হাসান মাহমুদ | রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 27 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
বাংলাদেশে রেমিটেন্স দৌড়ে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রিয় ব্যাংক। এসব দেশে থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার বাংলাদেশে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো হয়। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এবং শারজাহ শহর থেকে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে বিভিন্ন দেশের প্রবাসিরা ১৪৩ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা অনন্য রেকর্ড হিসেবে এবার গণ্য হচ্ছে। গত বছরের একই সময়ে পাঠানো হয়েছিল মাত্র ৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। তাতে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা ওই সময়ের মধ্যে বাড়লো প্রায় ৭০ শতাংশ রেমিট্যান্স।
কানাডার বাংলাদেশি প্রবাসিদের চেয়ে রেমিট্যান্স দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সাউথ আফ্রিকার প্রবাসিরা। কানাডা থেকে দেশে পাঠানো হয় জুলাই—আগস্ট মাসে মাত্র ৩৯.৮ মিলিয়ন ডলার এবং সাউথ আফ্রিকা থেকে বাংলাদেশি প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৪৪.২ মিলিয়ন ডলার। গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ডলারের রেট ছিল ১২০ টাকা। সেই সঙ্গে ২.৫ পার্সেন্ট প্রণোদনা পান গ্রাহকরা।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাবার উদ্যোগ হিসেবে নিউইয়র্কের রেমিট্যান্স ব্যবসায়িদের নিয়ে সম্প্রতি এক মতবিনিময় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা, ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল মিনিস্টার ফজলে রাব্বি উপস্থিত থেকে ব্যবসায়িদের বিভিন্ন বিষয়ে সরকারী সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা গতকাল বৃহস্পতিবার আজকাল’কে বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে আমরা সব সময় উৎসাহ যুগিয়ে থাকি। বিভিন্ন রেমিট্যান্স ব্যবসায়িদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন নিউইয়র্কের প্রবাসিগণ। এজন্য বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রবাসিদের আমরা অভিনন্দন জানাই।’
চলতি বছরের জুলাই—আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স ৬৭০.৪ মিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসিরা। এর মধ্যে দুবাই ও শারজাহ’র বাংলাদেশিরা বেশি পাঠিয়েছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৫৩২.৪ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে নিউইয়র্কের বাংলাদেশিরা বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। তৃতীয় অবস্থানে সৌদি আরবের প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৫১৩.৪ মিলিয়ন ডলার। চতুর্থ দেশ হিসিবে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশি প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৩৮২.৫ মিলিয়ন ডলার। পঞ্চম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৩৬০.০ মিলিয়ন ডলার। ষষ্ঠ দেশ হিসিবে ইতালির প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ২৭৯.৯ মিলিয়ন ডলার। সপ্তম দেশ কুয়েতের বাংলাদেশি প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ২৪৬.০ মিলিয়ন ডলার। অষ্টম দেশ হিসেবে ওমানের বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন ২১৫.৪ মিলিয়ন ডলার। নবম দেশ হিসেবে কাতারের প্রবাসিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৭৬.৫ মিলিয়ন ডলার এবং দশম দেশ সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশিরা দেশে পাঠিয়েছেন ১১৮.৭ মিলিয়ন ডলার।
জুলাই আগস্ট মাসে সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ডেনমার্ক এবং আয়ারল্যান্ডের প্রবাসি বাংলাদেশিরা। ডেনমার্ক থেকে দেশে পাঠানো হয় ৪.৬ মিলিয়ন ডলার এবং আয়ারল্যান্ডের প্রবাসিরা পাঠিয়েছেন ৫.০ মিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা বৃহস্পতিবার বলেন, প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর উদ্যোগ বেড়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বাড়ানোর কারণে এখন হন্ডি বা অবৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা অনেক কমেছে। এতে বর্তমানে প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। চলতি মাসের শেষ ১৫ দিনে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ গত বছর একই সময়ের চেয়ে বেশি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
Posted ১:১৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam