শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশিদের গর্বের দিন ও একজন ফাহাদ সোলায়মান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   177 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশিদের গর্বের দিন ও একজন ফাহাদ সোলায়মান

 

একজন ফাহাদ সোলায়মান। রাজনীতিক নন। তবে রাজনীতি বুঝেন ভালো। বাংলাদেশের দলগুলোর জন্য নিউইয়র্কে গলা ফাটাচ্ছেন না। দেশের দলগুলোর শাখা প্রশাখায় তার পদচারনা নেই । তবে রাজনীতির প্রতি তার অদম্য আগ্রহ।আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিতে। তার বিশ্বাস, আমেরিকায় বাস করে দেশের জন্য বড় ধরনের কাজ করা সম্ভব মূলধারা রাজনীতির মাধ্যমে। সে পথেই তিনি হাঁটছেন। একজন রেজিস্টার্ড ডেমোক্র্যাট। কয়েক বছর ধরেই স্থান করে নিয়েছেন কুইন্সের কমিউনিটি বোর্ডে। জ্যাকসন হাইটস এলাকায় আইনশৃংখলা ও পরিবেশ উন্নয়নে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রিসিংটনের সাথে কাজ করছেন। জ্যাকসন হাইটস্থ বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক তিনি। আঞ্জলিক সংগঠন নর্থবেঙ্গল সোসাইটির সাথে সম্পৃক্ত। নীরবেই তিনি আমেরিকার মূলধারায় বাংলাদেশিদের জন্য কাজ করছেন। স্বীকৃতিও পেতে শুরু করেছেন। কুইন্স ব্যরো প্রেসিডেন্ট ডোনাভান রিচার্ডস এর উপদেষ্টা থেকে হয়েছেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের এশিয়ান কমিউনিটি বিষয়ক কমিটির উপদেষ্টা।

 

*** মেয়রের হাতের ছবিটি ফটো সাংবাদিক নীহার সিদ্দির তোলা।ছবিটি তিনি অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে হস্তান্তর করেন***

২১ মার্চ ২০২৩। ইস্ট রিভারের তীর ঘেষে ইস্টএন্ড এভিনিউ ও ৮৬ স্ট্রিটে নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের বাসভবন গ্রেসি ম্যানসন। বিকেল ৫টা থেকেই এলাকাটিতে বাংলােেদশি কমিউনিটির লোকজনের আনাগোনা বাড়তে থাকে। সাড়ে ৫টা নাগাদ সিকিউরিটির আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করতে থাকেন। ৬টা নাগাদ বাসভবনের হলরুমটি কানায় কানায় ভরে যায়। কোন বসার ব্যবস্থা নেই। ছোট একটি পোডিয়ামের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি শিল্পীরা নাচ ও সংগীত পরিবেশন করছিলেন। সবই ছিল দেশাত্মবোধক জনপ্রিয় সংগীতগুলো। হলটির পেছনে তপন মোদক বাদ্যযন্ত্রের পসড়া বসিয়ে শুরের মূছনায় বাঙ্গালী সংস্কৃতির জানান দিচ্ছিলেন । নিউইয়র্ক সিটির ঐতিহ্যবাহী ল্যান্ডমার্ক- এই ভবনটিকে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের শত বছরের আবহমান সংস্কৃতির ধারক কোন দরবারশালা। হলটির ভেতরে উপচেপড়া বাংলাদেশিরা বাইরের লবি ও ডেকে দাঁড়িয়ে শত পরিচিতদের সাথে কুশল বিনিময় করছিলেন। ভেসে আসছিল শাহ মাহবুব, কামরুজ্জামান বকুল ও ত্রিনিয়া হাসানের সুরালো সংগীত। প্রিয়া ডায়েসের নেতৃত্বে নৃত্য পরিবেশনা সকলের প্রসংশা কুড়িঁয়েছে। উচ্ছাস ও আবেগ নিয়ে ছবি তুলতে কেউ ভুলে যাচ্ছিলেন না। মনে হচ্ছিল আমেরিকার রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক সিটির মেয়রের বাসভবনটি বাংলাদেশিদেরই। তাদেরই দখলে চলে এসেছে।

 


বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সিটি মেয়র এরিক এডামসের আতিথেয়তায় রিসিপশনের আয়োজন ছিল। মেয়র এডামস গ্রেসি ম্যানসনেই বাংলাদেশিদের আমন্ত্রন জানালেন। মেয়র বাংলাদেশি কমিউনিটির অতি আপন ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন। গেল সপ্তাহেই বাংলাদেশিদের একটি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন। তার ৪ দিন পর নিজ বাসভবনে বাংলাদেশিদের সন্মানে রিসিপশন পার্টি। বাংলাদেশের ৫১ বছরের ইতিহাসে নিউইয়র্ক সিটির গ্রেসি ম্যানসনে এ ধরনের অনুষ্ঠান প্রথম। অতীতে এতও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি একসাথে সমবেত হবার সুযোগও পাননি। আর এ অনুষ্ঠান আয়োজনের নেপথ্যে কাজ করেছেন বাংলাদেশি ফাহাদ সোলায়মান। তার একক মেধা ও পরিকল্পনায় বাংলাদেশিদের জন্য এমন একটি অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। মনে হচ্ছিল এটি যেন ‘ফাহাদ সোলায়মান’ শো। এ কৃতিত্ব তিনি পেতেই পারেন। এ দিনটিতে বিশ্বের মেয়রের বাসভবন হিসেবে খ্যাত বাড়িটি ছিল বাংলাদেশিদের। গর্বিত হবার যথেষ্ঠ কারনও রয়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে মূলধারায় রাজনীতির পদচারনার সুবাদেই। নিউইয়র্কে বাংলাদেশিরা আর একা নয়। পুরো নিউইয়র্ক সিটিই বাংলাদেশিদের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

 


মেয়র এরিক এডামস এ রিসিপশনে বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রসংশা করেন। তিনি বলেন, সিটির উন্নয়নে বাংলাদেশিদের অবদান অনস্বীকার্য। এ বাসভবনে আপনাদের উপস্থিতি প্রমান করে আমার সাথে গভীর সম্পর্কের গভীরতা। অনুষ্ঠানে  ৫ জনকে  সাইটেশনে প্রদান করা হয়। মেয়র তাদের হাতে তা তুলে দেন। সাইটেশন প্রাপ্তরা হলেন জামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার, রুতবা তাবাসুম, রিমা বেগম, প্রিমিয়াম গ্রোসারী ও সুইটসের কর্ণধার বাবু খান ও শাহ জে চৌধুরী।
অনবদ্য এ অনুষ্ঠানটির কৃতিত্ব ফায়াদ সোলায়মানের। নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশিদের মর্যাদা উর্ধ্বে তুলে ধরলেন। ২১ মার্চ ছিল নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের গর্বিত হবার দিন। ফায়াদ সোলায়মান বাংলাদেশের একজন প্রকৃত দূত হিসেবেই কাজ করেছেন।

নোট: নিউইয়র্ক কাগজ (nykagoj.com)এর পক্ষ থেকে ফাহাদ সোলায়মানকে ধন্যবাদ। তবে অনুষ্ঠানের কিছু অসংগতি ও সাইটেশন প্রদান নিয়ে সমালোচনা উঠেছে কমিউনিটিতে।একইদিন ও সময়ে সিটি হলে বাংলাদেশিদের নিয়ে আরেকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়েও প্রশ্ন আছে অনেকের। এসব নিয়ে আগামীতে লেখার আগ্রহ থাকলো নিউইয়র্ক কাগজের।

Facebook Comments Box

Posted ৫:৪১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com