
মনোয়ারুল ইসলাম | সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট | 135 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
লেজ গুটানোর সময় পাবেন তো? হাসিনা সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৪৫ মিনিট। এরমধ্যে পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও একমাত্র বোন শেখ রেহানার পরমর্শ নেবার সুযোগ পেয়েছিলেন। আশ্রয় নিতে হলো সোজা ভারতে। কিন্তু আপনাদের হাতে কিন্তু সে সময়ও থাকবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (সুশীল), বিপ্লবী ছাত্রনেতা ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর লেজে গোবরে অবস্থা। তাদের কুল কিনারা আছে বলে মনে হয় না। আল্লাহ’র ওয়াস্তে সব চলছে। এতও দুর্বল ও অগোছালো সরকার বাংলাদেশ অতীতে দেখেছে কিনা সন্দেহ আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পর সায়েম ও মুশতাকের গদি দখল এমনকি জিয়ার আগমনের আগ পর্যন্ত সমগ্র জাতি এক ধরনের অস্থিরতা দেখেছে। প্রতিটি রাতে ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কূটনৈতিক পাড়ায় গুজব ঘুরে বেড়াত। সন্ধ্যা হলেই ফিসফাস শুরু হতো পাওয়ার হাউজগুলোতে। কত মানুষের প্রাণ গিয়েছে রাতের অন্ধকারে।
প্রায় ৫০ বছর পরে তার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাংলাদেশে। সময় বদলেছে। কিছু ঘটলেই মুহুর্তে তা সোশাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সয়লাব হয়ে যায়। এর সাথে যুক্ত হয় গুজবের ঢালপালা। কোনটা সত্য আর কোটনা মিথ্যে তা নির্ধারন করতে হিমশিম খেতে হয়। বিশেষ করে পতিত সরকারের সর্মথকরা বিদেশে বসে প্রতিদিন গুজব ছড়াচ্ছেন। এমনও নজীর আছে, একজন আওয়ামী একটিভিস্ট একদিনে ৩০০টি গুজব পোষ্ট করেছেন। সরকার বিরোধী গুজব সৃষ্টিকারির সংখ্যা অবশ্য নিউইয়র্কেই বেশি। গত ৭ দিনে শতশত বার ড. ইউনূসের পদত্যাগ দেখিয়ে পোষ্ট করেছেন। শেখ হাসিনার বায়বীয় হরতাল নিয়ে তারা কম যান নি। সরকারকে বির্তকিত ও দুর্বল করে রাজনীতির কৌশল বিরোধীরা নেবেই। এটাই স্বাভাবিক।
ইউনূস সরকারের দুর্বল চিত্ত বিপ্লবের পেছনে লাথি মেরেছে। বিড়ালটি মারা উচিৎ ছিল প্রথম রাতেই। ‘জামাতের সুফীবাদ’ ও বিএনপির অস্থিরতায় সময় গড়িয়েছে দ্রুত। প্রায়োরিটি এজেন্ডা ‘সংস্কার’ও মুখ থুবরে পড়েছে। এতও নড়বড়ে সরকারের পক্ষে জন প্রত্যাশিত সংস্কার তৈরি ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ছাত্রদের নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবে সারা জাতির অকুন্ঠ সর্মথন দিন দিন ফিকে হয়ে যাচ্ছে। তারা নিজেরাই আজ প্রশ্নে সন্মুখিন। নিজেদের মধ্যেই কোন্দলে জড়িত। বিপ্লবী ছাত্রদের ওপর মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে। তাদের ‘খোয়াব’ নিয়ে অযথাই বিএনপির মতো দল বির্তকে জড়াচ্ছে। সাথে সাথে সরকারের ওপরও নাখোশ সাধারন মানুষ। প্রশ্ন উঠতে পারে ১৭ বছরের সাজানো ফ্যাসিবাদের রাজত্বে ৬ মাসেই সব ফয়সালা হবে না। আর এই অজুহাত দেখিয়ে সময় ক্ষেপন করলে ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে আসতে পরে। প্রতি বিপ্লব ঘটতে পারে পতিতদের সহায়তায়। তখন তারা ৪৫ মনিট সময় দেবে না। নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার যায়গাটিও নেই। ভারত তো আপনাদের স্বাগত জানাবে না তা নিশ্চিত। যাবেন কোথায়? তা’হলে পরিণতি ভয়ংকর! নির্বাচনের আয়োজনই একমাত্র পথ সুস্থ ধারাবাহিকতার পথ।।
জনগনের ম্যান্ডেটে একটি নির্বাচিত সরকারই সমস্যার সমাধান করতে পারে। ফ্যাসিবাদ দমনে তারাই হতে পারেন নিয়ামক শক্তি। বিশ্ব মোড়লরাও সে পথে হাঁটবার তাগিদ দিচ্ছেন। একটি অংশগ্রহণমুলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরই স্বাভাাকি ধারাবাহিকতার কন্টকমুক্ত বাগান। শেখ হাসিনা আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার স্বপন দেখতে গিয়ে রাজনীতি ও নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করেছিলেন। গনতন্ত্রের মানসকণ্যা খ্যাত শেখ হাসিনা কখন যে ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠেন তা নিজেও জানতেন না। যার পরিনতিতে ৪৫ মিনিটের নোটিশে বিদায় নিতে হয়েছিল। এই ধরনের বিদায় আর কোন সরকারের জন্যই তা প্রত্যাশিত নয়।
মনে রাখতে হবে, ৫ আগষ্ট এর ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে নব্য ফ্যাসিবাদ বাংলার জনগনকে গিলে ফেলবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আপনাদের কাপুরুষোচিত নেতৃত্বকে থুথু মারবে!
Posted ১২:২১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
nykagoj.com | Monwarul Islam