মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টরন্টোতে লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাসের ৬০তম জন্মদিন উদযাপন

প্রবাস ডেস্ক   |   বুধবার, ০৬ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   30 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

টরন্টোতে লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাসের ৬০তম জন্মদিন উদযাপন

গত ৩ মার্চ টরন্টোর সেইন্ট পল ইউনাইটেড চার্চে বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সুব্রত কুমার দাসের ৬০তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। সুব্রতকে কেন্দ্র করে রচিত দুই গ্রন্থের পাঠ-উন্মোচনও হয় সেই আয়োজনে। অনেক বিশিষ্টজনের মধ্যে এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন টরন্টো পোয়েট লরিয়েট অধ্যাপক লিলিয়ান অ্যালেন, স্কারবোরো সাউথ-ওয়েস্টের কাউন্সিলর পার্থি ক্যান্ডিভেল এবং বিচেস-ইস্ট ইয়র্কের সিটি কাউন্সিলর ব্রাড ব্রাডফোর্ড। প্রার্থনা-পর্ব, কথা-পর্ব এবং আনন্দ-পর্বে বিভক্ত এই আয়োজনের সভাপতিত্ব করেন মুক্তচিন্তক আকবর হোসেন। বরেণ্য উপস্থাপক শেখর ই গোমেজের পরিচালনায় অংশ নেন নন্দিত শিল্পীরা।

গবেষক সুজিত কুসুম পালের সম্পাদনায় ঢাকার মূর্ধন্য প্রকাশনী থেকে সাম্প্রতিক বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘হীরকজয়ন্তী: সুব্রত কুমার দাস’ এবং ‘Subrata Kumar Das: A Wonder Boy of Intellect’।

অধ্যাপক লিলিয়ান অ্যালেন তার ভাষণে টরন্টো সাহিত্যাঙ্গনে সুব্রতের অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, তার তিন দশকের কর্মক্ষেত্র ওকাড বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়েটিভ রাইটিঙের জন্যে তার নামে রয়েছে একটি পুরস্কার। লিলিয়ান আশা প্রকাশ করেন, সেই পুরস্কারটি তিনি সুব্রত কুমার দাসের নামে করাতে চান। অথবা তিনি সুব্রতের নামে নতুন একটি পুরস্কার প্রবর্তনের ভাবনাও প্রকাশ করেন।

স্কারবোরো সাউথ-ওয়েস্টের কাউন্সিলর পার্থি ক্যান্ডিভেল এবং বিচেস-ইস্ট ইয়র্কের সিটি কাউন্সিলর ব্রাড ব্রাডফোর্ড মঞ্চে সুব্রতর অবদান নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। সুব্রতর ষাট বছরের জীবনকে বাংলা সাহিত্য এবং বাঙালি সংস্কৃতির জন্যে নিবেদিত বলে উল্লেখ করেন পার্থি। টরন্টোর সাহিত্যাঙ্গন এবং টরন্টোর বাঙালি সমাজে সুব্রতর উল্লেখযোগ্য অবদানকে গুরুত্বপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেন ব্রাড।

সভাপতির ভাষণে লেখক আকবর হোসেন মনুষ্য জীবনে সাধিত কর্মকে কীভাবে মহিমান্বিত করা যায় সেই বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি ব্যক্তিজীবনে বয়ঃকনিষ্ঠ সুব্রতকে ‘গুরুদেব’ সম্ভাষণ করেন সেটি উল্লেখ করে বলেন যখনই তিনি প্রশ্নের মুখে পড়েন, তার আশ্রয় হন সুব্রত কুমার দাস।

সুব্রত কুমার দাসকে নিয়ে প্রকাশিত দুই বইয়ের সম্পাদক সুজিত কুসুম পাল কানাডার সাথে বাংলাদেশের এবং কানাডীয় সাহিত্যের সঙ্গে বাঙালিদের সংযোগের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কানাডার সাহিত্যের মূলধারায় বাঙালিদের অংশগ্রহণে সুব্রতের নেতৃত্বকে প্রশংসা করেন।

জানা যায়, বিপুলায়তন এই গ্রন্থের প্রকাশব্যয় বহনে প্রকাশক মূর্ধন্যকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন টরন্টোর অগ্রগণ্য ইমিগ্রেশন লইয়ার ব্যারিস্টার সূর্য চক্রবর্তী ও তার প্রতিষ্ঠান সূর্য ল। সূর্য চক্রবর্তী তার বক্তব্যে সহযোগিতা করতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন। কথা-পর্বে আরও অংশ নেন তরুণ প্রতিভা অধ্যায় অধিকারী। নানান কাজে ব্যস্ত থাকায় বিচেস-ইস্ট ইয়র্ক এলাকার এমপি নাথানিয়েল এরিস্কিন স্মিথ নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলেও প্রতিনিধির মাধ্যমে স্ক্রল পাঠান সুব্রতর জন্যে।

কথা-পর্বের শুরুতে পিয়ানোতে সুর তোলেন বিশিষ্ট শিল্পী সোনালী রায়। তার সুর মুগ্ধতায় ভরিয়ে দেয় সমবেত উপস্থিতিকে। অন্য আরও যে দুই নন্দিত শিল্পী প্রার্থনা পর্বে অংশ নেন, তারা হলেন- অরুনাভ ভট্টাচার্য এবং মমতাজ মমতা। অরুনাভ ভট্টাচার্য পরিবেশন করেন দুই রবীন্দ্র সঙ্গীত ‘কী গাব আমি কী শোনাব’ এবং ‘চাঁদের হাসি বাধ ভেঙেছে’। মমতাজ মমতা পরিবেশন করেন ‘অধরা মাধুরি ধরেছি ছন্দবন্ধনে এবং ‘এই তো তোমার আলোকধেনূ’।

সমাপনী পর্বে সুরের লহরী তোলেন দুই জনপ্রিয় শিল্পী সুমাইয়া মোয়াজ্জেম এবং অপূর্ব রায়। ডুয়েট এবং সলো বাংলা ও হিন্দি গান পরিবেশন করেন তারা দুজন।

নির্ধারিত সময় বিকেল ৬টায় উদ্বোধনী সঙ্গীতে অংশ নেন শুভম চৌধুরী এবং ঋতুপর্ণা মিত্র চৌধুরী। সরস্বতী স্তোত্রের মাধ্যমে বিদ্যাদেবীর বন্দনা করে তারা দুজনে রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্বের গান ‘আকাশ ভরা সূর্য-তারা, বিশ্ব ভরা প্রাণ,তাহারই মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান’ পরিবেশন করেন। এরপর এই দুই শিল্পী আলাদা আলাদাভাবে পরিবেশন করেন ‘একটুকু ছোঁওয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি’ এবং ‘আমার হৃদয় তোমার আপন হাতে দোলে’।

সভাপতির বক্তব্যের আগে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয় সুব্রত কুমার দাস, তার স্ত্রী নীলিমা দত্ত এবং দুই বইয়ের লেখকদের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে। উপস্থিত ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক সৈকত রুশদী, অধ্যাপক ও চিকিৎসক রেশমা মজুমদার শম্পা, জনপ্রিয় কবি ও সংগঠক দেলওয়ার এলাহী, বিশিষ্ট সিপিএ অসীম ভৌমিক, লেখক ও উপস্থাপক তাসমিনা খান, কবি, চিত্রী ও উপস্থাপক দেবাঞ্জনা মুখার্জি ভৌমিক, কবি ও উপস্থাপক চয়ন দাস, অনুবাদক শ্রেয়সী বোস, ঔপন্যাসিক জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন, অনুবাদক ও সংস্কৃতিকর্মী মম কাজী, লেখক রেখা পাঠক, সংস্কৃতিকর্মী সামিনা চৌধুরী, কবি ও ছোটগল্পকার রোকসানা পারভীন, কবি জান্নাতুল নাইম প্রমুখ।

সুব্রতকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পিয়ানোতে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানের সুর তোলেন সোনালী রায়। উপস্থিত সুধীজনেরা কণ্ঠ মেলান সেই সুরে। হলের সকল আলো নিভিয়ে দিয়ে জ্বলে ওঠে হাতের মোবাইলের আলো। এক স্বপ্নময় পরিবেশে জন্মদিনের আয়োজনর মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে।

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৬ মার্চ ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com