নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট | 168 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ব্রিকসে ডেকে নিয়ে অপমান বাংলাদেশকে। ৪টি দেশও নতুন সদস্য হলে অবশ্যই বাংলাদেশ থাকবে। এমন নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৬টি দেশকেও সদস্য পদ দিলেও তালিকায় বাংলাদেশে নেই। ব্রিকসের অন্যতম মোড়ল রাষ্ট্র হচ্ছে ভারত। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে শেখ হাসিনাকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনার বার্তা দিয়েছেন। আর জানিয়েছেন ব্রিকসের সদস্যপদ পরে দেখা যাবে। বার্তাটি শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জন্য সুখকর ছিল না। আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর্জেন্টিনা, মিশর এবং ইথিওপিয়াকে নতুন সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ব্রিকস জোটে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্রিকস সম্মেলনের শেষ দিনে ছয়টি দেশকে ব্রিকসের পূর্ণ সদস্য হিসেবে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় বলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নতুন দেশগুলোর সদস্যপদ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকসের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকটা আশাবাদী হয়েই দক্ষিন আফ্রিকায় গিয়েছিলেন। বাংলাদেশসহ ২২টি দেশ এই জোটে যুক্ত হওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছিল। ব্রিকস হল উদীয়মান অর্থনীতির পাঁচটি দেশ– ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং সাউথ আফ্রিকার প্রথম অক্ষরের সমন্বয়ে নামকরণ করা একটি জোট। তবে এ জোটটি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিরোধী জোট হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিত।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এই নতুন ও সম্ভাবনাময় পাওয়ার প্লেয়ার সংঘটনের মোড়ল হচ্ছে চীন ও ভারত। তারা উভয়েই বাংলাদেশকে আশস্ত করেছিল সদস্যপদ দেবার ব্যাপারে। আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে চীনের বিশেষ দূত বাংলাদেশ সফর করে এমন প্রতিশ্রতি দেয়। সাম্প্রতিককালে চীনের সাথে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠতায় ভালোভাবে নেয়নি ভারত। মুখে বাংলাদেশের প্রার্থীতার ব্যাপারে ইতিবাচক বললেও শেষ মুর্হুতে পিছুটান দেয়। রাশিয়ার সাথেও বাংলাদেশের সাথে সম্প্রতি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠায় সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কিন্তু প্রতিবেশির পিছুটানে সবকিছু হাতছাড়া হয়ে গেল।
এ ব্যপাারে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বিবিসিকে বলেছেন, প্রথমত ব্রিকসে যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তার মধ্যে সবগুলো দেশই অর্থনৈতিকভাবে সামনের দিকে অগ্রসরমান দেশ এবং এদের সবার অর্থনৈতিক অবস্থাই বাংলাদেশের তুলনায় ভাল।
“আমরা তো এখনো এলডিসিভূক্ত দেশ হিসেবেই আছি। আর ব্রিকসে যারা আছে তাদের লেভেলটা তো আরেকটু উপরে।” বিকল্প একটা অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করার মতো সক্ষমতা রাখে এমন সব দেশকেই এবার ব্রিকসে যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
“দ্বিতীয় কারণ হতে পারে যে আমরা সাম্প্রতিককালে আগ্রহ দেখিয়েছি। কাজেই আগ্রহ দেখানো এবং তার জন্য মোবিলাইজেশন যেটা দরকার সেটা কতটুকু হয়েছিল সেটা ব্যাপার। আর আমার ধারণা সে কারণেই বিষয়টা হয়তো বিবেচনায় আসে নাই,” বলেন মি. কবীর।
তবে এবার ব্রিকসে যোগ দিতে না পারার বিষয়টিকে কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে দেখতে নারাজ সাবেক এই কূটনীতিক। তবে রাজনৈতিক ব্যর্থতাকে অনেকেই দায়ি করছেন।
তিনি বলেন, “এটা ব্যর্থতা বলবো না। এটা বলতে পারেন যে, আমরা একটু বেশি প্রত্যাশা হয়তো করেছিলাম।”
চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বাংলাদেশ বাদ পড়ার যথাযথ কারণ জানতে অপেক্ষা করা উচিত। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, বাংলাদেশকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং বলা হয়েছিল যে, চারটি দেশকে যুক্ত করা হলে তার মধ্যে একটি বাংলাদেশ হবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা দেখা যায়নি। “এর কারণ হতে পারে, তারা যে ক্রাইটেরিয়া বিবেচনায় নিয়েছে সেগুলোর সাথে হয়তো বাংলাদেশ ম্যাচ করেনি, পরবর্তীতে যখন তারা আবার অ্যাড করবে তখন হয়তো আসতে পারে। তবে এগুলো সবই ধারণা মাত্র।”
Posted ২:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam