নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৫ মে ২০২৪ | প্রিন্ট | 317 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
হোম কেয়ার ব্যবসায়ীদের নজরে নিউইয়র্কের মিডিয়া ও সংবাদপত্র শিল্প। তারা একের পর এক পত্রিকা কিংবা ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া প্রকাশের দিকে পা বাড়াচ্ছেন। অনেকে বলছেন, হোম কেয়ার ব্যবসায়ীরা মিডিয়া নিয়ে এক ধরনের ‘ইগো’তে ভুগছেন। তা নিয়ে প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছে। একজন প্রবীন সাংবাদিক বলেন, ব্যবসায়ীদের হাতে সংবাদ পত্র চলে যাওয়ার নীতিবাচক দিক রয়েছে। তারা পত্রিকার নীতিমালা ঠিক করতে চাইবেন তাদের দৃষ্টিকোন থেকে। সাংবাদিকতা তাদের কাছে গৌন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। ইতিবাচক দিক হলো, সংবাদ কর্মি যারা সেখানে কাজ করবেন, তারা নিশ্চয়ই নিয়মিত বেতনটি পাবেন। তাদের বেতনের পরিমানটি সন্মানজনক হতে পারে। অনেক সাংবাদিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। তাই ভালো-মন্দ দুটি দিকই বিরাজ করছে। বিশিষ্ঠ হোম কেয়ার ব্যবসায়ী , কমিউনিটি একটিভিস্ট ও লায়ন্স প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ গেল বছর বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক আজকাল পত্রিকাটি কিনে নিয়েছেন। তিনি নিজেই সম্পাদক হিসেবে তা প্রকাশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার সাথে রয়েছেন পেশাদার কয়েক জন চৌকষ সাংবাদিক। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরেই শাহ নেওয়াজ পত্রিকা প্রকাশের চিন্তা করছিলেন। সাপ্তাহিক আজকালের সাবেক প্রকাশক ও সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ জিকু পত্রিকাটি বিক্রির প্রায় ১ বছর পরই নিউইয়র্ক সময় নামে আরেকটি পত্রিকা প্রকাশ করেছেন।
কমিউনিটির পরিচিত মুখ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.আবু জাফর মাহমুদ। আর্ন্তজাতিক বিষয়ের ওপর তিনি সিদ্ধহস্ত ও একজন গবেষক। বাংলা সিডিপ্যাপ ও আলেগ্রা হোম কেয়ার নামে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। ইতোমধ্যেই জাফর মাহমুদের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলাদেশ ও ইংরেজি দ্যা বে ওয়েভ ’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। সম্পাদক ও প্রকাশক স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মনজু। অবশ্য আনোয়ার হোসেন মনজু ডা. ওয়াজেদের নেতৃত্বাধীন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ পত্রিকারও উপদেষ্টা সম্পাদক। ‘জয় বাংলাদেশ ও ইংরেজি দ্যা বে ওয়েভ ’ মাসিক পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক আদিত্য শাহিন। ট্রায়ালে রয়েছে ‘জয় বাংলাদেশ’ টেলিভিশন। আশা হোম কেয়ারের কর্ণধার আকাশ রহমান। কমিউনিটিতে উদীয়মান ব্যবসায়িক তারকা। তার নেতৃত্বে সাপ্তাহিক সাদাকালো নতুন কলেবরে বের হচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত হলেও অনিবার্য কারনে তা স্থগিত ছিল। ৫ এপ্রিল ২০২৪ থেকে নতুন করে তা প্রকাশিত হচ্ছে। সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেছেন ঢাকার সুপরিচিত ও সিনিয়র সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার । জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির স্থায়ী সদস্য তিনি। সাদাকালোর প্রধান সম্পাদক আশা হোম কেয়ারের কর্ণধার আকাশ রহমান ও উপদেষ্টা সম্পাদক এশা রহমান। আকাশ রহমানের নেতৃত্বে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ‘ এ টিভি’ও সোশাল মিডিয়ায় রয়েছে। নির্বাহী সম্পাদক হিসেব প্রিন্টার্স লাইনে রয়েছেন মোহাম্মদ কাশেম। কাশেম নর্থবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক। সাদাকালোর সাবেক সম্পাদক জাহিদ রহমানের নেতৃত্বে প্রকাশিত হচ্ছে ‘হ্যালো নিউইয়র্ক’। তিনি ‘নিউইয়র্ক সিনিয়র এডাল্ট ডেকেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা। ৩১ মে ‘সাপ্তাহিক খবর’ নামের একটি পত্রিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হবে। যার প্রকাশক ও