মঙ্গলবার ২৮শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

পোশাকের ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন

অর্থনীতি ডেস্ক   |   বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   26 বার পঠিত

পোশাকের ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন

কারখানা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে কাভার্ডভ্যান থেকে তৈরি পোশাক চুরির ঘটনা বাড়ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কাভার্ডভ্যান ইটের ভাটা কিংবা গাড়ির গ্যারেজে নিয়ে পোশাক সরিয়ে রাখছে একটি চক্র। কার্টন থেকে পোশাক সরিয়ে সমান ওজনের মাটি কিংবা ঝুট দিয়ে ওজন ঠিক রাখা হচ্ছে। এভাবেই বন্দরের ডিপোতে পাঠানো হয়। সাগর পাড়ি দিয়ে দেড় থেকে দুই মাস পর ক্রেতার হাতে এ রকম কার্টন পৌঁছলে সরবরাহকারী উদ্যোক্তার জন্য তা মহাবিব্রতকর।

গত মাসে ব্রাজিলের একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের পোশাক সরবরাহকারী কারখানাকে ভিডিওর মাধ্যমে জানায়, ক্রেতার কাছে পৌঁছানো সব কার্টনে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পোশাক নেই। কিছু কার্টন একদম খালি পাওয়া গেছে। ওই চালানে ২৬ হাজার পিস পোশাক যাওয়ার কথা ছিল। এ ধরনের ঘটনায় একদিকে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, অন্যদিকে পোশাক শিল্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা হারাতে হচ্ছে। অপকর্ম বন্ধ না হলে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। এতে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে আঘাত আসবে।

এ ধরনের নৈরাজ্যকর ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে আইন সংশোধনের দাবি করা হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগামী মাসের মধ্যে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ করাসহ মোট পাঁচ দাবি জানায় বিজিএমইএ। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। সংগঠনের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে স্টকলট হিসেবে চুরির পণ্য রপ্তানি বন্ধে স্টকলটের উৎস নিশ্চিত করতে হবে। মহাসড়কে চুরি বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দাদের দায়িত্ব দেওয়া। কাভার্ডভ্যানের মালিক, চালক ও শ্রমিকদের ডাটাবেজ তৈরি করে যাচাইয়ের সুযোগ রাখা ইত্যাদি।

রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনে সভাপতি ফারুক হাসান। চুরির বিভিন্ন ঘটনা এবং কীভাবে এসব ঘটনা ঘটছে, তা বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। গত দেড় যুগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই হাজারের বেশি কাভার্ডভ্যান থেকে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে বড় অঙ্কের অর্থের পোশাক চুরি হয়েছে। শুধু ২০২২ সালেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ২২টি।

চুরি কীভাবে হয়, তার বর্ণনা দিয়ে ফারুক হাসান বলেন, মহাসড়কে পোশাকবাহী কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভারের সঙ্গে যোগসাজশ করে পরিকল্পিতভাবে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ইটের ভাটা, গাড়ির গ্যারেজ কিংবা বিভিন্ন গুদামে কাভার্ডভ্যান নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাভার্ডভ্যানের পেছনের লক ঠিক রেখে কব্জা খুলে কার্টন থেকে ইচ্ছামতো পণ্য সরানো হয়। সেখানেই আবার মাটি বা অন্যান্য পণ্য দিয়ে কার্টন ভরে ওজন ঠিক রেখে চট্টগ্রাম বন্দরের ডিপোতে পাঠানো হয়। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব চুরির পণ্য স্টকলট হিসেবে বিদেশে রপ্তানি করেন। কিছু স্থানীয় বাজারে ছাড়া হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কারণ, রপ্তানিমুখী পোশাক চুরির ঘটনা দেশের অন্যান্য চুরির ঘটনার চেয়ে অনেক বেশি নেতিবাচক। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন, যা অর্থনীতিতে অনেক বড় অভিঘাত ডেকে আনবে।

পোশাক খাতের অন্যান্য বিষয়েও কথা বলেন বিজিএমইএ সভাপতি। বিভিন্ন খাতে উৎপাদন ব্যয়ের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এর মধ্যে দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধারাবাহিকভাবে কমবে। কারণ, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যয় বৃদ্ধির ভার বহনের সক্ষমতা নেই পোশাক শিল্পের। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়াতে হলে তা যেন সহনীয় হারে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়ানো হয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

লোন মওকুফ শুরু
(87 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com