শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লেনদেন চার হাজার কোটি টাকা তবুও ফ্লোর প্রাইসে ৬০% শেয়ার

অর্থনীতি ডেস্ক   |   রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   94 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

লেনদেন চার হাজার কোটি টাকা তবুও ফ্লোর প্রাইসে ৬০% শেয়ার

সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে কিছু শেয়ারের দর বেড়েছে। এমনকি লেনদেনও বেড়েছে। তারপরও তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদরে পরিবর্তন নেই। এখনও ৬০ শতাংশ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এসব শেয়ারের কোনো ক্রেতা নেই। স্টক এক্সচেঞ্জে গত সপ্তাহ শেষে ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ার ছিল ২৩০টি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৩২টি। এ বাজারে মোট তালিকাভুক্ত শেয়ার ও মিউচুয়াল আছে ৩৯২টি।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজার মূলধনে ফ্লোর প্রাইসে থাকা কোম্পানিগুলোর অংশ ৬৯ শতাংশ। ফ্লোর প্রাইস থেকে মাত্র ২০ পয়সা ওপরে কেনাবেচা হওয়া স্কয়ার ফার্মা ফ্লোর প্রাইসে নামলে এ হার ৭৬ শতাংশে উন্নীত হয়। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা তিন-চতুর্থাংশ শেয়ারের ক্রেতা নেই। এসব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার চাইলেও তাদের শেয়ার বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন না।

অধিকাংশ তালিকাভুক্ত শেয়ারের যখন এ অবস্থা, তখন লেনদেন বা দরবৃদ্ধিতে চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম তিন সপ্তাহের বীমা খাত একক প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। ডিএসইর লেনদেন বৃদ্ধিতে এ খাতের অবদানই সবচেয়ে বেশি।

গত সপ্তাহে ঢাকার শেয়ারবাজারের মোট লেনদেন ৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে প্রায় ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে বীমা খাতের লেনদেন ১ হাজার ২১৩ কোটি থেকে বেড়ে ২ হাজার ২৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ খাতে লেনদেন বৃদ্ধির হার ৫০ শতাংশ।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, বড় খাতের মধ্যে বীমার শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে তুলনামূলক কম আটকে রয়েছে। খাতওয়ারি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ৫৭ বীমা কোম্পানির মধ্যে ৫১টিই এখন ফ্লোর প্রাইসের ওপরে অবস্থান করছে।
ব্যাংক খাতের ৩৫ কোম্পানির মধ্যে ৩০টি ফ্লোর প্রাইসে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের ২৩টির মধ্যে ২২টি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২৩টির মধ্যে ১৬টি, প্রকৌশল খাতের ৪২টির মধ্যে ২৮টি, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩২টির মধ্যে ২১টি, বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৪৮টি এবং টেলিযোগাযোগ খাতের তিন কোম্পানির সব ফ্লোর প্রাইসে।

ছোট খাতগুলোর মধ্যে সিরামিক ছাড়া বাকিগুলোর অবস্থা তুলনামূলক ভালো। পাট এবং কাগজ ও ছাপাখানা খাতের ৯ কোম্পানির সব শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসের ওপরে কেনাবেচা হচ্ছে। তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মধ্যে মাত্র একটি ফ্লোর প্রাইসে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, সিমেন্ট এবং বিবিধ খাতের ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ শেয়ারের দরও ফ্লোর প্রাইসের ওপরে।

গেল সপ্তাহে বীমার বাইরে অন্য খাতেরও শেয়ার লেনদেন বেড়েছে। ব্যাংক খাতের লেনদেন ৯৪ কোটি থেকে ১৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ওষুধ ও রসায়ন খাতের লেনদেন ১৬৩ কোটি থেকে বেড়ে ২০৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের লেনদেন ৪০৬ থেকে বেড়ে ৪২৭ কোটি টাকা হয়েছে। বস্ত্র খাতের সার্বিক লেনদেন বেড়ে হয়েছে ১৪৭ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৩৯ কোটি টাকার বেশি। তথ্য-প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেন সপ্তাহ ব্যবধানে ৮২ কোটি থেকে ১৪৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আল-আমীন বলেন, ঢাকার শেয়ারবাজারের লেনদেন ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকায় আটকে ছিল। এখন প্রতিদিনই ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। মনে হতে পারে শেয়ারবাজার পরিস্থিতি হয়তো ভালো হচ্ছে। আদতে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর মুখ বেজার। কারণ প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। যেখানে অল্প কিছু শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ছে।
শেয়ারবাজারের এ বিশ্লেষক বলেন, ব্যাংকের শেয়ারগুলোর দাম ইতিহাসের সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এখন আমানত রেখে বছর শেষে যে সুদ পাওয়া যায়, ব্যাংকের শেয়ার কিনে রাখলে তার থেকে দ্বিগুণ বা তারও বেশি লভ্যাংশ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এসব শেয়ারের ক্রেতা নেই। সার্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, মুষ্টিমেয় বড় বিনিয়োগকারীর হাতে শেয়ারবাজার বন্দি। তারা যেভাবে চাচ্ছে বাজার তেমনই চলছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীর কিছু অংশ প্রলোভনে পড়ে ওইসব শেয়ার কিনছেন। একসময় এ বিনিয়োগও আটকে যাওয়ার ভয় আছে।

Facebook Comments Box

Posted ১২:১০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com