প্রেসিডেন্ট প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বেলায়েত হোসেন বেলাল। উল্লেখ্য তিনি নিউইয়র্ক সময় পত্রিকার সম্পাদক আইবিটিভি’র চেয়ারম্যান জাকারিয়া মাসুদ জিকুর ছোট ভাই। সাংবাদিক ফরিদ আলম ‘সাপ্তাহিক খবর’ এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ। তিনি ইমিগ্রান্ট হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট। ‘প্রথম দেশ’ নামে একটি অনলাইন প্রকাশের প্রস্তুতি নিয়েছেন। সাথে থাকছে ‘জি টিভি’। প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে গিয়াস আহমেদ বলেন,কোন ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার লক্ষ্য নিয়ে মিডিয়ায় নামছি না। কমিউনিটির ও মূলধারার তথ্য আরও ব্যাপকভাবে প্রকাশ এবং প্রচারের জন্যই পত্রিকা ও টিভি নিয়ে আসছি। কারও সাথে বৈরিতা নয়। শত ফুল ফুটতে দাও নীতিতে মিডিয়া করছি। পত্রিকাটির অফিস জ্যাকসন হ্টাসের ৭৪ স্ট্রিটে অবস্থিত হবে। তবে সাংবাদিক কারা যোগদান করছেন তা তিনি প্রকাশ করেননি।
কমিউনিটিতে পরিচিত ও সামাজিকভাবে সক্রিয় আসেফ বারী টুটুল। বারী হোম কেয়ারের কর্ণধার। নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামসের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনিও একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। প্রতিবেদকের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আপনি যা শুনেছেন তা সত্য। আমি একটি বাংলা সাপ্তহিক প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। সহসাই তা কমিউনিটির মানুষের হাতে পৌঁছবে। পত্রিকাটির নাম চু’ড়ান্ত হয়নি। তবে দ্রুত ঠিক করে সবাইকে জানানো হবে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র প্রতিবেদককে বলেন, লায়ন্সের সাবেক সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পত্রিকাটির সাথে জড়িত থাকছেন। তবে সাংবাদিক হিসেবে কারা যোগদান করছেন তা জানা যায় নি। তবে জ্বনাব বারী এ ব্যাপারে অনেকের সাথে কথা বলছেন। কমিউনিটিতে মিডিয়া সচেতন একজন প্রবাসী নিউইয়র্ক কাগজকে বলেন, আসেফ বারী পুরনো একটি পত্রিকা কিনতে চেয়েছিলেন। দামও উঠেছিল হাফ মিলিয়নের কাছাকাছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবে রুপ নেয়নি। বারী এখন নতুন নামে পত্রিকা প্রকাশের পথে পা বাড়াচ্ছেন।
প্রবাসে পুরনো ও বহুল প্রচারিত পত্রিকা সাপ্তাহিক ঠিকানা। প্রায় ৩ দশক ধরে পত্রিকাটি কমিউনিটি বির্নিমানে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসছে। গত শুক্রবার হঠাৎ করেই সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা ঝড় উঠে পত্রিকাটি নিয়ে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস এলাকা ও বই মেলাতে অনেককেই বলতে শোনা যায়, ঠিকানা নাকি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। একজন বড় ব্যবসায়ী তা কিনে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে টেলিফোনে ঠিকানার সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট এম এম শাহিনের দৃষ্টি আর্কষন করেন প্রতিবেদক। জ্বনাব শাহিন জবাবে বলেন, এটি নেহায়েতই গুজব। ঠিকানা বিক্রির কোন সুযোগ নেই। প্রশ্নই উঠে না।
কমিউনিটিতে ডজনের ওপরও বেশি সাপ্তাহিক নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে সাপ্তাহিক আজকাল, সাপ্তাহিক ঠিকানা, পরিচয়, সাপ্তাহিক বাঙ্গালী, সাপ্তাহিক দেশ, বাংলাপত্রিকা, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ, সাপ্তাহিক প্রথম আলো, সাপ্তাহিক প্রবাস, সাপ্তাহিক নবযুগ, জন্মভূমি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন। অনিয়মিত রয়েছে সাপ্তাহিক সময় ও মুক্তকন্ঠ। অনলাইন পত্রিকার মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্ক কাগজ, হক কথা, সাপ্তাহিক যুগান্তর, আওয়াজ বিডি,খবর.কম,ইউএসবিডি নিউইয়র্ক, বাংলাখবর ও নিউইয়র্ক প্রতিদিন। টাইম টেলিভিশন ও টিবিএন দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটি মিডিয়ায় সুনামের সাথে কাজ করে আসছে।
Posted ১১:০২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam