মঙ্গলবার ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে টক অফ দ্যা টেবিলঃঠিকানা ও লাবলু আানসার

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   534 বার পঠিত

 

নিউইয়র্কে সাংবাদিক হিসেবে খ্যাত লাবলু আনসার। সম্প্রতি  বির্তকিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে। নিউইয়র্কে মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি তিনি। আমেরিকায় তিনি আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রান । ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও রয়েছে । বসুন্ধরা গ্রপের বাংলাদেশ প্রতিদিন নিউইয়র্ক সংস্করনের (সাপ্তাহিক) নির্বাহী সম্পাদক। তার সাবেক কর্মস্থল সাপ্তাহিক ঠিকানা। সেখানে যৌবনের টানা ২২টি বছর কাজ করেছেন। রিপোর্টার থেকে শুরু করে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন ওমরাহ হজ্ব পালন শেষে। নিজ জেলা জামালপুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবের দেয়া এক সংবর্ধনায় তার সাবেক পত্রিকা ঠিকানাকে “রাজকারদের পত্রিকা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।

আর এর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সম্পাদক এম এম শাহিন। লাবলু আনসারের বক্তব্য ও এম এম শাহিনের প্রতিক্রিয়া এখন নিউইয়র্ক সিটিতে টক অব দ্যা কমিউনিটিতে পরিনত হয়েছে। নিউইয়র্ক কাগজ (এনওয়াইকাগজ.কম) কমিউনিটির পাঠকদের জন্য ভাইরাল ভিডিও ও এম এম শাহিনের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরলো।

এম এম শাহিন নিজস্ব ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন  “সাংবাদিক লাবলু আনসার : যেই থালায় খায় সেই থালা ফুটো করা যার স্বভাব।জামালপুর প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে গত ৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক লাবলু আনসার, যিনি নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বহির্বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত বাংলা সংবাদপত্র ঠিকানায় দীর্ঘ ২২ বছর কর্মরত ছিলেন। ঠিকানা ছেড়ে বর্তমানে তিনি কর্মরত আছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের আমেরিকা সংস্করণে। ওই অনুষ্ঠানে জামালপুরের স্থানীয় সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লাবলু আনসার ঠিকানা সম্পর্কে এমন এক আপত্তিকর কথা বলেন, যা চরম মানহানিকর, অসত্য, ধৃষ্ঠতাপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা (!) দাবি করে তিনি বলেন, ঠিকানা রাজাকারদের পত্রিকা। বাঁচার তাগিদে ওই পত্রিকায় দীর্ঘ ২২ বছর চাকরি করলেও কোনো দিন তার স্বনামে কোনো সংবাদ বা লেখা তাতে ছাপা হয়নি।
লাবলু আনসারের ওই ঢাহা মিথ্যা কথাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে তার সম্পর্কে শুধু একটি শব্দই প্রযোজ্য – অকৃতজ্ঞ।
২২ বছর যে থালায় খেল, তাকে মুহূর্তের মধ্যে ফুটো করে দেওয়া একমাত্র লাবলুর মতো অকৃতজ্ঞদের পক্ষেই সম্ভব। আর তার স্বনামে ঠিকানার পাতায় অসংখ্য লেখা ছাপা হয়েছে, যা ঠিকানা কর্তৃপক্ষের হাতে সংরক্ষিত আছে। মুখে মিথ্যার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে মানুষকে সাময়িক বিভ্রান্ত করা যায়, কিন্তু ছাপার অক্ষরকে তো আর অস্বীকার যায় না। লাবলু আনসারের নামে ঠিকানায় প্রকাশিত একেকটি লেখা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে তিনি কত বড় মিথ্যাবাদী ও বেইমান।
আজ থেকে তিন দশক আগে সাংবাদিকতার এবিসি শিখে নিউইয়র্কে পাড়ি জমিয়ে যখন এক বেলা পেটের ভাতের জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে লাবলু আনসারের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল ঠিকানা। ঠিকানা তাকে দিয়েছিল অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান। ঠিকানাই তাকে হাতেকলমে সাংবাদিকতার পাঠ দিয়েছিল। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিচর্যার মাধ্যমে অচেনা-অখ্যাত এক লাবলুকে ঠিকানাই পরিচিত করে তুলেছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে। ঠিকানাই তাকে দিয়েছিল একের পর এক পরিচিতি। সাধারণ একজন রিপোর্টার থেকে শুরু করে সিনিয়র রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক এবং সর্বশেষ সম্পাদকের মতো আসনে ঠিকানাই তাকে বসিয়েছিল। কিন্তু এত সুখ-সম্মান-সমৃদ্ধি লাবলুর মতো অকৃতজ্ঞ, লোভী, অহংকারী, নির্লজ্জ, অপদার্থ বহন করতে ব্যর্থ হলো। দিনকে দিন তার চাওয়া-পাওয়ার উদগ্র বাসনা তাকে মানুষরূপী পিচাশে পরিণত করল। অতি লোভী লাভলু ঠিকানার মতো পত্রিকার সম্পাদক পদ ছেড়ে তিনি যোগ দিলো বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিউ ইয়র্ক সংস্করণের নির্বাহী সম্পাদক পদে। একটি পত্রিকার সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী সম্পাদক। পত্রিকার সকল সফলতা-ব্যর্থতা সম্পাদকের ওপরই বর্তায়। ঠিকানা যদি রাজাকারদের পত্রিকাই হয়, তাহলে লাবলু আনসার ঠিকানার সম্পাদকের মতো সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকে নিজেকে কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করতে পারেন? একজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে কি ২২ বছর ধরে কোনো রাজাকারের পত্রিকায় কাজ করা সম্ভব? আসলে প্রতিহিংসাপরায়ণ লাবলু ঠিকানার সঙ্গে পেরে উঠতে না পারায় এখন আবোলতাবোল বকছেন। তিনি এমন এক ব্যক্তি, স্বার্থ ফুরোলে যিনি বাবাকেও ভুলে যান।সিলেটি একটি প্রবাদ আছে “ কার হগদায় খাওগো বান্দি ঠাকুর চিনো না”
বাংলার বিখ্যাত রাজনীতিবিদ শেরেবাংলা একে ফজলুল হক বলেছিলেন, একেবারে নিঃস্ব কাউকে সাহায্য করলে সঙ্গে তার হাতে একটি লাঠিও দিয়ে দিয়ো। কারণ বড় হয়ে একদিন ওই ব্যক্তি উপকারীর পিঠেই প্রথম লাঠির আঘাতটা করবে। লাবলু আনসারের ক্ষেত্রে শেরেবাংলার এই উক্তি একেবারেই যথার্থ। ঠিকানা ছেড়ে দিয়ে লাবলু শুরুতেই নেমে পড়লেন ঠিকানার বিষোদ্গারে। কিন্তু প্রবাসীদের প্রিয় মুখপত্র ঠিকানাকে হার মানাতে গিয়ে তিনি নিজেই কাহিল হয়ে পড়লেন। ঠিকানার সঙ্গে কোনোভাবেই না পেরে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নিলেন মিথ্যার। বললেন, ঠিকানা রাজাকারের পত্রিকা।
অথচ একুশের চেতনা বুকে ধারণ করে আজ থেকে প্রায় ৩৪ বছর আগে ঠিকানার জন্ম। দলমত-নির্বিশেষে প্রবাসীমাত্রই জানেন, ঠিকানা কারো তাঁবেদারি করে না। ঠিকানা কোনো ব্যক্তি, দল, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের লিফলেট নয়। ঠিকানা কথা বলে প্রবাসীদের পক্ষে, বাংলা ভাষার পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে। আর যে পরিবারের হাতে ঠিকানা প্রতিষ্ঠিত, সেই পরিবারটি একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের হাতে প্রতিষ্ঠিত একটি পত্রিকার গায়ে রাজাকারের তকমা এঁটে দেওয়া লাবলু আনসারের মতো অর্বাচীন, বিবেকবর্জিত, নীতিভ্রষ্ট ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ঠিকানা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে, এখনো হচ্ছে। লাবলু আনসারদের মতো গুটি কয়েক কুচক্রীর হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা বরাবরই সইতে হচ্ছে। কিন্তু সূর্যকে যেমন মেঘ ঢেকে রাখতে পারে না, ঠিকানার এগিয়ে চলাও তেমনি কোনো চোখরাঙানি, চক্রান্ত ও হীনম্মন্যতা রুদ্ধ করতে পারেনি। একুশের জাতক ঠিকানা সব সংকট সততা, ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আমার বিশ্বাস, অকৃতজ্ঞ লাবলু আনসাররা একদিন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেই আর পাঠক, পৃষ্ঠপোষক, লেখক, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা ও সমর্থনে ঠিকানা তার শীর্ষ অবস্থান অটুট রেখে এগিয়ে যাবে যুগ-যুগান্তর।”
নিউইয়র্ক কাগজ ঢাকায় লাবলু আনসারের সাথে দুই দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। তবে তার সর্বশেষ প্রতিক্রিয়া নেবার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com