নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 169 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
একটি ছবি নিয়ে হাজারো প্রশ্ন। সজীব ওয়াজেদ জয়ই পারেন এ গুজব বন্ধ করতে। কাজটি খুব কঠিন নয়। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাতি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইটি উপদেষ্টা। জয় সাধারন একজন নাগরিক নন। তাকে নিয়ে গুজবের ছড়াছড়ি। বাংলদেশের মানুষ তা পরিষ্কারভাবে জানতে চায়। তাকে নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে সাধারন মানুষের মধ্যে। আর তা সৃষ্টি হয়েছে জয়ের একটি স্ট্যাটাস ও প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকেই। এ সব প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টির সুযোগ নেই।বাংলাদেশ ও প্রবাসে প্রশ্নগুলো বারবার আসছে। মিডিয়া বা সোশাল মিডিয়ার সামনে এসে তা পরিষ্কার করলেই গুজবের পরিসমাপ্তি ঘটে।
১. জয় এখন কোথায়? যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর না দুবাই?
২. তার গ্রীনকার্ড বা পাসপোর্ট বাতিল হয়েছে?
৩. তার সম্পদ সম্পত্তি আমিেরকান সরকার বাতিল করেছে?
৪. তিনি কি মার্কিন গোয়েন্দাদের নজরদারিতে?
৫. ছবিটি কি মায়ের জন্মদিনে তোলা? পিকটো ফ্যাক্ট এর তথ্য গুজবেরই অংশ?
৬. বিলিয়ন ডলার পাচারে জয় জড়িত?
৭. ভারজেনিয়ার গল্ফ ক্লাব কি জয়ের কেনা?
আমেরিকায় উপস্থিতির জানান দেন সজিব ওয়াজেদ জয় নিজইই। মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে গ্রুপ ছবি তুলে সোশাল মিডিয়ায় স্টাটাস দিয়েছেন জয় । তিনি ছবির পাশে লিখেছেন ‘মায়ের বার্থ ডে ডিনারে ভারজেনিয়াস্থ আমার গলফ ক্লাবে পরিবারের সাথে। ২৮ সেপ্টেম্বর তিনি এ স্ট্যাটাস দেন।
বাংলাদেশ ও প্রবাসে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবস্থান নিয়ে। কেউ বলছিলেন, সিঙ্গাপরে বাংলাদেশি এক শিল্পপতির বাসায় অবস্থান করছেন। অনেকে বলছিলেন, জয় দুবাইতে রয়েছেন। তবে সাংবাদিক শাহেদ আলম তার স্ট্যাটাসে দৃঢ়তার সাথে বলেছিলেন, জয় আমেরিকাতেই আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে এলেও জয় মায়ের সাথে দেখা করতে আসেন নি। তার অনুপস্থিতি নানা গুঞ্জনের জন্ম দেয়। জয়ের গ্রীনকার্ড বাতিল হয়েছে। জয় নজরদারিতে আছেন। এমন নানা কথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল। তবে জয়কে নিয়ে মা শেখ হাসিনার সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্য তা আরও উস্কে দেয়। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে ভাষনের পরপরই শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ জাতিসংঘ মিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওযামী লীগের কিছু নেতা ও শীর্ষ আমলাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা স্যাংশন দেবার ঘোষনা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি জয়ের প্রসংগটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি কারও শক্তিতে বিশ্বাস করে ক্ষমতায় আসিনি। ক্ষমতায় এসেছি জনগনের শক্তিতে। জনগনের ভোটে। আর আত্মীয়স্বজনেরা এখানে থাকলে কি করবে? আমার ছেলেতো এখানে আছে। এখানে সে লেখাপড়া করেছে। বিয়ে করেছে। তার মেয়ে আছে। ব্যবসা সম্পত্তি আছে। বাড়িঘর আছে। যদি সব বাতিল করে করবে। তাতে কিছুই আসে যায় না। বাংলাদেশতো আমাদের আছেই। এতে ভয় পাবার নেই। ঘাবড়াবার কিছু নেই।
