
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 220 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
বাংলাদেশ সোসাইটির ওপর গড ফাদারদের কালো হাত এখনও রয়ে গেছে। কোন উদ্যোগ নিলেই মোড়লরা তা রুখতে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। বির্তক উত্থাপন করেন । প্রতিহিংসায় জ্বলে উঠেন প্রানপ্রিয় সংগঠনকে হেয় করতে। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব সকল বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ সোসাইটি আগামী ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ডে প্যারেড ২০২৫ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। বাংণাদেশিদের প্রাণকেন্দ্র কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসে এ প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। এ উদ্যোগে পার্টনার হিসেবে ইতোমধ্যেই জেবিবিএ ও বাপা সহ ৫০টিরও বেশি সংগঠন যোগ দিয়েছে। আরও বিভিন্ন সংগঠন যোগ দিবে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নবান্ন পার্টি হলে ‘মিটি দ্যা প্রেসে’ সোসাইটির কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণা দেন।
‘মিটি দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানটি চলছিল সুন্দর পরিবেশে। কিন্তু হঠাৎ করেই মঞ্চে আসীন ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ উত্তেজিত হয়ে উঠেন। টেবিল চাড়াতে থাকেন। সোসাইটির সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হু আর ইউ’ (তুমি কে?)। দিতে থাকেন নিজের ফিরিস্তি। সভাপতি সেলিম তাকে থামাতে গিয়ে ব্যর্থ হন। ফাহাদ সোলায়মান অত্যন্ত সুন্দরভাবে জ্বনাব আজিজের প্রশ্নের জবাব দেন। অনেকেই বলাবলি করছেন, হঠাৎ আজিজ উত্তেজিত হয়ে উঠলেন কেন? একটি ফোনই কি তাকে উত্তেজিত করেছে? নাকি অন্য কিছু। মোহাম্মদ আজিজ প্রথম দফার বক্তব্যে এই প্যারেডকে সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রতি দেন। বর্তমান কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিমের ভূয়সী প্রসংশা করেন। তিনি বলেন, সেলিম ভালো সংগঠক। আমার সাথে সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছে। আশা করছি এবার একটা সাকসেসফুল প্যারেড হবে। তবে প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির প্রতি একটা অনুরোধ রাখবো। ৪৫ বছর আমেরিকায় থাকি। ২ বার সোসাইটর সভাপতি ছিলাম। নারায়নগঞ্জ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ছিলাম। এবারের প্যারেডে কমিউনিটির প্রত্যেকটি সংগঠনকে অন্তর্ভূক্ত করুন। গতবারের প্যারেডে বাপা যদি না থাকতো——। বলবো না গতবারেরটা সুন্দর হয়েছে। যা হয়েছে তা একটা লজ্জাজনক ব্যাপার।
জ্বনাব আজিজের বক্তব্যের পর সভাপতি সেলিম মাইক নিয়ে বলেন, আমরা ২টি প্যানেলে নির্বাচন করেছি সত্য।এখন আমাদের সকলের প্যানেল একটাই। সেটা হলো বাংলাদেশ সোসাইটি। এমন সময় আজিজ একটি টেলিফোন কল রিসিভ করেন। সভাপতির বক্তব্যের মাঝেই মোহাম্মদ আজিজ দাঁড়িয়ে যান। মাইক হাতে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বক্তব্য দিতে শুরু করেন। এবারের বক্তৃতায় তিনি ছিলেন এগ্রেসিভ। তিনি বলেন,এই সোসাইটি অনেকের শ্রম, অর্থ ও মেধায় এখানে এসেছে। আমি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে বর্তমান সভাপতি ও সেক্রেটারির কাছে প্রশ্ন রাখছি—আপনারা কার সাথে আলোচনা করে গ্রান্ড মার্শালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিলেন। গ্রান্ড মার্শাল কে হবে? নিজের বুকের দিকে আঙ্গুল হেলিয়ে জ্বনাব আজিজ বলেন,আমি আজিজ মোহাম্মদ ২ বারের সভাপতি। অতীতে কেউ ২ বার সভাপতি হতে পারে নাই। ১২ বছর যাবৎ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। ( এ সময় তিনি টেবিল চাপড়াতে থাকেন)। বাংলাদেশ ভবনকে আমি রক্ষা করেছি। এতে সভাপতি সেলিম বলেন,বাংলদেশ সোসইটি নিয়ে কিছু বলার থাকলে সোসাইটির সভায় বলবেন। এটি শুধু সোসাইটির সংবাদ সম্মেলন না। আজিজ বক্তব্য না থামিয়ে বলেন, সোসাইটি অফিস অকশনে চলে গিয়েছিল। আমি রক্ষা করেছি। কবর স্থান কিনেছি। প্রেসিডেন্ট সেলিম বলেন, আজিজ ভাই আস্তে কথা বলেন। শেষ করেন। আজিজ বলেন, আমার শেষ না। ট্রাস্টিবোর্ডের সাথে আলোচনাতো করবেন। নাকি কিছু পেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা আমার প্রশ্ন বর্তমান কমিটির কাছে। সেলিম বলেন, এ প্রশ্ন মনে হয় বাংলাদেশ সোসাইটর সভায় করা ভালো। সংবাদ সম্মেলনে নয়। এ সময় জ্বনাব আজিজ সভাপতির বক্তব্যে বারবার ইন্টারাপ্ট করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আজিজ সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হু আর ইউ?’ ক্ষুব্ধ হয়ে সভাপতি সেলিম বলেন, থাবড়া থাবড়ি করবেন না আজিজ ভাই। তিনি দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে বলেন, আমি উইথ রিসপেক্ট বলছি। আজিজ ভাই টেবিল থাবড়া থাবড়ি করবেন না। বিনীত অনুরোধ করছি। ব্রাদার হিসেবে, কমিউনিটি লিডার হিসেবে বলছি। আপনি যদি টেবিল থাবড়ান, তা হলে অন্যরা কি করবে।? আপনি এটা করবেন না। আসুন সবার সহযোগিতা নিয়ে ১৩ এপ্রিলের প্যারেড সফল করি। মোহাম্মদ আজিজ আবার মাইক নিয়ে বলেন, আপনারা এখন থেকেই ডিভাইড করছেন। এ সময় অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ফাহাদ সোলায়মান মাইক নিয়ে বলেন, আজিজ ভাই আপনি আমাদের বড় ভাই। প্যারেড বাংলাদেশ সোসাইটির একা নয়। জ্যাকসন হাইটস এলাকা সহ ৫০টির বেশি সংগঠন এটির সাথে জড়িত। বাংলাদেশ সোসাইটি এর অর্গানাইজার। ৫০টিরও বেশি সংগঠন গ্রান্ড মার্শালের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একক কারো সিদ্ধান্তে হয়নি। এখানে কিন্তু হাত তুললে সবাই এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবে। এরপর জ্বনাব সোলায়মান ‘মিট দ্যা প্রেস’র সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রায় অর্ধশতাধিক সংগঠনের সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ডে প্যারেডের গ্র্যান্ড মার্শাল নির্বাচিত হয়েছেন আজকাল সম্পাদক ও প্রকাশক, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের সিইও এবং কমিউনিটির প্রিয়মুখ শাহ নেওয়াজ। ডে প্যারেডের চীফ অ্যাডভাইজার হিসাবে রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা গিয়াস আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মো. আলী, সোসাইটির সহসভাপতি কামরুজ্জামান কামরুল, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ফাহাদ সোলায়মান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট এম এন মজুমদার, ব্যবসায়ী নেতা কাজী আজম, আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম,নুরুল আজিম,হাসান জিলানী, নাসরিন আহমেদ, লায়ন রকি, জে মোল্লা সানি, বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন—বাপা’র প্রেসিডেন্ট এরশাদুল সিদ্দিক, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আতাউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী ।
সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম বলেন, আমরা সবাই মিলে এমন একটা ডে প্যারেডের আয়োজন করব যাতে সবাই বলবে বাংলাদেশের মানুষ সুসংহত। বাংলাদেশের মান মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সবাই মিলে এ আয়োজন সুন্দর করতে হবে।
তিনি বলেন, এ আয়োজনে সবার মতামতের ভিত্তিতে ডে প্যারেডের গ্র্যান্ড মার্শাল হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন আজকাল সম্পাদক ও প্রকাশক, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের সিইও এবং কমিউনিটির প্রিয়মুখ শাহ নেওয়াজ।
অনুষ্ঠানের ডে প্যারেডের চীফ অ্যাডভাইজার হিসাবে রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা গিয়াস আহমেদের নাম ঘোষণা করেন ফাহাদ সোলায়মান। তিনি বলেন, আয়োজনে সঙ্গে সম্পৃক্ত ৫০টি সংঠনের মতামতেই গ্র্যান্ড মার্শাল ও চীফ অ্যাডভাইজার মনোনীত করা হয়েছে।
Posted ৪:১১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫
nykagoj.com | Monwarul Islam