রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমিরাতে বাঙালি নারীদের অগ্রযাত্রা

প্রবাস ডেস্ক   |   বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   182 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আমিরাতে বাঙালি নারীদের অগ্রযাত্রা

দেশের প্রবাসীদের আয়ে পুরুষের পাশাপাশি অংশগ্রহণ বাড়ছে নারীদের। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য মতে, গত বছর কাজের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন প্রায় ৭৬ হাজারের বেশি নারীকর্মী। ভিন্ন ভিন্ন কাজের পাশাপাশি এদের অনেকে হয়ে উঠছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।

শুধু মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) গত ২০ বছরে সাধারণ নারীকর্মী গেছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৪৩ জন। এদের অনেকে দেশে ফিরে এলেও একটি বড় অংশই সেখানে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি নারীদের আরও এগিয়ে দিতে নেওয়া হচ্ছে নানামুখী উদ্যোগ। নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার এমন একটি আয়োজনও রেখেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট লেডিস গ্রুপ।

আরব আমিরাতের সাতটি প্রদেশ ঘুরে দেখা গেছে, সাধারণ নারীকর্মী থেকে পর্যায়ক্রমে ব্যবসায়িক মালিকানা গ্রহণ করে সফলতা পেয়েছেন বহু নারী। কেউ কেউ নতুনভাবে হচ্ছেন উদ্যোক্তা। কেউ কাজ করছেন শিক্ষক ও চিকিৎসক হিসেবে। স্বল্প দৈর্ঘ্য রয়েছে পেশাজীবীর তালিকা। আবার গৃহিণীরাও অনলাইন ব্যবহার করে বাড়তি আয়ের পথ তৈরি করে নিয়েছেন ইতোমধ্যে।

২০০৩ সালে সাধারণ কর্মী হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি দেন বরিশাল বাকেরগঞ্জের মেয়ে শেফালী আক্তার আঁখি। ২০ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন দেশটিতে তৈরি পোশাক শিল্পের একজন বড় উদ্যোক্তা। ৬টি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করছেন তার অধীনে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরান, ওমান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, মিশরসহ বেশ কিছু দেশে রপ্তানি হয় তার প্রতিষ্ঠানে তৈরিকৃত পণ্য।

পনেরো বছর আগে ইউএইতে পা রাখেন সাবিনা সুলতানা। গেল একযুগ ধরে হস্তশিল্প ও তৈরি পোশাকের ব্যবসা পরিচালনা করছেন এই নারী। গড়ে তুলেছেন নারীদের জন্য একটি আলাদা প্লাটফর্ম। যেখানে রয়েছেন প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন নারী। যারা দেশটিতে বছরে অন্তত ছয়টি হস্তশিল্প ও তৈরি পোশাকের মেলার আয়োজন করে থাকেন। তাদের দেখাদেখি এখন স্বল্প বিনিয়োগে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায় ঝুঁকছেন অনেকেই।

মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের মেয়ে পারভিন জলি দেশটিতে নিয়েছেন অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। বাংলাদেশিদের জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললেও এখন তার প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ক্রেতা ভারতীয়, পাকিস্তানিসহ অন্য দেশের লোকজন।

দুবাইয়ের দ্য সেন্ট্রাল স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা শেখ কানিজ এ ফেরদৌস। প্রায় পনেরো বছর ধরে দেশটিতে বাংলা বিষয়ে পাঠদান করছেন তিনি। শিক্ষকতা পেশায় তার মতো বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নারী নিয়োজিত আছেন। যারা দেশটিতে বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও সিবিএসই বোর্ডের অধীনস্থ প্রায় ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন।

প্রায় ৪০ বছরের মতো দেশটিতে বসবাস করছেন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী ইয়াসমিন ইসলাম মেরুনা। তিনি বলেন, প্রথমদিকে নারীদের এত কর্মকাণ্ড আমরা দেখিনি। কয়েকজন শিল্পী বাদে খুব বেশি নারীর অংশগ্রহণ ছিল না। তবে গত কয়েক বছরে নারীরা ব্যবসায়ী হিসেবেও সফলতা পাচ্ছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। এমনকি আমার মেয়েরাও পড়ালেখা শেষ করে এখানে চাকরি করছে।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট লেডিস গ্রুপের সভাপতি আবিদা হোসেন বলেন, আমিরাতে এখন বাংলাদেশি নারীরা প্রকৌশলী, ডাক্তার, ব্যবসায়ী, শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন। নারী উদ্যোক্তারাও খুব ভাল করছেন এখানে। প্রবাসী নারীদের এগিয়ে নিতে আমরা ইতোমধ্যে ভিন্ন ভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছি। নারী দিবস উপলক্ষে আলাদা কর্মসূচি রাখা হয়েছে। যেখানে প্রবাসী নারীদের এই অগ্রযাত্রা আরও বেশি প্রসারিত করতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১:৩৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ মার্চ ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com