শনিবার ১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে ট্রাম্পের যত বাধা

ডেস্ক রিপোর্ট   |   বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   238 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে ট্রাম্পের যত বাধা

নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য ট্রাম্পের এমন কিছু ইস্যু আছে, যার সঙ্গে অন্য কোনো প্রার্থীর মিল নেই। এর মধ্যে রয়েছে অপরাধ, অভিবাসন। এসব ইস্যু মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তৃণমূল রক্ষণশীলদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

ট্রাম্পের রয়েছে নিজস্ব সমর্থকগোষ্ঠী। মার্কিন এমন নাগরিকদের তিনি ভোটকেন্দ্রে নিতে পারেন, যাঁরা কিনা সাধারণত ভোট দেন না। তাঁর আরেকটি শক্তির জায়গা হলো, চার বছর ক্ষমতায় থাকার ফলে রিপাবলিকান পার্টিতে তাঁর সমর্থকেরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিয়েছেন। এসব তাঁকে বাড়তি সুবিধা দেবে।

এরপরও ট্রাম্পের গত মঙ্গলবারের বক্তৃতায় তাঁর বেশ কিছু দুর্বল দিকও সামনে এসেছে। তিনি বক্তৃতায় করোনা মহামারিকালে তাঁর ভুল পদক্ষেপ ও দুর্ভোগের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের হামলার ঘটনাও তোলেননি।

আবার গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফল নিয়ে পার্টির রক্ষণশীল সমর্থকদের মধ্যে বেশ সমালোচনা শুরু হয়েছে। ফলে এবারের প্রাইমারিতে দলের মধ্যেই বেশ কিছু বাধার মুখে পড়তে পারেন ট্রাম্প।

অতীতের রেকর্ড
আট বছর আগে রাজনীতিতে মোটামুটি নবীন ছিলেন ট্রাম্প। ফলে ভোটারদের ধারণা ছিল, তাঁর মাধ্যমে অনেকের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে। কিন্তু এখন সেই সুযোগ নেই। ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

ক্ষমতায় থাকাকালে ট্রাম্প কর কমানো, অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে বিচারব্যবস্থার সংস্কার করেছেন। আবার ব্যর্থও হয়েছেন। ওবামা কেয়ার নামে পরিচিত জনস্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভৌত অবকাঠামোতে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছুই করতে পারেননি। করোনা মহামারিতে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

৬ জানুয়ারির প্রতিচ্ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলা একটি ন্যক্কারজনক অধ্যায়। ওই হামলার দিন তিনি যা করেছেন এবং এর আগে–পরে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, এবার তার প্রভাব থাকবে। মধ্যবর্তী নির্বাচনে এর প্রভাব দেখা গেছে। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর ট্রাম্পের ভোট কারচুপির অভিযোগে যেসব রিপাবলিকান প্রার্থী সমর্থন দিয়েছেন, এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তাঁদের অনেকে হেরেছেন।

দুই রিপাবলিক নেতা—সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস।

দুই রিপাবলিক নেতা—সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। 

মামলা ঠেকাতে লড়াই
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এখন বেশ কিছু মামলা চলছে। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল বদলে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিউইয়র্কে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। আবার প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অবসরের পর গুরুত্বপূ্র্ণ নথি তিনি কীভাবে সামলেছেন, সেসব নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। এসব মামলায় তাঁর সাজা হতে পারে। কথা উঠেছে, আসলে এসব মামলা আটকে দিতে ট্রাম্প প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।

কঠিন প্রতিপক্ষ
আট বছর আগে ট্রাম্পের প্রথম প্রাইমারিতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফ্লোরিডার গভর্নর জেব বুশ। তিনি তখন অত শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন না। এবারও ফ্লোরিডার গভর্নরের সঙ্গে হয়তো তাঁকে লড়তে হতে পারে। তবে লড়াই এত সহজ হবে না। কারণ, প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্লোরিডার দুবারের জয়ী গভর্নর রন ডিস্যান্টিস। মধ্যবর্তী নির্বাচনে যখন অনেক জায়গায় রিপাবিলকান প্রার্থীরা খারাপ করেছেন, তখন বিশাল ব্যবধানে জিতেছেন ডিস্যান্টিস। রিপাবলিকানদের সম্ভাবনাময় তারকা প্রার্থী বিবেচনা করা হচ্ছে তাঁকে।

জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে
ট্রাম্প প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই যাচাই–বাছাই শুরু হয়েছে। জনমত জরিপ শুরু হয়েছে। নিউ হ্যাম্পশায়ার ও আইওয়ায় দলীয় ভোটারদের মধ্যে তিনি ফ্লোরিডার গভর্নর ডিস্যান্টিসের চেয়ে পিছিয়ে আছেন। ফ্লোরিডা ও জর্জিয়াতেও তিনি ডিস্যান্টিসের চেয়ে যথাক্রমে ২৬ ও ২০ পয়েন্ট পিছিয়ে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের মতামত জরিপেও ট্রাম্প খারাপ করেছেন।

বয়স একটা ব্যাপার
বয়সও একটা ব্যাপার বটে। ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতলে তখন তাঁর বয়স হবে ৭৮ বছর। জো বাইডেনও এই বয়সে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। ট্রাম্প জিতলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় প্রবীণ প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি।

রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনয়ন পেতে যে লড়াই করতে হবে, সেই লড়াই ট্রাম্প করতে পারবেন কি না, সেটি দেখার বিষয়। এবার প্রাইমারিতে তাঁকে লড়তে হবে তাঁর চেয়ে কম বয়সী প্রার্থীদের সঙ্গে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প অতীতে বেশ ধৈর্য দেখিয়েছেন। তবে প্রতিটি মানুষের ধৈর্যের একটি সীমাও তো আছে। ( তথ্যসূত্র প্রথম আলো)

Facebook Comments Box

Posted ২:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com