মঙ্গলবার ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলাম: মোমেন

ড. মোমেনের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে তোলপাড়।।উনি কখনোই উপদেষ্টা ছিলেন না: সিদ্দিক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   152 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেনের বক্তব্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে। নেতারা বলছেন, ১/১১ এর সময় শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলন নিয়ে মোমেন মিথ্যাচার করছেন। তিনি কখনোই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন না। গত ৪ এপ্রিল ঢাকায় প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান শামীমের স্মরনে আয়োজিত শোক সভায় ড. মোমেন বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নিয়ে বক্তব্য দিলে বির্তকের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি ও সাপ্তাহিক গণবাংলা আয়োজিত শোক সভায় সভাপতিত্ব করেন এম এ করিম। প্রধান অতিথি ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ এমপি।

ড. আব্দুল মোমেন বলেন,আতাউর রহমান শামীমের সাথে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার র্দুদিনে আমার পরিচয়।২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে। তখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যত নেতাটেতা ছিল তাদের অধিকাংশই মাইনাস ২ ফরমূলার পক্ষে ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হয়ে গেল মাইনাস ২ এর পক্ষের লোক। আমি তখন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। আমিই একমাত্র ব্যতিক্রম। সেই র্দুদিনে আমি বস্টনে থাকি।আমরা ৪ বা ৫ জন আওয়ামী লীগ। বাকী সবাই মাইনাস ২ ফরমূলার লোক। একই অবস্থা নিউইয়র্কে। সেখানে কোন লোক পাওয়া যেত না। আমরা তখন ১৪/১৫ জন শেখ হাসিনা মুক্তি আন্দোলন সংগঠন করি। বাদল আকন্দ নামের ভদ্রলোক এ সংগঠন তৈরি করেন। প্রত্যেক সপ্তাহে তখন নিউইয়র্কে যেতে হতো এ আন্দোলনে শরিক হতে। কারন তখন আওয়ামী লীগের কেউ আসতো না।এ র্দুদিনে আমি গেলে শামীমকে পেতাম। হাকিকুল খোকন,শামীম ও টনি রহমান সহ অল্প কয়েকজন আমরা বসতাম।

ড. মোমেন বলেন, নেত্রী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে খবর দিলেন তিনি বস্টনে আসছেন। রাত ১০/১১টার দিকে খবর পেলাম। পরদিন বিকেল ৩টায় তিনি আসবেন। বিএনপি জামাত জেনে ফেলেছে।শুনলাম তাদের ৪০/৫০ জন ‘গো ব্যাক শেখ হাসিনা’ সমাবেশ করবে। আমাদের শক্তি খুবই কম। তখন কি করবো? নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি কল করা শুরু করলাম।নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের যারা তারাতো মাইনাস ২ এর দলে। তবুও তাদের কল করলাম। আমার ভাইবোন, ভাগনে , ভাগ্নী ও ভাগনী জামাই সবাইকে আসতে বললাম। বললাম, তোমরা আসো। আমাদের শক্তি দাও। ‘আই মাস্ট ছে, উই আর ভেরি লাকি।’ গোলা টোলাপ নেত্রী আসার আগেই চলে এসেছে। ৬০ জন হয়ে গেলাম। এয়ারপোর্টে পুলিশ ২ দিকে ২ দলকে আলাদা করে রেখেছিল। আমাদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় জামাত বিএনপি কোন ঝামেলা করে নাই।নেত্রীর সাথে তখন একজন সিকিউরিটি অফিসার, হাছান মাহমুদ ও রিটায়ার্ড জেনারেল তারিক এসেছিলেন। তখন আমাদের টাকা পয়সাও ছিল না। তাদের রাখার ব্যবস্থাও নেই। হাসান মাহমুদ আমার বাসায় উঠলেন। এতও মানুষ। সবাই ক্ষুধার্ত। নিজাম ভাই ব্যাংকের মালিক। তিনি সহায়তা করলেন। কর্মিদের জন্য পিজা খাবারের ব্যবস্থা করা হলো।

সাবেক মন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মিরা নানা মন্তব্য করতে থাকেন তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের দৃষ্টি আর্কষন করলে তিনি বলেন, মোমেন সাহেব যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নিয়ে যা বলেছেন তা মিথ্যাচার। মানুষ যে এতও মিথ্যুক হতে পারে তা কল্পনাও করা যায় না। ড. মোমেন কখনোই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন না। তখন প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি ছিলেন খালিদ হাসান ও সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ। সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করলে তা জানতে পারবেন। নেত্রী বস্টনে আসছেন এ খবর আমাদের দিয়েছিলেন জয় মামা। আমি, খালিদ হাসান, সাজ্জাদ, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মমতাজ ও টনি সহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মি সেদিন বস্টনে গিয়েছিলাম। বিমান থেকে নামার পরপরই আমি, খালিদ হাসান,সাজ্জাদুর রহমান ও আখতারুজ্জামান নেত্রীকে রিসিভ করি। তখনতো মোমেন সাহেবকে দেখিইনি। আর পিজা খাওয়ানোর কথাও মিথ্যা। নেত্রীর সামনে বসেছিলেন মমতাজ ও নজমুল। নেত্রী টাকা দেন পিজা কেনার জন্য। জ্বনাব সিদ্দিক বলেন, মন্ত্রীত্ব হারিয়ে ভারসাম্যহীন কথা বলছেন তিনি।

আন্দোলন প্রশ্নে ড. সিদ্দিক বলেন, সাজ্জাদ ও আমি ১/১১ বিরোধী আন্দোলন করেছি। সাথে ছিল বশারত আলী, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, মহিউদ্দীন দেওয়ান সহ অনেকেই। প্রতি সপ্তাহে জাতিসংঘ ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে সভা করতাম। মোমেন সাহেব প্রতি সপ্তাহে আসাতো দূরের কথা সেই ৯ মাসে ২ বা ৩ বারের বেশি আন্দোলনে আসেন নাই।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ প্রতিবেদককে বলেন, ২০০৭ সালে যেদিন নেত্রী গ্রেফতার হন এস্টোরিয়ার বনফুল রেষ্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় শতশত নেতাকর্মি উপস্থিত ছিলেন। বস্টন এয়ারপোর্টে আমরা শতাধিক লোক ছিলাম। বিএনপি জামাতের কাউকে আমরা সেখানে দেখিওনি। যুক্তরাষ্ট্রে হাতে গোনা কয়েকজন মাইনাস ২ ফরমূলায় ছিলেন। অধিকাংশই ছিলেন নেত্রীর প্রতি অনুগত। মোমেন সাহেবের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মিকে মর্মাহত করেছে। তাদের আন্দোলন সংগ্রামের অবদানকে খাটো করেছেন। ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। নেত্রী যেদিন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সেদিন আমি, খালিদ হাসান, সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, ফারুক আহমেদ, ওমর, পারভেজ ও সোলায়মান আলী তার সাথে ছিলাম।

Facebook Comments Box

Posted ৬:৫৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com