বুধবার ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আশা কলেজ : যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা ২ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর অনিশ্চয়তা

মনোয়ারুল ইসলাম   |   শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   556 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আশা কলেজ : যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা ২ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর অনিশ্চয়তা

যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা ২ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর জীবন বিভীষিকাময় হয়ে উঠেছে। তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশা কলেজ হঠাৎ করে বন্ধ করে দেবার ঘোষণায় তাদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাদের স্টুডেন্ট ভিসা থাকবেতো? অন্য কলেজে ট্রান্সফার হওয়া যাবে কিনা? আশা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সিটি ইউনিভিারসিটি অব নিউইয়র্ক (কিউনি) গ্রহন করবে কিনা? তাদেরকে নতুন কলেজ আই-২০ দিবে কিনা? সেমিস্টার লস ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আশা কলেজের ট্রান্সক্রিপ্ট অন্য কলেজগুলো কিভাবে মূল্যায়ন করবে? এমনই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত ১ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী স্টুডেন্ট ভিসা (এফ-১) ভিসা নিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাদের মধ্যে ২ হাজার শিক্ষার্থীই আশা কলেজে এনরোলমেন্ট করেছে। কেউ বাংলাদেশ থেকে এসে সরাসরি আশা কলেজে, আবার অনেকে অন্য স্টেটের বিভিন্ন কলেজ থেকে ট্রান্সফার নিয়ে এসেছে। ইমিগ্র্যান্ট ও বাংলাদেশি ফ্রেন্ডলি স্টেট হওয়ায় তারা নিউইয়র্ককেই বেছে নেয়। আশা কলেজও হয়ে ওঠে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় শিক্ষাঙ্গন। কলেজটির ম্যানহাটন ও ব্রুকলিন ক্যাম্পাস ছিল বাংলাদেশি ছেলেমেয়েদের পদচারনায় মুখরিত। মনে হতো ঢাকারই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু হঠাৎ করেই মাথায় বাজ পড়ে কলেজটির সাড়ে ৪ হাজার ছাত্রছাত্রীর। গত ২১ অক্টোবর কলেজের ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেয়া হয় ‘আশা কলেজ নতুন করে এনরোলমেন্টের জন্য আবেদন গ্রহন করছে না।’ ইতিমধ্যে ম্যানহাটন ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেছে। ফ্লোরিডার হিয়ালিয়া প্রতিষ্ঠানটির তৃতীয় ক্যাম্পাসও বন্ধ। শুধুমাত্র প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য ব্রুকলিনের ক্যাম্পাসটি খোলা রয়েছে। বর্তমান সেশনে ছাত্রছাত্রীরা অল্প পরিসরে অনলাইনে ক্লাস করছে।
আশা কলেজ স্টেট ও ফেডারেল শিক্ষা বিভাগের বেশ কয়েকটি গুরুতর ভায়োলেশন খেয়েছে। আগামী ২৩ মার্চ ২০২৩ সাল থেকে কলেজটির অ্যাক্রেডিটেশন বাতিল বলে গন্য হবে। হায়ার এডুকেশন কমিশনের স্ট্যান্ডার্ড পূরন না করতে পারায় তাদের সনদ বাতিল করা হয়েছে। এটি জানাজানি হবার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ইন্টারন্যাশনাল ছাত্র হিসেবে স্ট্যাটাস রক্ষা, শিক্ষার ভবিষৎ কি হবে? লাখ লাখ টাকা খরচ করে এসে অনিশ্চিয়তায় পড়ে যাওয়া, কোথায় আবার ভর্তির সুযোগ পাওয়া যাবে এমনি নানাবিধ ইস্যু তাদের সামনে চলে আসে। হোয়াটস অ্যাপে ‘আশা কমিউনিটি’ নামে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের একটি সাইট খোলা আছে। এর সদস্য সংখ্যা ৪ শতাধিক এর উপরে। প্রতিনিয়ত তারা চ্যাটিং করছেন তাদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে। এই গ্রুপে রয়েছেন কলেজটির এডভাইজার আগাথা সাবিনা। তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ধৈর্য হারাবে না। আমরা অন্য কলেজগুলোর সাথে কাজ করছি। যাতে তারা তোমাদের করা ক্রেডিটগুলো গ্রহন করে। তবে এ জন্য আমাদের সময় প্রয়োজন। একজন ছাত্রের টেলিফোনের জবাবে সাবিনা বলেছেন, আমাদের অ্যাক্রেডিটেশন বাতিল হবে আগামী মার্চে। এর আগেই তা ফিক্সড করা যায় কিনা চেষ্টা চলছে। এদিকে প্রতিদিন অসংখ্য উদ্বিগ্ন ছাত্রছাত্রী যাচ্ছেন ব্রুকলিন ক্যাম্পাসে। জানতে চাচ্ছেন পরিস্থিতির খবরা খবর। কিন্তু কিছুই জানতে পারছেন না। ট্রান্সক্রিপ্ট তুলতেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অনেকে সিটির বিভিন্ন কলেজে গিয়ে ট্রান্সফার হবার নিয়ম কানুন জানার চেষ্টা করছেন। ইসরাত মুমু নামের একজন ছাত্রী স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আর আশা কলেজের পিছে ঘুরো না। ট্রাই টু গেট ট্রান্সফার রাইট নাও। আমি ইতিমধ্যে নিয়ে ফেলেছি।’
আশা (এডভান্সড সফটওয়ার এনালাইসিস) কলেজটি ১৯৮৫ সালে মাত্র ১২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে শুরু হয়েছিল। সর্বশেষ এর চাত্রছাত্রী সংখা ছিল সাড়ে ৪ হাজার। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাচেলর, এসোসিয়েট ডিগ্রী ও প্রফেশনাল সার্টিফিকেট প্রদান করতো। ৬০টি ফুলটাইম ফ্যাকাল্টি ছিল। অনিয়মের অভিযোগে ঐতিহ্যবাহী প্রাইভেট কলেজটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

Facebook Comments Box

Posted ১:৪৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com