ডেস্ক রিপোর্ট | রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 91 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
পোশাকপণ্যের রপ্তানি আদেশ আবার কিছুটা বেড়েছে। নতুন ক্রেতা ও নতুন বাজার থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের এই সাড়া হয়তো স্থায়ী হবে না। এ ছাড়া স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রপ্তানি আদেশ এখনও কম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানি আদেশ যতটুকু কমেছিল, সে তুলনায় গত কয়েক দিনের রপ্তানি আদেশকে ভালো বলা যায়।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। তবে কোন বাজার থেকে কতটুকু রপ্তানি আদেশ বাড়ল কিংবা কী কারণে হঠাৎ রপ্তানি আদেশ বাড়ছে, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য দেননি তিনি। অবশ্য অভ্যন্তরীণভাবে জ্বালানি সংকট ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমে আসার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পণ্যে বৈচিত্র্য আনা এবং মূল্যসংযোজিত পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টার কথা জানান বিজিএমইএ সভাপতি।
নতুন বাজার ও ক্রেতা প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, সম্প্রতি মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের কর্মসূচিতে ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের ১৪৩ জন প্রতিনিধি ঢাকা সফরে আসেন। শুধু ইরাক থেকেই আসেন ৪৩ জন প্রতিনিধি। এসব প্রতিনিধি বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শন করেছেন। উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি রপ্তানি আদেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের।
মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের অর্জন এবং পর্যালোচনা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, খন্দকার রফিকুল ইসলাম ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জ্বালানি সংকট প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে শিল্প মালিকরা প্রচণ্ড কষ্টে আছেন। এ সংকট কাটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাঁরা। অবশ্য গত কয়েক দিনে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে গ্যাস সংকটের কোনো সমাধান হয়নি।
‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ আয়োজন সফল উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পৃথিবীর বিখ্যাত ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এ আয়োজনের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা রপ্তানি আদেশ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পোশাকপণ্যের ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে বিপণন প্রতিষ্ঠান ভারতভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি পিডিএস রপ্তানি আদেশ দ্বিগুণ করার ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন বছরে ১০০ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক নিয়ে থাকে।
ফারুক হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের উদ্বোধন করেন। এতে ক্রেতারা পোশাক খাতের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পেয়েছেন। টেকসই পোশাক খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়া গেছে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়নে এসব পরামর্শ কাজে লাগানো হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের খবর।
বাংলাদেশ ও পোশাক খাতের ব্র্যান্ডিং, সরবরাহ চেইনে সম্পর্কিত সবাইকে নেটওয়ার্কিংয়ের আওতায় আনা এবং সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের আয়োজন করে বিজিএমইএ। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) আয়োজনের যৌথ অংশীদার ছিল। রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির (বিআইসিসি) বিভিন্ন হলে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি গত শুক্রবার শেষ হয়েছে। দেশের পোশাক খাতে এত বড় আয়োজন এই প্রথম।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসে পাঁচ পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৭৫ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর বাংলাদেশে নিরাপদ কর্মপরিবেশ না থাকার অভিযোগে প্রধান রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা জিএসপি স্থগিত করে। সেই স্থগিতাদেশ এখনও প্রত্যাহার হয়নি। পোশাক খাতের কারণে বাংলাদেশের এ ব্র্যান্ডিং দুর্বলতা রেখে আয়োজন কতটা সফল হলো- এ প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, জিএসপি প্রত্যাহার করার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা আছে। সুবিধা স্থগিত করার সময় যে ১৬ শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পূরণ করেছে বাংলাদেশ। তবে জিএসপি স্থগিতের কারণে রপ্তানিতে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি। বরং রপ্তানি আরও বেড়েছে। জিএসপি সুবিধাপ্রাপ্ত পণ্যের ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হয়েছে অভিযোগ করে ফারুক হাসান বলেন, ‘উড়োজাহাজ বানিয়ে রপ্তানি করলে জিএসপি সুবিধা পাওয়া যাবে, তবে পোশাক খাতে কোনো দিন এ সুবিধা দেওয়া হবে না।’
Posted ১২:০৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২২
nykagoj.com | Stuff Reporter