নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট | 309 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের মর্যাদাসম্পন প্রতিষ্ঠান নিউইয়র্ক বাংলাদেশি আমেরিকান লায়নস ক্লাব। গত ৯ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী লায়নদের ঐতিহ্য ও মর্যাদার পতাকা বহন করে চলেছে সংগঠনটি। কমিউনিটিতে একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার ২০ জুন এই সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারনের নির্বাচন। আর এতে লড়ছেন কমিউনিটির দুই পরিচিত মুখ। প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হয়েছেন মূলধারার রাজনীতিক, কুইন্স কমিউনিটি বোর্ড সদস্য ও সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদক শাহ নেওয়াজ। তার বিপরীতে লড়ছেন মুনমুন হাসিনা বারি। তিনিও কমিউনিটিতে পরিচিত । তিনি লায়ন ডিস্ট্রিক্ট ২০-আর২ এর সেকেন্ড গর্ভনর ও বারি হোম কেয়ারের কর্ণধার আসেফ বারি টুটুলের সহধর্মিনী।
নির্বাচনের ব্যাপারে নিউইয়র্ক কাগজের পক্ষ থেকে উভয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছিল। সভাপতি প্রার্থী শাহ নেওয়াজ প্রতিবেদককে বলেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করাই লায়নদের উদ্দেশ্য। আমি এই ব্রতে ব্রত। কমিউনিটির সেবার অংশ হিসেবেই লায়ন করি। কোন কিছু পাবার জন্য নয়। সন্মানিত সদস্যরা আমাকে নির্বাচিত করলে তাদের সুখে দুঃখে থাকবো। অতীতেও ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আপনিতো এর আগেও সভাপতি ছিলেন। আবার নির্বাচন করছেন কেন? জবাবে শাহ নেওয়াজ বলেন, ক্লাব সুন্দরভাবে চলছে। কারও প্রতি আমার অভিযোগ নেই। কিছুটা সাংগঠনিক দুর্বলতা সংগঠনের রয়েছে। যেমন, কাঠামোগত দুর্বলতা । সংগঠনের কোন বাই ল’জ নেই। একটা বাই ল’জ তৈরি করতে পারলে সংগঠন আরও সুন্দর নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলবে। ক্লাবটিকে আরও জবাবদিহিমূলক ও জন কল্যানমুখি করার জন্য আমি প্রার্থী হয়েছি। মাননীয় ভোটাররা আমাকে উপযুক্ত মনে করলে ভোট দেবেন।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বি মুনমুন বারিকে কিভাবে মুল্যায়ন করবেন? জবাবে শাহ নেওয়াজ বলেন, তাকে আমি যথেষ্ঠ সন্মান করি। প্রত্যেকের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। তিনিও একজন উপযুক্ত প্রার্থী। আমাদের যেকোন সদস্যই এ পদের জন্য প্রার্থী হবার যোগ্যতা রাখেন। নির্বাচনে জিততে না পারলে আপনার প্রতিক্রিয়া কি হবে? শাহ নেওয়াজ বলেন, ভোটারদের রায় সন্মানের সাথে মেনে নেব। বিজয়ী প্রার্থীর প্রতি পূর্ণ সর্মথন থাকবে। সংগঠনকে এগিয়ে নেবার জন্য আরও বেশি সহায়তা করবো।
অপর প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুনমুন বারি বলেন, নিউইয়র্ক বাংলাদেশি আমেরিকান লায়নস ক্লাবকে একটি প্রেস্টিজিয়াস ক্লাব মনে করি। গত ৭ বছর ধরে এ সংগঠনের সাথে জড়িত। কোন ব্যক্তিই উর্ধ্বে নয়, কেউ নীচেও নয়। প্রত্যেকেই একে অপরের সহযোগী। এই বিশ্বাস নিয়েই লায়ন করি। স্টেজে বসার জন্য লায়ন করি না। কাজ করি ভালো লাগা থেকেই। মানবিক কাজ করাই আমার লক্ষ্য। আমি বাংলাদেশে গিয়ে বিভিন্ন কল্যানমূলক কাজ করে থাকি। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করি। কিন্তু নিজের নাম ফলানোর জন্য তা করি না। আমি লায়নের নামেই করে থাকি। এতে লায়নের ইমেজ বৃদ্ধি পায়। জয়ের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী আপনি? জবাবে মুনমুন বলেন, অবশ্যই আশাবাদী। লায়নসে এখন স্ট্রং মেন্টালিটির নেতৃত্ব দরকার। যারা সংগঠনের ডেকোরাম মানে না তাদের স্টপ করা উচিৎ।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বি শাহ নেওয়াজকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? জবাবে মুনমুন বলেন, তিনি একজন ভালো পারসন। তবে বারবার এ পদে আসা তার ঠিক না। এটা কোন গুড প্রাকটিস না। তা’হলে আপনি নির্বাচিত হলে কি দ্বিতীয় বা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচন করবেন না? জবাবে তিনি বলেন, মোটেই না।
নির্বাচনে সাধারন সম্পাদক পদে লড়ছেন বর্তমান সাধারন সম্পাদক হাসান জিলানী ও জে এফ এম রাসেল। তবে লড়াইটা জমে উঠেছে সভাপতি দুই প্রার্থীকে নিয়েই। লায়নের ডিস্ট্রিক্ট লিডার আসেফ বারির স্ত্রী মুনমুন হাসিনা নিজে প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনটা জমে উঠেছে। গত সোমবার বাংলাদেশি কমিউনিটির ব্যস্ততম স্থান জ্যাকসন হাইটস লায়নদের নির্বাচন নিয়ে ছিল সরগরম। অনেক প্রার্থী ও তাদের সর্মথকদেরও ব্যস্ত দেখা যায়। তারা ভোটারদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন। বর্তমান কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব টার্ম লিমিটের কারনে নির্বাচনে অংশ নেননি। তিনি আরও বড় পদে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন কাজ করছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক আবু সাইয়িদ। কমিশনের সদস্যরা হলেন মতিউর রহমান. মোঃ নাসির উদ্দীন, গিয়াস আহমেদ, ও এটর্নি মঈন চৌধুরী। গত রাতে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বেশ কয়েকজন ভোটারকে কমিশনের সদস্যদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায়। কমিশনের দু-একজন সদস্য নির্দিষ্ট কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে শোনা গেছে।
Posted ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam