নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 198 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
অন্তিম শয়ানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রিয় মুখ আতিকুর রহমান ইউসুফজাই সালু। গত বুধবার ৬ ডিসেম্বর বিকেল আড়াইটায় নিউজার্সির লরেল গ্রোভ সিমিটারিতে তাকে সমাহিত করা হয়। জ্বনাব সালু ৫ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভোরে নিউজার্সির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । দীর্ঘদিন ধরে তিনি মরণব্যধি ক্যানসারে ভূগছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে নিউউইয়র্ক, নিউজার্সি ও মেরিল্যান্ড সহ প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাটের দশকের ডাকসাইটে ছাত্রনেতা, মওলানা ভাসানীর সহচর আতিকুর রহমান সালু বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারন সম্পাদক, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান ও ফোবানা’র সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
আতিকুর রহমান সালুর প্রথম নামাজে জানাজা নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে (জেএমসি) গত মঙ্গলবার বাদ মাগরিব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জেএমসি’র ইমাম ও খতিব মির্জা আবু জাফর বেগ। জানাজার আগে মরহুম সালু স্মরণে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও জেএমসি’র সাবেক সভাপতি ডা. এম এম বিল্লাহ, জেএমসি পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান, সৈয়দ টিপু সুলতান ও হামিদ রেজা খান। বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন খান মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি জানাজায় অংশ নেন। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক মোহাম্মদ উল্লাহ, আজকাল সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলা সিডিপ্যাপ হোম কেয়ার প্রধান ড. আবু জাফর মাহমুদ,বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন হাওলাদার, কমিউনিটি একটিভিস্ট ও বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, সাংবাদিক মইনুদ্দিন নাসের, বাংলাদেশ পত্রিকার উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মনজু, সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, জামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার,সাংবাদিক তাসের খান মাহমুদ, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক ইমরান আনসারি, সাংবাদিক সালাহ উদ্দীন আহমেদ ও খোন্দকার ফরহাদ প্রমুখ। বুধবার দুপুরে নিউজার্সির প্যাটারসনস্থ জালালাবাদ জামে মসজিদে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পরপরই তাকে নিউজার্সির লরেল গ্রোভ সিমিটারিতে সমাহিত করা হয়। এ সময় সেখানে অন্যান্যের মধ্যে গিয়াস আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ কবরস্থানেই সমাহিত হয়েছিল সালুর কন্যা আনিকা ইউসুফ জাই। ২০০৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে আনিকা মেরিল্যান্ডে এক সড়ক র্দুঘটনায় মারা যান। মেয়ের সেমিটারিতে সমাহিত হলেন সালু। তার আরেক মেয়ে স্বামীসহ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেন। একমাত্র পুত্র সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন।
আতিকুর রহমান সালুর জন্ম টাঙ্গাইলে ১৯৪৮সালে। তিনি ষাট দশকে টাঙ্গাইল জেলার করটিয়া কলেজ (বর্তমানে সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ) ছাত্র সংসদের এজিএস নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন। । ১৯৬২ থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী কালেও প্রতিটি ছাত্র আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন। কয়েকবার কারাবরনও করেছেন। অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পরবর্তীকালে সংগঠনের (মেনন গ্রুপ) সাংগঠনিক সম্পাদক, বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির পদ অলংকৃত করেন।
১৯৭০ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে লাখো মানুষের সমাবেশে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েমের প্রস্তাব পাঠ করেছিলেন আতিকুর রহমান সালু। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সময়ে ভারতে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি করে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটিরও কেন্দ্রীয় সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৬ সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চে অংশ গ্রহণ করেন।
আতিকুর রহমান সালুর মৃত্যুতে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন হাওলাদার, ভাসানী ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলী ইমাম শিকদার ও সাধারন সম্পাদক মইনুদ্দিন নাসের, ফেবানার চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ও এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি কাজী আজম, ফোবানার (একাংশ) চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, আইএফসি নিইইয়র্ক মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি বাংলাদেশ সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সাধারন সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারি, প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার পৃথক পৃথক বিবৃতিতে আতিকুর রহমান সালুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
Posted ৩:১১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam