহর থেকে ২৫০ মাইল দূরে আলবেনীতে। কেন এমন হলো? কার দায়িত্বহীনতায় বিব্রতকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলো? কমিউনিটিকে নিয়ে এ তামাশার অর্থ কি? এমন প্রশ্ন অনেকেরই।
এ ব্যাপারে শেখ মুসার কাছে জানতে চাওয়া হয় নিউইয়র্ক কাগজের পক্ষ থেকে। তিনি বলেন, একটি ‘বিগ মিসকমিউনিকেশন’ হয়েছে। মেয়র অফিসের লোকজন এর জন্য দায়ি। আমি ২ মাস আগে এ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মেয়রকে আমন্ত্রন জানিয়ে আবেদন করি। মেয়র অফিসের লোকজন সেটি পান। আমি টেলিফোনে যোগাযোগও করি। তারা জানান, সময়মতো তা মেয়রের কর্মসূচিতে উঠবে। কমপক্ষে ৫ জন কর্মকর্তা আমাকে এ কথা বলেন। তারমধ্যে মেয়রের একজন সিনিয়র এডভাইজারও রয়েছেন। তবে তার নাম বলা ঠিক হবে না। তাদের কথামতোই বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রাখছিলাম অনুষ্ঠান আয়োজনের। আপনারা মেয়র অফিস থেকে কনফার্মেশন না পেয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজনের দিকে গেলেন কেন? জবাবে মুসা বলেন, আমি বারবার তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে,সময় মতো সব হয়ে যাবে। ‘মেয়রের চারপাশের লোকজন এটা নিয়ে কাজ করছিল। কিন্তু আগের দিন জানতে পারি মেয়রের অনুষ্ঠান সূচিতে আমাদের প্রোগ্রাম নেই। সাথে সাথে বাংলাদেশি লিডার মজুমদারকে তা অবহিত করি। মজুমদার এ কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুসা প্রতিবেদককে আরও বলেন, পরে মেয়রের সাথে এ ব্যাপারে আমার কথা হয়েছে। তার অফিসের লোকজন তাকে কিছুই জানায় নি। এটি একটি বিগ মিসকমিউনিকেশন। মেয়র বাংলাদেশিসহ ইমিগ্রান্টদের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি নতুন তারিখ দিয়ে আসতে চেয়েছেন। পুরো ঘটনার জন্য আমি বা বাংলাদেশি কেউ দায়ি নই। মেয়র অফিসের লোকজনদের খামখেয়ালিতে এটা হয়েছে।
কাগজের পক্ষ থেকে এম এন মজুমদারের দৃষ্টি আর্কষন করা হয়। তিনি বলেন, মেয়র অফিস দাওয়াতের ই-মেইলই পায়নি। আমি এ অনুষ্ঠানের একজন স্পন্সর ছিলাম মাত্র। মুসা ছিল এর অরগানাইজার। ভুল বোঝাবুঝির জন্য এটা হয়েছে। অনুষ্ঠানটির আগের দিন চেক করার জন্য মেয়র অফিসে কল করেছিলাম। তারা জানালেন, ব্রংকসে যাবার কোন কর্মসুচি মেয়রের নেই। আমারতো আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা। পরে জানতে পারলাম মেয়র অফিস অনুষ্ঠানিকভাবে এ অনুষ্ঠানের কথা জানতোই না। মজুমদার বলেন, মুসা একজন নাইস পারসন। আমাদের কমিউনিটির পরীক্ষিত বন্ধু। একটি ভুল বুঝাবুঝি হয়ে গেছে। তবে মেয়র না আসলেও ১৫ ফেব্রুয়ারি গোল্ডেন প্যালেসে দায়সাড়াভাবে মুসার নেতৃত্বে একটি অনুষ্ঠান হয়েছে ‘গর্জিয়াস মোসাইক কোয়ালিশনের’ নামে। আমরা সেখানে উপস্থিত ছিলাম।
ব্রংকস বাংলাবাজার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী জ্যাকি নিউইয়র্ক কাগজকে বলেন, এই ধরনের প্রোগ্রামগুলো হাতে নেবার ক্ষেত্রে সর্তক থাকা উচিত। এরিক এডামসের ফান্ড রেইজ করার সময় আমরা সরাসরি যোগাযোগ করে অনুষ্ঠান করেছিলাম। তখন কিন্তু আমরা সফল ছিলাম। এবার তারা প্রোগাম হাতে নিয়ে আমার কাছে সহায়তা চেয়েছিল। আমি সহায়তার দেবার জন্য রাজি হয়েছিলাম। তবে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। আয়োজকরা ভুল একটা করেছে। তবে এটি কিন্তু বাংলাদেশিদের প্রোগ্রাম ছিল না। আফ্রিকান কমিউনিটি এটির সাথে জড়িত ছিল। সিডিউল নিশ্চিত না করে মুসার এতোদূর এগুনো ঠিক হয়নি। জ্বনাব জ্যাকি ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার রিপিট না ঘটে সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকতে বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কমিউনিটিকে কারও সাথে কোয়ালিশন করে কোন অনুষ্ঠান করার দরকার নেই। আমরা কমিউনিটি হিসেবে যথেষ্ঠ শক্তিশালী একক প্রোগ্রাম করার জন্য। অন্যদের ভুলের জন্য আমরা খেশারত দেব কেন?
Posted ৪:৪৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam