মানুষের জীবনের এক আশ্চর্য বাস্তবতা! প্রত্যেক মানুষেরই স্মৃতির পাতায় জমে থাকে বলা না বলা অনেক কথা। আর যৌবনের তারুণ্য দীপ্ত মধুময় সময়ের স্মৃতি সবাইকে করে আবেগ তাড়িত। এভাবেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহারের সবুজ চত্বরে কাটানো সময়ের স্মৃতির ঝাঁপি খুলেন ওয়াশিংটন ডিসির প্রবাসীরা।
১০ই ডিসেম্বর (শনিবার) ‘মনের আবেগে ভাসায় ভেলা; মিলবে হেথায়, মিলন মেলায়’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয় ওয়াশিংটনে সাবেক রাবিয়ানদের পিঠা উৎসব। ঢাকা ক্লাব ভর্জিনিয়ায় মাগরিবের নামাজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ইমামতি করেন, রাবির ইসলামিক স্ট্যাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মুহাম্মদ মনজুরুল আলম। পিঠা উৎসব শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন ওয়াশিংটনডিসি রাবি এলামনাই প্রতিষ্ঠাতা এস এম জাহিদুর রহমানের কন্যা জাফরা ফারিয়াল রহমান।
সমন্বিত কন্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করেন- অসীম রানা ও ইয়াসমিন আরা রুপালির নেতৃত্বে লামিয়া আহমেদ, জলি জ্জামান, নুরাইয়া হান্নান,অপ্সরা,অবন্তি, হ্রদি সহ এলামনাই সদস্যরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, নজরুল ইসলাম এবং সাংবাদিক এস এম জাহিদুর রহমান।
পিঠা উৎসব সকল কিছুর কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল হরেক রকমের পিঠা। বাঙালির ঐতিহ্যপূর্ণ সুস্বাদু পিঠা উৎসবে বেশ আগ্রহ নিয়েই অংশগ্রহণ করেন রাবির সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সাময়িক সময়ের জন্য দেশীয় কৃষ্টিকালচারের স্বাদ আর ব্যতিক্রমধর্মী সাংস্কৃতিক আয়োজন নির্মল আনন্দের খোরাক যোগায় প্রাবাসীদের।
যান্ত্রিক ও ব্যস্ত জীবনের মাঝে দেশি আমেজে একটু সময় কাটানো এবং বাংলাদেশি ঐতিহ্য প্রবাসীদের মাঝে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই এ আয়োজন করা হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।অংশগ্রহনকারী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হরেক রকম পিঠা-পুলি বা পায়েশ খেয়ে একদিকে যেমন তৃপ্তি পান, অন্যদিকে বাঙ্গালীর শীতকালীন পিঠা খাওয়ার ঐতিহ্যবাহী উৎসবের মাঝে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন অপার মহিমায়।
একই সাথে মেতে উঠেন ছবি তুলতে। ক্যাম্পাসের শিক্ষক, প্রাক্তন বন্ধু, বড় ভাই-বোন সকলে মিলে এক চিলতি স্মৃতি ধরে রাখতেও ব্যস্ত হয়ে উঠেন। স্মতিময় মুহুর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করেন, মোজাম্মেল হোসাইন (ঝিলু), মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
প্রায় শতাধিক সাবেক রাবিয়ানরা পিঠা উৎসবে মিলিত হয়, সংক্ষিপ্ত পরিচিতির মাধ্যমে করা হয় রেজিষ্ট্রেশনও। পরে শুরু হয় শিক্ষক এবং এলামনাই সদস্যদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পর্ব। প্রথম পর্বে শিক্ষকদের পরিচয় করে দেন জাহিদুর রহমান। দ্বিতীয় পর্বে এলামনাইদের পরিচয় করিয়ে দেন নজরুল ইসলাম।
পরিচয় পর্ব শেষে ওয়াশিংটন ডিসি রাবি এলামনাই প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেন- এস এম জাহিদুর রহমান। পথচলার শুরুতে যারা ছিল- তাদের পরিচয় করিয়ে দেন। তারা হলেন- ফাতিমা সিদ্দিক, মুহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম, জেসমিন কবির, কামরুল আনোয়ার(মামুন),মোঃজাহিদুর রহমান, কাজি ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন।
তবে, শারিরীক অসুস্থতার কারনে জহরুল ইসলাম এবং আবু জাফর অনুপস্থিত ছিলেন।
পিঠা উৎসবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেসমিন কবির , আজিজুর রহমান, মুহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম।
পিঠা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন- রাবি এলামনাই এর উপদেষ্টা – রাবির সাবেক রেজিস্টার ড. মোহাম্মদ এন্তাজুল হক, ড. আশরাফ, ড. মুশফিকুর রশিদ এবং ইঞ্জিনিয়ার ড. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
পরিচিতির পরে ছিল রাতের খাবারের আয়োজন। এরপর কাজী ওয়াহিদুজ্জামান স্বপনের জাতীয় কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন- কাজী ওহিদুজ্জামান স্বপন। গান পরিবেশনা করেন ইয়াসমিন আরা রুপালি ও ওয়াশিংটন ডিসির জনপ্রিয় শিল্পী অসিম রানা। পরে শিল্পী অসিম রানাকে রাবি এলামনাই এর পক্ষ থেকে পিঠা উৎসবের মাগ এবং ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পিঠা উৎসব সফল করতে যারা কাজ করেছেন, তারা হলেন- জেসমিন কবির, আজিমা আজমল, লামিয়া আহমেদ, ড. ফরিদা ইয়াসমিন, মুহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম , আইভি হাসান, আজিজুর রহমান মৃধা (আজিজ), নজরুল ইসলাম, কামরুল আনয়ার (মামুন), দেওয়ান মনিরুল হনিউজবিডিইউএসক হিমু, কাজী ওয়াহিদুজ্জামান স্বপন, মো: জাহিদ মোতালিব (শুভ), ড. আব্দুল হাই সিদ্দিক (সুমন) ও এস এম জাহিদুর রহমান।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে কষ্ট করে পিঠা বানিয়ে আনা ও অনুষ্ঠান সফল করায় সবাইকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। উল্লেখ্য ওয়াশিংটনে রাবি এলামনাই ২৩ শে অক্টোবর ২০২১ সালে পিকনিকের মাধ্যমে প্রবাসের বুকে পথচলা শুরু করে। ( নিউজবিডিইউএস-থেকে)