শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট ২৫-এ প্রার্থী ফাতিমা বারইয়াব

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   206 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট ২৫-এ প্রার্থী ফাতিমা বারইয়াব

ডিস্ট্রিক্ট ২৫-এ প্রার্থী ফাতিমা বারইয়াব

আগামী ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের ডিস্ট্রিক্ট ২৫ (জ্যাকসন হাইটস ও এলমহার্স্ট) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত আমেরিকান ফাতিমা বারইয়াব। তিনি আশা করছেন যে, তার নির্বাচনী এলাকায় বসবাসরত পাকিস্তানি ও বাংলাদেশিসহ পুরো এশিয়ান ইমিগ্রান্ট কমিউনিটি তাকে বিজয়ী করে সিটি কাউন্সিলে ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির সেবা করার সুযোগ প্রদান করবে। তিনি সবার কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি বহুদিন যাবত তার সেবামুলক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় একজন পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। গত নির্বাচনেও তিনি সিটি কাউন্সিলের সদস্য পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, নির্বাচিত না হলেও তিনি তার ভূমিকায় ভোটারদের কাছে এবং সার্বিকভাবে দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটির প্রিয়মুখে পরিণত হয়েছেন।

ফাতিমা বারইয়াব এর নির্বাচনী অফিস থেকে জানানো হয় যে, ফাতিমা তার নির্বাচনী প্রচারণায় যে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এর মধ্যে রয়েছে অপরাধ দমনে ‘জিরো টলারেন্স নীতি,’ ‘সবুজ ও পরিচ্ছন্ন নেইবার হুড,’ ‘সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সুযোগসুবিধা সম্প্রসারণ,’ ‘পাবলিক স্কুলের জন্য বেশি আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা করা,’ ‘সকলের জন্য সাশ্রয়ী আবাসন,’ এবং ‘মুদ্রাস্ফীতির কারণে স্বল্প আয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যে দুর্ভোগ তা হ্রাসে ভূমিকা পালন। নির্বাচিত হলে তিনি তার অফিস সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা খোলা রাখবেন এবং নির্বাচনী এলাকায় তার কমিউনিটির মানুষকে সাধ্যমতো সেবা করবেন। ফাতিমা বলেছেন, ‘আপনার ভোট আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারে। আমি ডিস্ট্রিক্ট ২৫ থেকে নির্বাচন করছি, আমি লাইফ লং নিউইয়র্কার। এই এলাকায় জন্মেছি এবং এই এলাকায় বড় হয়েছি। ফাতিমা আরো বলেছেন, আমি ইমিগ্রান্টদের সমস্যা ও কষ্ট সম্পর্কে ভালো জানি। এগারো বছর বয়সে আমাকে আমার বাবার ব্যবসায়ে কাজ শুরু করতে হয়েছিল। ইমিগ্র্যান্ট মা-বাবার সন্তান হিসাবে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। আমি আমার অভিজ্ঞতাকে ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য কাজে লাগাতে চাই। তিনি নির্বাচিত হলে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পর্যায়ক্রমে পুরণ করার ব্যাপারে আশাবাদী।

তিনি জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজাকে সকলের ‘গন্তব্য’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা করবেন, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল, দেশ থেকে আগত নানা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ একত্রিত হবে। সেই লক্ষ্যেই হবে তার কর্মযজ্ঞ এবং তাকে নির্বাচিত করতে পারলে তিনি কমিউনিটির কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে পারবেন।

ফাতিমা ব্যারইয়াব বলেন, আমি করোনা মহামারীর সময় সেন্ট জোন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর হয়েছি। নির্বাহী আদেশ এবং অপশাসন এবং বড় কর্পোরেশনগুলিকে সমৃদ্ধ করতে বিলিয়ন ডলার তাদের স্বার্থে ব্যয় করে নিউইয়র্কের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলা হয়েছে। অতএব, আমি আমার স্বপ্নের ক্যারিয়ার, যা ছিল একজন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক হওয়ার, তা ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়ে নিউইয়র্ক সিটির অপ্রতিনিধিত্বহীন ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির কল্যাণে এবং সিটিতে বেড়ে চলা অপরাধ, মুদ্রাস্ফীতি ও স্বেচ্ছারিতা দূর করার জন্য প্রতিনিধিত্ব করে সিটির একজন আইন প্রণেতা হিসাবে সিটি হলে ইমিগ্রান্ট কমিউনিটির কণ্ঠ সোচ্চার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সিটি থেকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে, আমাদের অর্থনীতি বিধ্বস্ত, আমরা ভীত যে আমাদের ব্যবসা ও বাড়িঘর থেকে আমরা বঞ্চিত হবো, খাদ্যের মূল্য ও গৃহহীনতা বেড়েছে এবং বেকারত্ব ্র সহিংস অপরাধ বেড়েই চলেছে। গত দুই বছরে সিটিতে আমাদের ঘণচউ অফিসারসহ প্রায় এক হাজার নিরীহ লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই বিশৃঙ্খল অবস্থার সুযোগ নিয়ে প্রতারকরা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে আচরণ করছে। কারণ মহামারী সময়ে বিচার ব্যবস্থা মহামারী পরবর্তী সময়ের পরিস্থিতি মোকাবিলায় দু:খজনকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। নিউইয়র্কের অধিবাসীদের নিউইয়র্ক থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেন এটি একসময় পলাতক দাসদের আবাস ছিল। এই সেদিনও আমাদের স্টেট ছিল ইমিগ্রান্টদের জন্য ‘আমেরিকান স্বপ্ন’ আবাস, সেখানে সারা বিশ্ব থেকে লোকজন আসতো। আজ সেই স্বপ্ন আমাদের সকলের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। শ্রমজীবী মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্যও আমেরিকান স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতিমা বারইয়াবের প্রার্থিতার সুযোগ অবরুদ্ধ করতে ডেমোক্রেটিটিক ও রিপাবলিকান পার্টি এক। আসন্ন নির্বাচনে নিউইয়র্ক সিটি ডিস্ট্রিক্ট ৩০ নির্বাচনে ব্যালট পেপাে উভয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী থাকা এর সেরা দৃষ্টান্ত।

তার নির্বাচনী ক্যাম্পেইন অফিস সূত্রে বলা হয়েছে যে, নিউইয়র্ক সিটি ডিস্ট্রিক্ট ২৫ এর ভোটাররা ব্যালট পেপারে ওয়ার্কিং ফ্যামিলি, কনজারভেটিভ এবং মেডিকেল ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী দেখে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে আরো বিভ্রান্ত হতে পারেন। ফাতেমা বারইয়াবকে প্রতিহত ও ও আড়াল করার জন্য ‘এ,’ ‘বি,’ ‘ডি’ এবং ‘এফ’ কলামের অধীনে ভোটার একই নাম দেখতে পাবেন, জন্ম থেকে এই নেইবারহুডে জন্মগ্রহণ করেছেন ও বেড়ে উঠেছেন এবং তিনি এই ডিষ্ট্রিক্টের জন-বৈচিত্রের প্রকৃত প্রতিনিধি ও বিভিন্ন ঐতিহ্য, বিশ্বাস এবং রাজনৈতিক মতামত ও বিশ্বাসের মানুষের প্রকৃত প্রতিনিধি।

“প্রতারণাপূর্ণ প্রক্রিয়াকে পরাজিত করতে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কলাম ‘কে’ তে ফাতিমা বারইয়াবকে আপনার মূল্যবান ভোট প্রদান করুন।”

তিনি বলেছেন, এই সিটির দু’জনের মধ্যে একজন হয় একজন ইমিগ্রান্ট অথবা তার ইমিগ্রান্ট ঐতিহ্য আছে, যে কারণে তারা এমন একটি নেইবারহুডের প্রয়োজন অনুভব করে, যে নেইবারহুড অপরাধ ও মাদকমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ, রাস্তা ও সাবওয়ে নিরাপদ। এছাড়া কমিউনিটি সেন্টার, ক্ষুদ্র ব্যবসার ও সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সুবিধা, আরও ভালো সিটি হাসপাতাল, নিরাপদ পাবলিক স্কুল, উত্তম আবাসন এবং সুপারমার্কেটে পুষ্টিকর খাবার পাওয়ার সুবিধা থাকা আবশ্যক।

ফাতিমা বারইয়াব তিনটি বিষয়কে তার প্রধান নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে গ্রহণ করেছেন:

অপরাধ :

জননিরাপত্তা আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার. ৯১১ এ কল করার পর সাড়া পাওয়ার সময় কমানো। এনওয়াইপিডি বাজেট পুনরুদ্ধার এবং কমিউনিটি সম্পর্ক সম্প্রসারণ। যারা অপরাধের শিকার তাদের জন্য আরও অর্থনৈতিক সম্পদ এবং সুরক্ষা। আমাদের যুব কর্মসূচিতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে যাতে তারা গ্যাং, মাদক এবং মানসিক নির্যাতন থেকে দূরে থাকে

মুদ্রাস্ফীতি :

জীবনযাত্রা ও খাদ্যের ক্রমবর্ধমান ব্যয় শ্রমজীবী পরিবারকে ধ্বংসের প্রান্তে নিয়ে গেছে। সিটি সেলস ট্যাক্স, পার্কিং জরিমানা, ওয়ান এন্ড টু-ফ্যামিলি হাউজের প্রপার্টি ট্যাক্স হ্রাস করে, সিটি সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য নতুন ছোট ব্যবসা গড়ে তোলা ও আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায্য করতে ট্যাক্স হলিডের ব্যবস্থা করা।

গণতন্ত্র রক্ষা :

স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের কমিউনিটি বোর্ডে নেতা হতে সাহায্য করার লক্ষ্যে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ভোটিং পাঠ্যক্রম তৈরি করা প্রয়োজন। তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি বোর্ডে সদস্যদের মনোনয়ন প্রথার অবসান ঘটিয়ে যেসব কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব কম, তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে কমিউনিটি বোর্ডে স্বচ্ছ নির্বাচনের সাথে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ সৃষ্টি করা।

Facebook Comments Box

Posted ১:০৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com