
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | প্রিন্ট | 136 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড.আহসান মনসুর বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় আর কোন নতুন ব্যাংক হবে না। অতীতে তা করতে গিয়ে ব্যাংক খাতকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভাই, বোন, স্ত্রী ও নেতাদের ব্যাংকের চেয়ারম্যান হবার সংস্কৃতি আর চালু হতে দেয়া যাবে না। নিউইয়র্কের সময় বিকেল ৫টায় শনিবার বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করনে কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা।
মতবিনিময় সভায় প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স বিজনেসম্যান ও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্যরা হলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, আব্দুস সবুর, আহমেদ সোহেল,গিয়াস উদ্দীন, বাগ প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের আব্দুল মালেক। এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, আইএমএফ এর ঋণ ছাড়াও দেশ চলতে পারবে। আইএমএফ এর সঙ্গে আমাদের মতানৈক্য খুব কম বিষয়ে আছে। আইএমএফকে আমি আগে বলেছি ওয়াশিংটনে গিয়েও বলবো, আইএমএর টাকার আমাদের খুব একটা দরকার নেই। আমাদের এখন প্রায় ২৬ বিলিয়ন ডলারের মতো রিজার্ভ আছে। এর সঙ্গে হয়তো আর এক বিলিয়ন যোগ হবে। কিন্তু তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা অন্য জায়গায়। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিভিন্ন বিষয়ে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছে, পরামর্শ দিচ্ছে, তাদের জ্ঞান শেয়ার করছে। ব্যাংকগুলো মার্জারের বিষয় তাদের পরামর্শ নিচ্ছি। কারণ এইভাবে একসঙ্গে ৭—৮ টা ব্যাংক মার্জ করার নজির পৃথিবীতে খুব একটা নেই। এক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ লাগবেই।আমাদের বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ রয়েছে। আইএমএফ আমাদের উন্নয়ন সহযোগী পার্টনার। দেশের প্রযুক্তি ও উন্নয়নে তারা জড়িত। ধারাবাহিকতা ও অংশদারিত্বের প্রয়োজনে তাদের অর্থ আমরা নিতে চাই।
রুগ্ন কয়েকটি ব্যাংক প্রসঙ্গে ড.আহসান মনসুর বলেন, সেগুলোকে একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে আমরা মার্জ করে দেব। তারপর সেগুলোর মালিকানা আমরা প্রবাসী সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যক্তি মালিকানার কাছে দেয়া হবে। তবে মালিকানা হস্তান্তর করার আগে ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করা হবে। কারণ সেগুলো বন্ধ করার দেয়ার চেয়ে মার্জ করে চালু রাখলে সরকারের লোকসান কম হবে।
ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাক এটা আমরা চাই না। তা চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। রুগ্ন ব্যাংক বন্ধ হবে না। ব্যাংক পরিচালনায় পতিত সরকারের সময়ের মতো রাজনৈতিক চাপের মধ্যে আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনভাবেই না। ব্যাংকগুলো এখন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এই সেক্টরে হরিলুটের খেলা বন্ধ হয়েছে। ব্যাংক যাতে কোন পরিবারের দখলে থাকতে না পারে সে বিষয়ে আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। কোন রাজনীতিবিদ বা তাদের সন্তানরা শুধুমাত্র ও রাজনৈতিক পরিচয়ে ব্যাংকের মালিক হবেন তা আমি গভর্ণর থাকা অবস্থায় তা হতে দেবো না।
বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা প্রসংগে গভর্নর বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। বৃটেনে তারা কাজ করছে। টাকা পাচারের সঙ্গে জড়িত কয়েকশ ব্যক্তিকে আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিষয়ে আমরা ল ফার্মকে হায়ার করছি। ফার্মগুলোকে আমরা তথ্য দিব। তারা যদি অর্থ আদায় করতে পারে তার নির্দিষ্ট একটা অংশ তাদের দেয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে টাকা পাচারকারিদের সন্ধান দেবার জন্য প্রবাসীদের প্রতি তিনি আহবান জানান। তিনি বলেন, দূতাবাস ও কনস্যুলেটে তথ্য দিন। আমরা অ্যাকশন নেব।
গভর্নর ২০ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে রওনা হয়েছেন। সেখানে আইএমএফ’র বসন্তকালীন অধিবেশনে যোগ দিবেন তিনি।
Posted ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
nykagoj.com | Monwarul Islam