সোশাল মিডিয়ায় জয়ের পোষ্ট করা এই ছবিটি সম্পর্কে তথ্য পরিবেশন করেছেন প্রবাসী একজন বাংলাদেশি। এই ছবিটির জন্ম তারিখ ২০১৮ সালের ২০ মার্চ। যে কেউ চাইলে নিজেই ফরেনসিক অ্যানালাইসিস করে দেখতে পারেন।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যুক্তরাষ্ট্রেই ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে থাকাবস্থায় ছায়ার মতো মায়ের পাশে ছিলেন। বিদেশি সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের দেয়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সংবর্ধনায় মায়ের সাথে ছিল সরব উপস্থিতি। প্রধানমন্ত্রীর সাথে ওয়াশিংটন ডিসিতে যাবার পর আর পুতুলকে জনসন্মুখে দেখা যায়নি। জয় মায়ের জন্মদিন করলেন! সাথে ছিলেন পুতুলের কন্যা ও কণ্যার জামাতা। প্রচারিত ছবিতে মায়ের পাশে জয় নিজ কন্যার কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এমনি একটি অনুষ্ঠানে পুতুলের অনুপস্থিতি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের পুত্র মাশরুর হোসেনের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক আগেই।। বেচারা রয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বেস্টিত অতিথি শালায়। বিয়াই মোশাররফ হোসেন ভয়ে ও শরমে দেশে যেতে পারছেন না।
জয়ের বন্ধু ও হিরো আলমকে পরাজিত করে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আরাফাত রহমান দাবি করেছেন জয় আমেরিকাতেই রয়েছেন। সাংবাদিক শাহেদ আলমের ধারনাও একই। আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রতিবেদককে বলেন, জয় যুক্তরাষ্ট্রেই আছেন। ছবিটি যদি ২০১৮ সালের হলেতো পতুলের কন্যার জমাতা (ভারতীয় বংশোদভূত) সেখানে থাকার কথা নয়। কারন তাদেv বিয়ে হয়েছে সম্প্রতি। ১ বছরের কাছাকাছি। আর জয়ের কন্যা ২০১৮ সালে অনেক ছোট ছিল।
সরকার সর্মথিত নিউয়র্কের এক সাংবাদিক লিখলেন, জয়ের জন্মদিন পারিবারিক পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। অনেকের দাবি জয়ের বাসাতেই জন্ম উৎসব!। তা’হলে গলফ কোর্টের অতিথি শালায় ফটোসেশন কেন? কোথায় জয়ের স্ত্রী?
জয় নিজে ছবির গল্ফ ক্লাবকে নিজের বলে দাবি করেছেন। কিন্তু ওয়াশিংটন দূতাবাসে কর্মরত অফিসার আরিফা রহমান রুমা ললেছেন ভিন্ন কথা। তার ভাষায়,
Arifa Rahman Ruma প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে নাতনী এবং নাতজামাই (ভারতীয় বংশোদভূত)
প্রধানমন্ত্রী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারজেনিয়ার রিজ কার্লটন হোটেলে থাকলেন। একই হোটেলে প্রায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ৩৫ জন নেতাকর্মি অবস্থান করছিলেন। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংবর্ধনায় যোগ দেন। কয়েক দফায় হোটেলেই প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের কেক কাটেন। কোনটাতেই শেখ হাসিনা যোগ দেননি। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বিজ্ঞানী পুত্র জয়কে হোটেলে একদিনের জন্যও দেখতে পাননি তারা। এমন কি ওয়াশিংটন ডুলস এয়ারপোর্ট থেকে প্রধানমন্ত্রীর লন্ডনের উদ্দ্যেশে যাত্রাকালেও জয় ছিলেন অনুপস্থিত। এমনই অনেক ঘটনা জয়ের অবস্থান নিয়ে বিতর্ক ছড়াচ্ছে।
গত শনিবার লন্ডন প্রবাসী এক সাংবাদিক লিখেছেন, আমেরিকার রাত আড়াইটায় ‘ভাগ্নের’ বাসায় পুলিশ। একই দিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির নেতা তার ফেস বুক স্ট্যাটাসে জয়ের একটি গ্রুপ ছবি দিয়ে লিখেছেন, সাজীব ওয়াজেদ জয় নিউইয়র্ক ইউনিভিারসিটিতে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিলেন।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামি লীগের নেতা দুরুদ মিয়া তার ফেসবুকে লিখেছেন,
নোট: প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার অবস্থান নিয়ে এই ধুম্রজালের অবসান হওয়া উচিত।বাংলাদেশের আগামীর ভবিষ্যত জয়কে কোন টেলিভিশন বা সোশাল মিডিয়ার লাইভে এসে তার অবস্থান পরিষ্কারকরা দরকার। বাংলাদেশ তথা প্রধানমন্ত্রীর একজন শক্তিশালী উপদেষ্টা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষের অনেক আগ্রহ রয়েছে।
Posted ৫:৫৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam