রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিয়েল এস্টেট খাতের বিপর্যয়ে বিপদে চীনা অর্থনীতি?

অর্থনীতি ডেস্ক   |   শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   146 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

রিয়েল এস্টেট খাতের বিপর্যয়ে বিপদে চীনা অর্থনীতি?

প্রবৃদ্ধির ধীরগতি, তরুণদের মধ্যে রেকর্ড বেকারত্বের হার, বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা, দুর্বল রপ্তানি আয়, স্থানীয় মুদ্রার দর পতন এবং আবাসন শিল্পে সংকট। চীনের অর্থনীতি নিয়ে গত ছয় মাস ধরেই এ ধরনের খবর ছড়াচ্ছে।

চীনের এই অর্থনৈতিক সমস্যার মূলে আছে আবাসন শিল্প। কিছুদিন আগেও চীনের মোট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ ছিল রিয়েল এস্টেট খাতে।

সিঙ্গাপুরের ইনসিড বিজনেস স্কুলের প্রফেসর আন্তনিও ফাতাস বলেন, এর কোনো মানে হয় না, এটা একেবারেই অর্থহীন।

গত দুই দশক ধরে চীনের রিয়েল এস্টেট খাত ফুলে-ফেঁপে উঠছে, বিশেষ করে বেসরকারিকরণের ফলে। কিন্তু ২০২০ সালে এই খাতে সংকট দেখা দিল। কোভিডের মহামারি, তার সঙ্গে চীনের কমতে থাকা জনসংখ্যা- এর কোনোটিই এই খাতের জন্য সুসংবাদ ছিল না।

চীনা সরকার তখন এই সংকট থেকে পুরো অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের আশংকা করছিল, যেমনটি ঘটেছিল ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে। সরকার তখন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপাররা কী পরিমাণ অর্থ ধার করতে পারবে তার একটা সীমা বেঁধে দিল। কিছুদিনের মধ্যেই দেখা গেল রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের ঋণের বোঝা শত শত কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যেটা তারা পরিশোধ করতে পারছে না।

এখন চীনে নতুন বাড়ি-ঘরের চাহিদায় ধস নেমেছে, আর এর ফলে বাড়ি-ঘরের দামও পড়ে গেছে। এর মানে হচ্ছে, চীনে যারা বাড়ির মালিক, তারা আগের চেয়ে গরীব হয়ে পড়েছে। আর এটি ঘটেছে গত তিন বছর ধরে কোভিডের কঠোর বিধিনিষেধে থাকার পর সেখান থেকে যখন তারা বেরিয়ে আসছে।

“চীনে আপনার বাড়িই আসলে আপনার সঞ্চয়”, বলছেন অ্যালিসিয়া গার্সিয়া-হেরেরো, যিনি ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ন্যাটিক্সিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ। “কিছুদিন আগেও চীনে অস্থির শেয়ার বাজারে টাকা খাটানো বা স্বল্প সুদের ব্যাংক একাউন্টে অর্থ রাখার চাইতে বাড়ি কেনাকে ভালো বিনিয়োগ বলে গণ্য করা হতো।”

এর মানে হচ্ছে, পশ্চিমা দেশগুলোতে কোভিড মহামারির পর অর্থনীতিতে যে চাঙ্গা ভাব দেখা গেছে, চীনে সেটা ঘটেনি।

‘জিরো-কোভিড নীতি বাতিল করার পর ধারণা করা হয়েছিল চীনের মানুষ পাগলের মতো অর্থ ব্যয় করবে’, বলছেন মিজ গার্সিয়া-হেরেরো। তারা বেড়াতে যাবে, প্যারিসে যাবে, আইফেল টাওয়ার কিনে নেবে। কিন্তু চীনের মানুষ জানে যে বাড়ির দাম কমে যাওয়ায় তাদের সঞ্চয় কমে গেছে, ফলে তারা এখন আর কোন বাড়তি অর্থ-কড়ি খরচ করতে চাইছে না।

এর ফলে যে লোকজন নিজেদের এখন দরিদ্রতর বলে মনে করছে সেটাই শুধু নয়, এর ফলে চীনের স্থানীয় সরকারগুলোর ঋণ সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে।

ধারণা করা হয়, এদের শত শত কোটি ডলারের রাজস্বের এক তৃতীয়াংশ অর্থই আসে ডেভেলপারদের কাছে জমি বিক্রি করে। কিন্তু এখন এই খাত বড় সংকটে।

কিছু কিছু অর্থনীতিবিদের মতে, আবাসন শিল্পের এই সংকট কাটতে বহু বছর সময় লাগবে।

Facebook Comments Box

Posted ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com