
খেলা ডেস্ক | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ | প্রিন্ট | 17 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
চেলসি ৩ : ০ পিএসজি। রোববার মধ্যরাতে যারা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখতে পারেননি, সকালে তাদের অনেকেই এই স্কোর দেখে চোখ কচলে ভ্রম ভেঙেছেন। ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন প্যারিসের দলটিকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির মাঠে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছে পশ্চিম লন্ডনের ক্লাবটি। তাবড় তাবড় ফুটবলবোদ্ধার ভবিতব্য মাটি করে দিয়ে ইংলিশ ফরোয়ার্ড কোল পালমার করেছেন জোড়া গোল, তাও আবার ম্যাচ শুরুর আধাঘণ্টার মধ্যেই।
মেটলাইফ স্টেডিয়ামে দুপুর ৩টায় ২৯ ডিগ্রি গরমের মধ্যে ফাইনালের ভিভিআইপি দর্শক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যেখানে হাঁসফাঁস করে টাই ঠিক করছিলেন, সেখানে মাথা ঠান্ডা করে পালমার শুধু জোড়া গোলই করেননি, একটি গোল করিয়েওছেন জোয়াও পেদ্রিকে দিয়ে। বিশ্বজয়ের মঞ্চে নীলভ-করে বছর তেইশের পালমার যেন চেলসির আর্শীবাদপুষ্ট ‘বরপুত্র’ হয়েই ধরা দিয়েছিলেন।
মাস দুয়েক আগে উয়েফার কনফারেন্স লিগের ফাইনালে এভাবে রিয়াল বেটিসের বিপক্ষে জ্বলে উঠেছিলেন পালমার। ‘ফাইনাল খেলতে আমার সবসময়ই ভালো লাগে। তার ওপর যখন এই ফাইনালের আগে সবাই আমাদের খেলা নিয়ে দ্বিধায় ছিল। আমরা জানতাম সবাই ধরেই নিয়েছে আমরা পারব না, তবে লড়াই করে আমরাই জিতেছি।’
চেলসিকে ক্লাব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করে ফুটবল বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন তিনি। আর তাদের চমকে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প! পুরস্কার মঞ্চে ট্রফি দেওয়ার পর পাশে থাকা চেলসি গোলরক্ষক সানচেজ ট্রাম্পকে বলেন, ‘এবার আমরা সেলিব্রেশন করব।’ ট্রাম্পের পাল্টা উত্তর, ‘আমিও তোমাদের সঙ্গে সেলিব্রেশন করব।’
ইংল্যান্ডের এই ক্লাবের শোকেসে ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফি নতুন নয়, এর আগে ২০২১ সালে তারা শিরোপা জিতেছিল। কিন্তু এবারের ৩২ দলের মধ্য থেকে বিশ্বকাপ জেতাটা তাদের জন্য বাড়তি আনন্দের। তার ওপর সবাই যখন ধরেই নিয়েছিল ডেম্বেলে, দুয়ে, হাকিমি, দেন্নারোমাদের পিএসজিই জিতবে এই শিরোপা। ম্যাচ শুরুর প্রথম ৯ মিনিটে সংগঠিত রক্ষণ আর ধারালো কাউন্টার প্রেসে এলোমেলা করে দেয় পিএসজিকে। কোনোভাবেই বল প্রতিপক্ষের পায়ে যেতে দেননি তারা। ঠিক যেভাবে সেমিফাইনালে রিয়ালকে বধ করেছিল পিএসজি, একইভাবে ফাইনালে পিএসজির জালেও কিছু বুঝে ওঠার আগেই জোড়া গোল। ম্যাচে ৬৬ শতাংশ বলের দখল কিংবা গোলমুখে ছয়টি শট নিয়েও পরে আর ফিরে আসতে পারেনি পিএসজি। চেলসির স্প্যানিশ গোলরক্ষক রবার্তো সানচেজ এদিন দুর্দান্ত কিছু সেভ করে চেলসির ভেতরে থাকা আগুন বাইরে নিয়ে আসেন।
যারা ধরেই নিয়েছিলেন চেলসি আর কিই বা করবে, ফাইনাল জিতবে পিএসজিই। তাদের পক্ষে ম্যাচের শেষে মেজাজ ধরে রাখা কঠিন ছিল। সেই দলেই নিজের নাম লিখিয়ে বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েন পিএসজির স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকে। চেলসির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড পেদ্রোর মুখে আলতো ঘুসি মেরে ম্যাচ শেষে অনুতপ্ত হতে দেখা যায়নি তাঁকে। ‘খেলোয়াড়দের আলাদা করতে গিয়েছিলাম, ছেলেটা (পেদ্রো) একটু বাড়াবাড়ি করেছিল, ধাক্কা লেগে গেছে।’
ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল হারার পরও তিনি মেনে নেননি পরাজিত হয়েছে পিএসজি। ‘আমরা হেরে যাইনি, আমরা রানার্সআপ হয়েছি। হেরে যায় তারাই, যারা কিনা হাল ছেড়ে দেয়।’
বিশ্বজয় করে এবার কি চেলসি পারবে প্রিমিয়ার লিগের খরা কাটাতে? আট বছর ধরে লিগ শিরোপা স্পর্শ করেনি তারা। এবার কি পারবে কুকুরেয়া, গুস্তোর মতো ডিফেন্ডার দিয়ে প্রতিপক্ষের সমীহ আদায় করতে। বছর দুই আগে ম্যানসিটিতে পেপ গার্দিওয়ালার অযত্নে থাকা যে ছেলেটি চলে এসেছিল স্টাম্পফোর্ড ব্রিজে, সেই এখন আশীর্বাদ হয়ে ধরা দিচ্ছে মারেস্কার কাছে। ম্যানসিটিতে তিন বছরে যে পালমার সুযোগ পেয়েছিল মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলার, সেই কিনা চেলসিতে দুই মৌসুমে ৭০ ম্যাচ খেলে ৩৭ গোল করে ফেলেছে।
Posted ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
nykagoj.com | Stuff Reporter