রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আয়নাঘর কিনা জানি না, কাপড়ে চোখ বাঁধা ছিল: নওশাবা

বিনোদন ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   151 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আয়নাঘর কিনা জানি না, কাপড়ে চোখ বাঁধা ছিল: নওশাবা

জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারবিরোধী এক পোস্ট করার দায়ে গ্রেপ্তার হন। তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বেশ আলোচিত হয়। কীভাবে উঠতি এক তারকার ক্যারিয়ারে ভাটা পড়ে, তা অন্তত সবাই নিজ চোখেই দেখেছেন। কিন্তু নওশাবার ব্যক্তিজীবন, সামাজিক জীবন, এমনকি মানসিক-শারীরিক অবস্থার তখন কি হয়েছিল সে কথা কেউ জানেন না। কারণ এ নিয়ে পরে টু শব্দটিও করেননি অভিনেত্রী। সোমবার নিজের কাজ ও গ্রেপ্তারের দিনগুলোর কথা জানিয়েছেন নওশাবা।


২০১৮ সালে গ্রেপ্তার ও রিমান্ড নিয়ে কী ঘটেছিল?

নওশাবা: ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমি ছিলাম। ঘটনার দিন (৪ আগস্ট) বিকেলে ধানমণ্ডিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্বৃত্তের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় ফেসবুক লাইভে আমি বলেছিলাম, আমরা যদি ১৯৫২ সালে পেরে থাকি, ১৯৭১ সালে পেরে থাকে তবে এবারও পারব, আপনার ছাত্রদের পাশে দাঁড়ান। ঘটনাস্থলে যেটা হচ্ছে আমি সেটাই বলছিলাম। এসব কথা বলার কারণে আমি রাজাকার কীভাবে হলাম? এখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কোথায় আমি নীচে নামিয়েছি? তবে হ্যাঁ, লাইভে দুই একটা ভুল বাক্য থাকতে পারে। তাই বলে কয়েক দফা রিমান্ড? আমি বুঝেই উঠতে পারিনি আমাকে রাষ্ট্রদ্রেহী, গাদ্দার বা গুজবের রানী কেনো বলা হচ্ছিল। তখনই বুঝে গেছি- এদেশে সত্য বলার পরিস্থিতি নেই।

‘আয়নাঘরে’ রাখা হয়েছিল?

নওশাবা: ‘আয়নাঘর’ কিনা সেটা বলতে পারব না। তবে কালো কাপড় দিয়ে আমার চোখটা বাঁধা ছিল। এইভাবে ২১ দিন বিভিন্ন সময় আমাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

শোনা গিয়েছিল আপনি দেশ ছেড়ে যাবেন।
নওশাবা: পরিবারসহ আমার অনেক আত্মীয় আছেন যারা বিদেশে থাকেন। তারা আমাকে সেখানে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু আমার জিদ ছিল। আমি দেশ ছাড়ব না। আমি জানতাম, এমন দিন আসবে আমি বলতে পারব- আমি দোষ ছিল না, আমি তো চোর, রাষ্ট্রোদ্রোহী বা রাজাকার নই। আমি বাংলাদেশি, আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। আমি নিতান্তই একজন শিল্পী। সেই দিনটা চলে এসেছে।

জেল জীবন কাটিয়ে অভিনয়ে ফেরার চ্যালেঞ্জ?
নওশাবা: আমি আমার দুঃখটাকে বিক্রি করতে চাইনি। সেই সময়ে আমার কোনো কাজ ছিল না। কেউ কাজেও নিতেন না। এটা আমার ভীষণ কষ্টের অভিজ্ঞতা। আমি একাই লড়াই করে গেছি। কারও করুণা চাইনি। আমার মেধা থাকলে কাজ পাব, না থাকলে পাব না। কিন্তু কোনো এক সময় আমি শিক্ষার্থীদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম বলে আমার কেরিয়ার ধংস নামবে। আমাকে কালো তালিকায় রাখা হবে এটা মানতে পারব না। এমনটা আর কারো সঙ্গে যেন না হয়।

নতুন সরকারের কাছে কী চান?

নওশাবা: দেশটা এখন অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া আমাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সবকিছু যেন মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে থাকে।

অভিনেত্রী হিসেবে জনগণের করণীয় সম্পর্কে কিছু বলতে চান?
নওশাবা: শিক্ষার্থীরা কিন্তু আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তারা আমাদের রাস্তায় লাইন ধরে চলতে শিখিয়েছে। ক্ষমতার দাম্ভিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে শিখিয়েছে। ‘আপনি জানেন আমি কে?’- এইটা যেন আমাদের মধ্যে আর কাজ না করে। আমি কে, এটা বলা যাবে না। আমরা হতে হবে। অন্যকে কিছু বলার আগে নিজের দিকে আগে আঙুল তুলতে হবে। নিজেরা ঠিক থাকলে দেশে এগিয়ে যাবে।

নতুন কোনো কাজ করছেন?
নওশাবা: নতুন একটি সিনেমায় কাজ শুরু করেছি। এই মুহূর্তে নাম বলা নিষেধ। আগামী মাসে শুটিং হবে। এছাড়া আরও একটি সিনেমার শুটিংয়ের কিছু অংশ বাকি আছে। দ্রুতই শেষ হবে।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com