বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী ইমিগ্রান্ট এখন কর্মরত নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি অফিসে। কেবলমাত্র একটি ডিপার্টমেন্ট হিউম্যান রিসোর্সেস এডমিনিস্ট্রেশন বা সংক্ষেপে এইচআরএতেই রয়েছেন কয়েকশ। নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অব সোশাল সার্ভিসেসের সার্ভিস ওরিয়েন্টেড এই ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশী কমীর্দের প্রশংসায় উদ্বেলিত তাদের ইউনিয়ন নেতা এ্যানথনি ওয়েলশ। আর মেয়র অফিসের চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মীর বাশারও প্রকাশ করলেন তার উচ্ছ্বাস।
গত শনিবার এইচআরএ—তে কর্মরত বাংলাদেশীদের একটি ফ্রেন্ড এন্ড ফ্যামিলি নাইট হয় জ্যামাইকার আল আকসা পার্টি হলে। অনুষ্ঠানটির নাম প্রীতিময় গীতিময়। বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ ব্যক্তি সপরিবারে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মীর বাশার, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৌশিক আহমেদ ও এ্যানথনি ওয়ালশ। সিটিতে কর্মরত মনজুর কাদের এবং নূপুর চৌধুরীর চমৎকার যৌথ উপস্থাপনায় আয়োজিত এই প্রীতিময় গীতিময় ছিল প্রকৃত অর্থেই একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ মেলা। তিন অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করা, সদ্য পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের লাল গোলাপ উপহার সহ মুমু আনসারীর আবৃত্তি, নবনিযুক্ত চাকরিপ্রাপ্তদের বরণ, অবনী কুন্ডুর পুঁথি পাঠ, নাসিমা চৌধুরী ও আলমাস আহমেদের নাচ, আলমা জাবিনের প্রার্থনা সঙ্গীত ছিল উপভোগ্য। শুরুতেই একগুচ্ছ বেলুন উড়িয়ে ইউএস—বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি আয়োজিত এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস ও বেগম রহিমা।
প্রধান অতিথি মীর বাশার তার বক্তব্যে বলেন, এক সময় নিউইয়র্ক সিটি জবে মাত্র কতিপয় বাংলাদেশী ছিলেন। অথচ আজ তাদের যোগ্যতায় শত শত বাংলাদেশী কাজে নিয়োজিত। দুএকটি ছাড়া প্রায় সব ডিপার্টমেন্টেই রয়েছেন বাংলাদেশী। এইচআরএ অফিসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশী আছেন। আজ তাদের এই প্রীতিময় গীতিময় অনুষ্ঠানে এসে আমি আপ্লুত।
বিশেষ অতিথি কৌশিক আহমেদ বলেন, একটি নতুন কম্যুনিটির বেড়ে ওঠা কেবল সংখ্যা দিয়ে নিরূপণ করা যায় না, তাদের বিকাশ দিয়ে নিকাশ করতে হয়। এত বিপুল মানুষ নিউইয়র্ক সিটির জবে কর্মরত যা এখানে না এলে বোঝা সম্ভব হত না। তারা নিউইয়র্ক সিটিতে আমাদের কম্যুনিটির ইমেজ পরিবর্তন করে দিচ্ছেন সব দিক দিয়ে। তিনি বলেন, তাঁরা যে এগিয়ে যাচ্ছেন তার প্রমাণ পাওয়া গেল আজকের অনুষ্ঠানে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া ব্যক্তিদের গোলাপ দিয়ে সম্মাননা জানানো দেখে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (এইচআর বিভাগ) ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৭ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকার আল আকসা পার্টি হলে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো শুভেচ্ছা বিনিময়, নবাগত কর্মকর্তা ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ফুল দিয়ে বরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি। এতে সিটির এইচআর বিভাগে কর্মরত তিন শতাধিক কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যতিক্রমী এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাংলাদেশী—আমেরিকান মীর বাশার, বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিয়ন লীডার এ্যানথনি ওয়েলস ও সাপ্তাহিক বাঙালী সম্পাদক কৌশিক আহমেদ। যৌথভাবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এইচআরএ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর বাংলাদেশী—আমেরিকান রুহুল কুদ্দুস ও রহিমা বেগম। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান আয়োজকদের অন্যতম জাহাঙ্গীর আহমেদ অনুষ্ঠানে মেয়র অফিসের পক্ষ থেকে প্রদত্ত প্রোক্লেমশান হস্তান্তর করেন প্রধান অতিথি মীর বাসার।
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইব্রাহীম ভূইয়া, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সভাপতি ডা. নাফিসুর রহমান, উপদেষ্টা মোমেন ভূঁইয়া প্রমুখ। সমাপনী বক্তব্য রাখেন আয়োজকদের অন্যতম আনোয়ার পারভেজ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মনজুর কাদের, নূপুর চৌধুরী ও আব্দুল জলিল। (বাঙালী প্রতিবেদন/ইউএনএ )