অর্থনীতি ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 18 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
প্রায় স্বাভাবিক চেহারায় ফিরেছে শিল্পাঞ্চলে তৈরি পোশাক কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম। গতকাল বুধবার ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে কারখানায় হাজির হন শ্রমিকরা। দিনভর চলে স্বাভাবিক উৎপাদন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা দেখা যায়নি। তবে এ দিনও ১৪টি কারখানা বন্ধ ছিল। শ্রমিকদের আগে নোটিশ না করা এবং সমন্বয়ের অভাবে এ কারখানাগুলো বন্ধ রয়েছে। আজকের মধ্যে এ কারখানাগুলোও খুলে দেওয়া হতে পারে।
গত মঙ্গলবার ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে চুক্তি এবং যৌথ ঘোষণার পর পোশাক খাতের পরিস্থিতি শান্ত হয়। ওই ঘোষণায় শ্রমিকদের ১৮টির সব দাবি মেনে নিতে রাজি হয় তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। মাঠ পর্যায় থেকে নেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে সরকারের চার উপদেষ্টা, মালিক পক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এই যৌথ ঘোষণা আসে। মালিক কিংবা শ্রমিক; যে কোনো পক্ষ যৌথ ঘোষণা মেনে নেওয়া বা বাস্তবায়নে আপত্তি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। বুধবার আশুলিয়ায় ১২টি কারখানা বন্ধ ছিল। এগুলো আজ খুলে দেওয়া হবে। আগামী শনিবার থেকে পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল আবার কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। টানা তিন সপ্তাহ শ্রম অসন্তোষ এবং কর্মবিরতির পর গতকাল কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা। প্রায় সব কারখানায় দিনভর স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম চলেছে। তবে গতকালও ১৪টি পোশাক কারখানা বন্ধ ও একটি পোশাক কারখানায় কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা। বুধবার সকালে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, জামগড়া, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর, জিরাবো, ঘোষবাগ এলাকা ঘুরে পোশাক কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিতে দেখা যায় পোশাক শ্রমিকদের।
শিল্প পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার শ্রম উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেয় বিজিএমইএ। এ খবর শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সকাল থেকেই পোশাক শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে হা-মীম, শারমিন, নাসাসহ অনেক বন্ধ কারখানা উৎপাদন শুরু করেছে। তবে কয়েকটি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য এখনও বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও নিটওয়্যার নামে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও পরে দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, কয়েকটি পোশাক কারখানা নোটিশ না দিয়ে বন্ধ এবং শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কারণেই বুধবারও কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে পারেনি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। গাজীপুরে সড়ক অবরোধ
এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরে ফুল ইভার বিডি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তারা মহানগরের ছয়দানা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সড়কে চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও স্থানীয়দের ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন পরিশোধ না করে ১২ সেপ্টেম্বর কারখানা বন্ধের নোটিশ টানিয়ে দেয়।
বন্ধের নোটিশে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেনেত ওং উল্লেখ করেন, গত কিছুদিন ধরে শ্রম আইনবহির্ভূত কিছু দাবিতে ৩ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বেআইনিভাবে কাজ থেকে বিরত থাকেন শ্রমিকরা। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা কাজে যোগদান করতে অস্বীকৃতি জানান। এ পরিস্থিতিতে কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রাখা সম্ভব না হওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (টঙ্গী জোন) মোশাররফ হোসেন বলেন, বুধবার বেলা ১১টা থেকে সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ করে। তাদের বুঝিয়ে দুপুর ১টার দিকে সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
Posted ৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter