রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিনেপ্লেক্সে আসা দর্শকরা সিনেমা না দেখেই ফিরে যাচ্ছেন

বিনোদন ডেস্ক   |   শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   104 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সিনেপ্লেক্সে আসা দর্শকরা সিনেমা না দেখেই ফিরে যাচ্ছেন

ঈদের আনন্দ আরও বেশি রঙ্গিন করতে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে সিনেমা হলে ছুটছেন দর্শকরা। কিন্তু হলে এসে সিনেমা না দেখেই ফিরে যেতে হচ্ছে অনেক দর্শককে। শুক্রবার রাজধানীর বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে এমন দৃশ্য দেখা গেল। শাহবাগ থেকে ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘প্রিয়তমা’ এর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার শো দেখতে এসেছেন এক নবদম্পতি। অনেকটা ক্ষোভ নিয়েই তারা জানালেন, প্রিয়তমা সিনেমার সাড়ে সাতটার শো দেখবে বলে বিকেল পাঁচটার সময় টিকেট কাউন্টারে এসে দেখেন কোনো টিকেট নেই। পরের দিনের টিকে চাইলেও তারা জানালেন সেদিনেরও সকল টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। তাই সিনেমা না দেখেই ফিরে যেতে হচ্ছে।

সরেজমিনেও এ চিত্র দেখা গেল। বিকেল ছয়টার দিকে কাউন্টারে টিকেটের খোঁজ করতে গেলে প্রতিবেদকে কাউন্টার থেকে জানানো হল ‘প্রিয়তমার কোনো টিকেট নেই। পরের দিনের কেবল স্কিনের কাছের দুইটি টিকেট রয়েছে। টিকেট পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে শো বাড়ানো হচ্ছে না কেনো? প্রশ্ন রাখলে কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা কর্মীরা কেবল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলেন। অবশ্য সাধারণ দর্শকদের বেলায় তারা একবাক্যে উত্তর দিচ্ছেন টিকেট না থাকলে আমরা কি করব? দুইদিন পরের টিকেট কাটুন।

টিকেট না পেয়ে ফিরে যাওয়াদের একজন কবির হোসেন বললেন, আর একদিন পরই অফিস খুলে যাবে। তখন তো আর সিনেমা দেখার সুযোগ পাব না। তাই ঈদের এই ছুটির সময়টা সিনেমা দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু টিকেট না পাওযায় সিনেমা দেখা হচ্ছে না। তবে আমার মনে হয় ঈদের এই ছুটির সময়টা শো আরও বাড়িয়ে দিলে আমরাও বাংলা ছবিগুলো দেখার সুযোগ পেতাম।

শুধু ‘প্রিয়তমা’ নয়, ‘প্রহেলিকা’, ‘সুড়ঙ্গ’ ও ‘ক্যাসিনোর’ বেলাতেও এমন চিত্র দেখা গেল। তবে খুশির খবর এই যে সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানালেন, দর্শকদের চাপে ইতোমধ্যে ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার আরও দশটি শো বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু দর্শকদের চাপ থাকলেও শো অপরিবর্তিত রেখেছেন ‘প্রিয়তমা’ , ‘প্রহেলিকা’ ও ক্যাসিনো’ এর শো।

দর্শক আগ্রহ থাকা সত্তেও সিনেপ্লেক্সের শো না বাড়ানোয় ইতোমেধ্য কথা উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে জানাচ্ছেন। ‘ক্যাসিনো’ সিনেমার নির্মাতা সৈকত নাসির তো সরাসরিই সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ক্যাসিনো সিনেমাটি ৪টা ৪৫ এর শো হাউসফুল থাকা সত্ত্বেও তারা মিরপুর সনি এবং বসুন্ধরা শাখায় ৪ টা ৪৫ মিনিটের এর শো বন্ধ করে দিয়েছে। সিনেপ্লেক্সে বিকেলে ক্যাসিনোর কোন শো রাখেনি। সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে কে সিনেমা দেখে? এরকম নেককারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আগাম বার্তা ছাড়া সিডিউল পরিবর্তন করা এক ধরনের প্রতারণা।

সামগ্রিক এই বিষয়টি নিয়েই কথা হয় স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘স্টার সিনেপ্লেক্স বরাবরই বাংলা ছবির পক্ষে। আমরা সবসময় চাই বাংলা সিনেমা ভালো চলুক। এতে আমাদের জন্যই ভালো। এটা তো দর্শকদেরও চাইতে হবে। তারা যে ছবিতে বেশি সাড়া দেন আমরা সেই ছবির শো বাড়িয়ে দেই। আমাদের কাছে এখন সুড়ঙ্গ ছবির টিকিটের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে বেশি। প্রথমে সব শাখা মিলে “সুড়ঙ্গ”র মোট শো ছিল ১৮টি। আগাম টিকিট ছাড়ার পর দর্শকের চাহিদার কারণে এখন সব শাখা মিলে ৩০টি শো করা হয়েছে। অন্যদিকে শাকিব খানের প্রিয়তমার শো চলছে ৮টি। এখন যদি প্রিয়তমার চাহিদা আরও বাড়ে তাহলে তার শোও বাড়বে।’

স্টার সিনেপ্লেক্সের এই কর্তৃপক্ষ আরও বলেন, ‘দর্শকদের চাহিদা থাকলে আমাদের শো বাড়াতে তো কোনো সমস্যা নেই। এতে তো আমরাই লাভবান হবো। এইবার ঈদে বেশ গল্প নির্ভর সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। ঘুরে ফিরে দর্শকরা সব ছবিই দেখছে। দর্শকদের চাহিদার সঙ্গে আমরাও শো বাড়িয়ে দিচ্ছি। গত বছর থেকে বাংলা সিনেমা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। গত বছর মুক্তি পাওয়া “পরাণ” ও “হাওয়া” ছবি দুটি দর্শককে নতুন করে হলে টেনেছে। ভালো ব্যবসাও হয়েছে।’

এবারের ঈদে মাল্টিপ্লেক্সসহ দেশের ১৭১ হলে মুক্তি পেয়েছে ঈদের পাঁচটি ছবি। ছবিগুলো হলো ‘প্রিয়তমা, ‘সুড়ঙ্গ’, ‘ক্যাসিনো, ‘প্রহেলিকা’ও ‘লাল শাড়ি’। তবে মুক্তির প্রথম দিন থেকেই দর্শক আলোচনায় এগিয়ে আছে ‘প্রিয়তমা’, ‘সুড়ঙ্গ’, ‘প্রহেলিকা’। আলোচনার এই তালিকায় সবশেষ যুক্ত হয়েছে ক্যাসিনো সিনেমাটিও।

Facebook Comments Box

Posted ২:১৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ জুলাই ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com