রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সুদহার কমাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

অর্থনীতি ডেস্ক   |   বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   131 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সুদহার কমাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বেসরকারি খাতের উৎপাদনমুখী শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য বিশ্বব্যাংকের দেওয়া একটি তহবিল থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণে সুদ নির্ধারণের ক্ষেত্রে লাইবরের শর্ত তুলে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো এখন থেকে এ তহবিল থেকে ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৭ শতাংশ। এত দিন সর্বোচ্চ ১১ শতাংশ পর্যন্ত সুদে ঋণ নিতে হয়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সুবিধা (এলটিএফএফ) কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৫ সালে। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক খাত সহায়তা প্রকল্পের (এফএসএসপি) আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকে ২৯ কোটি ২৫ লাখ ডলারের একটি ঘূর্ণায়মান তহবিল রয়েছে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে গঠিত তহবিলে বিশ্বব্যাংক জোগান দেয় ২৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাকি ৩ কোটি ৮৫ লাখ ডলার দেওয়া হয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে। এফএসএসপি তহবিলের কার্যক্রম শুরুর সময় জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, সুদহার বাজারভিত্তিক করতে প্রয়োজনে প্রতি ৬ মাস অন্তর পরিবর্তন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা দেওয়া আছে ৯ শতাংশ। অথচ এক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার ছিল ১১ শতাংশের ওপরে। লাইবর অনেক বেড়ে যাওয়ায় এখানে সুদহার বেড়ে গেছে। যে কারণে লাইবরের শর্ত তুলে দিয়ে সব ক্ষেত্রে সুদহারের নির্দিষ্ট সীমা আরোপ করা হয়েছে। এতে ব্যাংক ও উদ্যোক্তার তহবিল খরচ কমবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে এ তহবিলের আওতায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নিয়ে শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি ও অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করা যায়। সচল শিল্পকারখানা সংস্কার ও নতুন ইউনিট স্থাপনে ব্যবহার করা যায়। তবে এ তহবিলের অর্থে কোনো উদ্যোক্তা জমি কিনতে পারেন না। শিল্পের কাঁচামাল আমদানি, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের মতো চলতি ব্যয় মেটানো যায় না। এ প্রকল্প থেকে ৫, ৭ ও ১০ বছর মেয়াদি অর্থ নিয়ে ব্যাংকগুলো গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করতে পারে।

গতকালের নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংকগুলোর ক্যামেলস রেটিংয়ের ক্রমানুসার ও মেয়াদের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে তহবিল দেবে। নিয়ম অনুযায়ী এর সঙ্গে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যোগ করে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ করা যাবে। এতে করে গ্রাহক পর্যায়ে ১০ বছর মেয়াদি একটি ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৭ শতাংশ। এত দিন ব্যাংকগুলোকে তহবিল দেওয়া হতো ৬ মাসের লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেট (লাইবর) এর সঙ্গে সর্বনিম্ন ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সুদ যোগ হবে। বর্তমানে লাইবর রয়েছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। এতে করে ব্যাংকের তহবিল নিতে ৮ শতাংশের বেশি ব্যয় হচ্ছিল। এর সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ যোগ হয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সুদ ১১ শতাংশে পৌঁছায়।

গতকালের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোর ক্যামেলস রেটিংয়ের মান এবং মেয়াদের ভিত্তিতে ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে অর্থ পাবে ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে ক্যামেলস রেটিং-১ মানের ব্যাংক ৫ বছর মেয়াদি তহবিল পাবে ৩ শতাংশ সুদে। ৭ বছর মেয়াদি ৩ দশমিক ২৫ এবং ১০ বছর মেয়াদি তহবিল পাবে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ সুদে। রেটিং মান-২ পাওয়া ব্যাংক ৫ বছর মেয়াদি ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ, ৭ বছর মেয়াদি ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ১০ বছর মেয়াদি তহবিল পাবে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে। আর ক্যামেলসে তিন রেটিং পাওয়া ব্যাংকগুলো ৫ বছর মেয়াদি ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, ৭ বছর মেয়াদি ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ১০ বছর মেয়াদি তহবিল পাবে ৪ শতাংশ সুদে।

বি

Facebook Comments Box

Posted ১২:৫৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com