
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 96 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ডেমোক্রেট না রিপাবলিকান কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউজে? কিংবা কোন দল নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে হাউজ ও সিনেটের? এমন এক টেনশন ও আতংক মাথায় নিয়ে আমেরিকার কোটি কোটি ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন মঙ্গলবার ৫ নভেম্বর। যদিও আগাম ভোট দিয়েছেন ইতোমধ্যে ৬৪ মিলিয়ন ভোটার।প্রেসিডেন্টসহ ৪৩৫টি হাউজ আসন ও ৩৪টি সিনেট আসন সহ নিউইয়র্ক স্টেটের এসেম্বলি ও সিনেট সদস্যদের ভোট হবে আগামী মঙ্গলবার। ভোট কেন্দ্র খুলবে সকাল ৬টায়, ভোট গ্রহণ চলবে একটানা রাত ৯টা পর্যন্ত।
এদিকে এই ভোটকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশি কমালা ও ট্রাম্প শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। অতীতের নির্বাচনগুলোতে বাংলাদেশিরা একট্রা হয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্টকেই ভোট দিত। এবারে চিত্রটি পাল্টে গেছে। বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতিকে অনুসরণ করে ভোটাররাও বিভক্ত। প্রকাশ্যেই বিএনপি ও জামাতের সর্মথকরা নেমেছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমালা হারিসের পক্ষে। আর আওয়ামী লীগের সর্মথকরা নেমেছেন ট্রাম্পোর পক্ষে। ২ দিন আগে ট্রাম্প প্রকাশ্যে বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করায় আরও উৎসাহী হয়ে উঠেছেন আওয়ামীলীগাররা। তাদের মতে, ট্রাম্পের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। পাশাপাশি হিন্দু—খ্রীস্টানদের ওপর বাংলাদেশ নির্যাতন হচ্ছে এমন বিবৃতি দিয়েছেন ট্রাম্প। যা কিনা ড, ইউনূস সরকারের বিপক্ষেই অবস্থান ব্যক্ত করে। ট্রাম্প জিতলে কিন¬টন পরিবারের বন্ধু হিসেবে খ্যাত ইউনূসের প্রভাব কমবে যুক্তরাষ্ট্রে। যা কিনা আওয়ামী লীগের পক্ষেই যাবে। এ ছাড়া হিন্দু কমিউনিটির বাংলাদেশিরা জোট বেঁধেছেন ট্রাম্পের পক্ষে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার শেষ মুহূর্তে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কমালা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প একে অন্যের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাধ্যমে সাঁড়াশি আক্রমণ এবং পাল্টা আক্রমণ করে চলেছেন। কমালা হ্যারিস ট্রাম্পকে বলেছেন ‘ফ্যাসিস্ট’। পাল্টা জবাবে টাম্প তাঁকে বলেছেন ‘স্টুপিড’। আগামী ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আগাম ভোট দেয়া যাবে আগামী ৩ নভেম্বর রোববার পর্যন্ত। নির্বাচনে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তা নিয়ে বিশ্লেষকগণ মত দিয়েছেন। দুই প্রার্থীর পক্ষেই তাদের সমর্থকরা এখন মাঠে রয়েছেন। বাংলাদেশি কমিউনিটির ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরছেন। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসি নীতি সম্পর্কে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক চলছে। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন কিন্তু বৈধ ‘কাগজ’ পাননি তাদের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে বলে জানা যায়। বিজয়ি হলে কমালা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতোই দুর্বল নীতি গ্রহণ করবেন বলেও ট্রাম্প সমর্থকরা যুক্তি দিচ্ছেন।
আসন্ন নির্বাচনের দিন ভোটে কে এগিয়ে যাবেন তা নিয়েও নানা আলোচনায় মাঠ এখন উত্তপ্ত। তবে বাস্তবতা হচ্ছে— প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে তাঁকে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট’—এ এগিয়ে থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি রাজ্যে মোট ইলেক্টোরাল ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে কোনো প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে। আবার সব রাজ্যে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা একরকম নয়। যদি কোনও প্রার্থী সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করতে পারেন, তাহলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য প্রতিনিধি পরিষদ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য সিনেট দ্বারা একটি অস্থায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজ্যগুলোতে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ইলেক্টোরাল ভোট নির্ধারণ হয়ে থাকে। নির্বাচনে ব্যাটল গ্রাউন্ড হিসেবে ৭টি স্টেইটকে ধরা হয়ে থাকে। তাতে ইলেক্টোরাল ভোট আছে ৯৩টি। ধারণা করা হচ্ছে— ওয়াশিংটন ডিসিসহ ১৯টি রাজ্য থেকে কমালা হ্যারিস কমপক্ষে ২২৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেতে পারেন। ২৭০টি ভোট পেতে হলে আরও ৪৪টি ভোট তাঁকে পেতে হবে। এক জরিপ অনুযায়ী ট্রাম্প এবং কামালা হ্যারিসের ব্যবধান পেনসিলভ্যানিয়াতে খুবই কম। জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলাইনাতে এই ব্যবধান আর একটু বেশি।
২৪টি রাজ্য রিপাবলিকানদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখান থেকে ট্রাম্প কমপক্ষে ২১৯ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট আছে টেক্সাসে ৪০টি।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিউইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে সমাবেশ করে জনসমর্থন চাঙ্গা করেছেন। এক জরিপে দেখা যায়, তাঁর জন্মস্থান নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। ২০২০ সালের নির্বাচনে সেখানে তিনি ৪০ শতাংশের কম ভোট পেয়েছিলেন। এই রাজ্যেই ২০২৪ সালে তাঁকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
১৯৬১ সালের ২৩তম এ্যামেন্ডমেন্টের মাধ্যমে কলম্বিয়ার ফেডারেল ডিস্ট্রিক্টকে তিনটি ইলেক্টর প্রদান করা হয়। যার ফলে মোট ইলেক্টরের সংখ্যা ৫৩৮—এ পেঁৗছে যায়। সিনেটর এবং প্রতিনিধিসহ ফেডারেল অফিসধারীরা এই ভোটার হতে পারেন না।
Posted ১:১৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam