রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

দুবাইয়ে পাশাপাশি মসজিদ-গির্জা

প্রবাস ডেস্ক   |   রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   104 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

দুবাইয়ে পাশাপাশি মসজিদ-গির্জা

সংযুক্ত আরব আমিরাতে একশ মিটারেরও কম দূরত্বের মধ্যে দু’টি ধর্মীয় উপাসনালয় দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রতির উদাহরণ তৈরি করে রেখেছে। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ের অউদ মেথা এলাকায় পাশাপাশি রয়েছে মুসলমান ধর্মালম্বীদের প্রার্থনা কেন্দ্র মসজিদ ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় চার্চ বা গির্জা।

প্রায় ৩৫ বছর আগে দুবাইয়ে ‘সেন্ট মেরি’স ক্যাথলিক চার্চ নামের এই উপাসনালয় যাত্রা শুরু করে। যদিও এর আগে ১৯৬৭ সালের দিকে স্বল্প পরিসরে এখানে তৈরি গির্জায় উপাসনা চলতো। এই গির্জা নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেন দুবাইয়ের তৎকালীন শাসক শেখ রশিদ বিন সাইদ আল মাকতুম। বর্তমানে এই ক্যাথলিক চার্চ সাড়ে তিন লাখের বেশি প্যারিশিয়ান নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর অবস্থান ধরে রেখেছে। গির্জাটির মাত্র ৮৬ মিটারের মধ্যেই রয়েছে ‘আল জামিয়া’ নামে অউদ মেথা মসজিদ। এটি স্থানীয়দের কাছে পাকিস্তানি মসজিদ নামেও পরিচিত। দুবাইয়ের পাকিস্তান অ্যাডুকেশন একাডেমিতে নির্মিত এই মসজিদটি ২০০৫ সালে উদ্বোধন করা হয়। এটি উদ্বোধন করেন পাকিস্তানের আউকাফ ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মদ লাজাজ উল হক। এরপর থেকে পাশাপাশি দুটো উপাসনালয়ে নিয়মিত চলছে ধর্মীয় প্রার্থনা।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে মুসলমান ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ উপাসনায় ব্যস্ত থাকেন। অউথ মেথার মূল সড়ক, বাসস্টেশন ও মাত্র তিন’শ মিটার মধ্যে মেট্রো স্টেশন থাকায় দূরদুরান্ত থেকেও এখানে প্রার্থনা করতে প্রতিদিন ভিড় করেন হাজারো মানুষ। ধর্মীয় বিশেষ দিবস, আচারণ-অনুষ্ঠানগুলোতে অতিরিক্ত ভিড় হলেও কোনো অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে না। বরং নিজ নিজ প্রার্থনা শেষে উপাসনালয় ত্যাগ করেন সবাই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় এই জামিয়া মসজিদে শতাধিক মুসল্লির জন্য ইফতারের আয়োজন চলছে। একই সময় ক্যাথলিক চার্চে চলছে উপাসনা, মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা। রাতে এশা ও তারাবির নামাজের সময়ও ছিল একই চিত্র। দুটো উপাসনালয়ে বাইরে একটি সরু রাস্তা রয়েছে। প্রার্থনা চলাকালীন সময় যেখানে গাড়ি পাকিং ছিল পরিপূর্ণ। মানুষের ভিড়ও ছিল প্রচুর। কেউ প্রার্থনার জন্য ভেতরে প্রবেশ করছেন, কেউবা উপাসনা শেষে বের হয়ে আসছেন।

গির্জায় সপ্তাহব্যাপী ইংরেজি, আরবি, ফ্রেঞ্চ, কোঙ্কানি, মালায়ালম, সিংহলি, সোয়াহিলি, তামিল, তাগালগ ও উর্দু ভাষায় প্রার্থনা করা হয়। মসজিদে প্রার্থনায়ও রয়েছে আরবি ও উর্দু ভাষার ব্যবহার।

এই দুই প্রার্থনাকেন্দ্র ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে দুটো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একটি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ (প্রাইভেট) স্কুল ও অন্যটি ‘সেন্ট মেরি’স ক্যাথলিক হাই স্কুল। মুখোমুখি দুটো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও কার্যক্রম চলছে নিয়মিত। এছাড়াও কয়েকশ মিটারের মধ্যে সড়কের দুই পাশে রয়েছে কয়েকটি দেশের সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল। বিশেষ করে উপাসনালয়ের পাশেই রয়েছে শেখ রশিদ হাসপাতাল, দুবাই মিডিয়ার কার্যালয়, হলি ট্রিনিটি চার্চ, ইরানিয়ান ক্লাব, সুদানি ক্লাব, জর্দান সোশ্যাল ক্লাব, ইন্ডিয়ান ক্লাব ও আল রশিদ আল সালেহ স্কুলসহ বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ যেন নানা দেশ ও ধর্মের সম্প্রতির বন্ধনে আবদ্ধ একটি পরিকল্পিত নগর।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com