রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাড়ে ৫৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড রপ্তানি আয়

অর্থনীতি ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ০৪ জুলাই ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   157 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সাড়ে ৫৫ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড রপ্তানি আয়

সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলার। দেশের ইতিহাসে এ পরিমাণ রপ্তানি এর আগে কোনো বছর হয়নি। এর আগে সর্বোচ্চ রপ্তানির রেকর্ড ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫২ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছর শুধু তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকেই এসেছে প্রায় ৪৭ বিলিয়ন ডলার। তবে গত অর্থবছরে সার্বিক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

ডলার সংকট, নিয়ন্ত্রিত আমদানি নীতি ও কলকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানির অভাবে গত অর্থবছরের কয়েক মাস ধরে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ হচ্ছিল না। মার্চ ও এপ্রিলে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমে যায় রপ্তানি। তবে মে মাস থেকে ফের প্রবৃদ্ধির মুখ দেখা যায়। জুনে তা অব্যাহত থাকায় পুরো অর্থবছরে রপ্তানিতে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

তবে গত অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ কম হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ বিলিয়ন ডলারের। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের রপ্তানি আয় ছিল ৫২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সেবার রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার চেয়েও খারাপ দিক হচ্ছে রপ্তানি শুধু তৈরি পোশাকনির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এক পণ্যকেন্দ্রিক রপ্তানি যে কোনো পরিস্থিতিতে ঝুঁকি সহ্য করতে পারে না। তাই টেকসই উন্নয়নের জন্য রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া রপ্তানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আনুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থানের সামঞ্জস্যতা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সমাজে বৈষম্য বেড়েই চলেছে।

তিনি আরও বলেন, ইপিবি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে রপ্তানির পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। কিন্তু এ পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সেটেলমেন্ট ডাটার তথ্য মিলছে না। তাই এ দুই তথ্যের মধ্যে কোথায় সমস্যা রয়েছে, সেটি খুঁজে বের করতে হবে। এ ছাড়া বৈশ্বিকভাবে যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে যে ধরনের পরিকল্পনা প্রয়োজন, তা দেখা যাচ্ছে না।

২০২২-২৩ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেশি হয়েছে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সামান্য বেশিও হয়েছে। ওভেনের তুলনায় নিট ক্যাটাগরির পোশাকের রপ্তানি কিছুটা বেশি। এ দুই পোশাক রপ্তানি থেকেই এসেছে প্রায় ৪৭ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।

দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ইউরোপে মূল্যস্ফীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে নীতি সুদহার বাড়ানোর কারণে সেখানে স্থানীয়ভাবে চাহিদা সীমিত হয়ে এসেছে। তবে খারাপ খবরের মধ্যেও কিছুটা আশার কথা হচ্ছে, বড় এই দুই বাজারে অন্য দেশের রপ্তানি যে হারে কমেছে, বাংলাদেশের রপ্তানি সে হারে কমেনি।

উচ্চমূল্যের পোশাক রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। আবার প্রায় সব পণ্যের দর কিছুটা বেশি পাওয়া যাচ্ছে, সে সুবাদে পরিমাণে কম রপ্তানির মধ্যেও টিকে আছেন তাঁরা। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব বিরাজ করছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।

গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি ১৯ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে। কৃষি পণ্যের রপ্তানি কমেছে ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। হিমায়িত ও জীবন্ত মাছে কমেছে ২০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

Facebook Comments Box

Posted ৫:৩৪ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৪ জুলাই ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com