সারাদেশ ডেস্ক | বুধবার, ১০ মে ২০২৩ | প্রিন্ট | 127 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
পরিচ্ছন্ন আর অভিজাত এলাকা হিসেবে বেশ নামডাক ছিল নগরীর হাজী মহসিন ও সাউথ সেন্ট্রাল রোডের। খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সাবেক দুই মেয়রসহ ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের আবাস ছিল এই এলাকায়। তবে ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পের পাইপ বসাতে গিয়ে তছনছ হয়ে গেছে ওয়ার্ডটির অধিকাংশ সড়ক। যত্রতত্র সড়ক খুঁড়ে পাইপ ও ম্যানহোল নির্মাণ করায় ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলোর এখন বেহাল অবস্থা। খানাখন্দ আর এবড়োখেবড়ো সড়কে চলাচল করাটাই যেন দায়!
কেসিসির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আয়তন দশমিক ৬৬ বর্গকিলোমিটার (১৬৩ একর)। বাবু খান রোড থেকে রূপসা স্ট্যান্ড রোড, খানজাহান আলী সড়ক থেকে সাউথ সেন্ট্রাল রোড পর্যন্ত এর সীমানা। প্রায় ২৫ হাজার মানুষের এই ওয়ার্ডে ভোটার ১৩ হাজার ১৫৬। ওয়ার্ডটিতে নগরীর সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা খুলনা আলিয়া, সরকারি পাইনিওয়ার গার্লস কলেজসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওয়ার্ডের ৯০ শতাংশই আবাসিক এলাকা।
রোববার সকালে সাউথ সেন্ট্রাল রোডে গিয়ে দেখা গেছে, সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় সড়কে যান চলাচল বন্ধ। শিশুদের নিয়ে কাঠফাটা রোদে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছেন অভিভাবকরা।
মসজিদ গলির বাসিন্দা নুরুন নাহার বলেন, ‘সাত-আট মাস ধরে সন্তানদের নিয়ে এভাবে কষ্ট করতে হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই।’
হাজী মহসিন ও সাউথ সেন্ট্রাল রোডের সংযোগস্থলে পবিত্র রায়ের গ্যারেজ। প্রায় ৩০ বছর এই মোড়ে রিকশা ও সাইকেল মেরামত করেন। তিনি বলেন, ‘সব উন্নয়ন নষ্ট করে দিচ্ছে রাস্তা। ভাঙা সড়ক দিয়ে রিকশা, সাইকেল কিছু আসতে পারে না। আট মাস ধরে আয়-রোজগার বন্ধ।’
ট্যাংক রোডে গিয়ে দেখা যায়, ওয়াসার খুঁড়ে রাখা গর্ত ভরাট করার কাজ চলছে। স্থানীয় মুদি দোকানি শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দেখলে মনে হবে এটা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা।’ মসজিদ রোডের বাসিন্দা হারুন শেখ বলেন, ‘মাদক ও মশা ছাড়া এলাকায় তেমন সমস্যা নেই। বাড়িতে এসে ময়লা নিয়ে যায়, ড্রেনও নিয়মিত পরিষ্কার করে। সবার আগে রাস্তা ঠিক করা জরুরি। ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক ও ড্রেনগুলো তুলনামুলক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। স্থানীয়রা জানান, সড়কবাতিও সচল রয়েছে।
গগন বাবু রোডের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম জানান, বর্ষায় জোয়ারের পানি ড্রেন দিয়ে সড়কে চলে আসে। বছরের ওই সময়টা দিনে-রাতে দুই দফা পানির ভেতর দিয়ে চলাচল করতে হয়।
বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকির সাইফুল ইসলাম এবারও কেসিসি নির্বাচনের প্রার্থী। গত নির্বাচনে কাউন্সিলরের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল ওয়ার্ডকে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজমুক্ত করা, ওয়ার্ড সিসি ক্যামেরার আয়তায় আনা, সড়ক সংস্কার ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা।
প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়ে ফকির সাইফুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ডকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত করতে এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। করোনার কারণে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যায়নি। সুপেয় পানির জন্য চারটি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করেছি। ওয়ার্ডের প্রধান সড়কগুলোর কাজ চলছে। তিনি বলেন, গগন বাবু সড়কটি উঁচু করে নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ওয়াসার খুঁড়ে রাখা সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Posted ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১০ মে ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter