অপরাধ ডেস্ক | বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 80 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
সাধারণ যাত্রীর মতো বাসে উঠে ফাঁকা আসনে বসে পড়েন এক যুবক। নজর রাখেন সহযাত্রীদের ওপর। পরে কোনো একজনকে টার্গেট করে তাঁর কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ায়। সুযোগ পেলে পাশের আসনে বসে পড়েন। এরপর সুবিধাজনক কোনো এক স্থানে বাস থেকে নেমে যায়। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনা এটুকুই। তবে কিছুক্ষণ পর পাশের যাত্রী লক্ষ্য করেন, তাঁর পকেটে থাকা দামি মোবাইল ফোন উধাও। অনেক খুঁজেও আর সেটি মেলে না। তখন সন্দেহ গিয়ে পড়ে যাত্রী সেজে থাকা সেই যুবকের ওপর। কিন্তু ততক্ষণে সে চলে গেছে অন্য কোথাও।
এমন কৌশলে চার বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ফোন চুরি করে আসছে একটি চক্র। তাদের দলনেতার নাম রিজওয়ানুর আহম্মেদ শরীফ। এতদিন সুকৌশলে নিজেকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রাখলেও সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে তার চুরির বৃত্তান্ত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, এই চক্রে চার-পাঁচজন সদস্য রয়েছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ফোন চুরি-ছিনতাই করেন। শরীফের দেওয়া তথ্যমতে, সে ২০১৮ সাল থেকে ফোন চুরি শুরু করেন। শুরুতে ফিচার ফোন বা সাধারণ স্মার্টফোন ছিল টার্গেট। তবে একপর্যায়ে সে শুধু দামি ফোন চুরি শুরু করেন। পরে সেগুলো অনলাইনে বা পুরনো ফোন ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেয়। অনেক সময় গ্রেপ্তার এড়াতে ফোনের যন্ত্রাংশগুলো আলাদা করে বিক্রি করতেন তারা।
তদন্ত সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর বিকেলে মো. তৌকির নামে এক ব্যক্তির মোবাইল ফোন চুরির তদন্তে নেমে শরীফের সন্ধান পায় পুলিশ। ঘটনার দিন তিনি যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে একটি বাসে ওঠেন। বাসটি সায়েদাবাদ জনপথ মোড় এলাকায় যানজটের কারণে আটকে থাকে। এ সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। দীর্ঘ সময় পর বাসটি চলতে শুরু করলে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তখন পকেটে হাত দিয়ে দেখেন, তাঁর আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স ফোনটি নেই। সেইসঙ্গে পাশে বসে থাকা যুবকও উধাও। এ ঘটনায় তিনি যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। তদন্তে নেমে গত ১১ জানুয়ারি রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে শরীফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে উত্তর সায়েদাবাদ এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শরীফের দেওয়া তথ্যে বাদীর চুরি হওয়া আইফোনটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়। সেইসঙ্গে পাওয়া যায় চুরি হওয়া আরও নয়টি আইফোন। গত তিন মাসে এই ফোনগুলো চুরি করা হয়েছে। সেগুলোর মালিকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এরইমধ্যে পাঁচটি ফোন আদালতের মাধ্যমে মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
Posted ১২:৫০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter