অপরাধ ডেস্ক | মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 82 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
নব্য জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান রনবীর ও তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মৃধা আলমকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-২, র্যাব-৩ ও র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানে কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ইয়াহিয়া গার্ডেনের গহীন বনাঞ্চল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার র্যাবের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য এবং পার্বত্য অঞ্চলে সামরিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট উদ্ধার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে।
অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি পিস্তলের ম্যাগজিন, ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি খালি কার্টিজ, দুটি একনলা বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, একটি খালি কার্টিজ, ১০০ রাউন্ড .২২ বোরের গুলি এবং পার্বত্য অঞ্চলে সামরিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ভিডিও কন্টেন্ট।
গ্রেপ্তার মাসুকুর রহমান রনবীর ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ এর অন্যতম শূরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান। ২০১৭ সালে জামাতুল আনসারের শূরা সদস্য এবং অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান রাকিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং সে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে জামাতুল আনসারে যোগদান করে। এছাড়া সিলেট অঞ্চলে সংগঠনের দাওয়াতি ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ সামরিক শাখার সদস্য নির্বাচন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করত। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে সংগঠনের সামরিক শাখার বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত রনবীর। ২০২১ সালে পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রশিক্ষণ সেন্টারের সঙ্গে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র চুক্তিপত্র স্বাক্ষরকালীন বৈঠকে রনবীরসহ অন্যান্য শূরা সদস্যরাও উপস্থিত ছিল এবং ওই বৈঠকে গ্রেপ্তার রনবীর পাহাড়ে সামরিক প্রশিক্ষণের রুপরেখা নির্ধারণ করে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে সিলেট থেকে চার তরুণের নিখোঁজের ঘটনায় রনবীর জড়িত ছিল। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শেষে নিখোঁজ ওই চার তরুণকে সামরিক শাখায় নিযুক্ত করে। প্রায় এক বছর আগে রনবীর সংগঠনের সামরিক শাখা প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে। তার সামরিক কার্যক্রমের দুটি শাখা ছিল, যার একটি পাহাড়ে এবং অপরটি সমতলে। সমতলে সামরিক শাখার কার্যক্রম তার নেতৃত্বে পরিচালিত হতো। রনবীরের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে পাহাড়ে সামরিক শাখার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপর একজন সদস্যকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তার নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনা হতো। পাহাড়ে র্যাবের অভিযান শুরু হলে সে সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আত্মগোপন করে এবং কিছুদিন আগে আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে।
আবুল বাশার মৃধা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছ থেকে বোমা তৈরির বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। জামাতুল আনসারের পাহাড়ে প্রশিক্ষণার্থীদের তিনি বিভিন্ন ধরনের বোমা তৈরি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতেন। পাহাড়ে র্যাবের অভিযান শুরু হলে তিনি ৫৫ জনের দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পাহাড় থকে পালিয়ে সিলেটে যান এবং সামরিক শাখার প্রধান রনবীরের সঙ্গে সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেন। পরে কিছুদিন আগে রনবীরের সঙ্গে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় আত্মগোপন করে। তার বিরুদ্ধে ঝালকাঠির নলছিটি থানায় অস্ত্র ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter