সারাদেশ ডেস্ক | শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট | 110 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
বন্যার পানি কমতে শুরু করায় গত বুধবার হতে তিস্তা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তিস্তাপারের মানুষ। নদী ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী ও টেকসই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার পানি কমে যাওয়ায় বেলকা, চন্ডিপুর, শ্রীপুর, হরিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০টি পরিবারের বসতবাড়ি এবং ৩০০ হেক্টর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে পাঁচশতাধিক বসতবাড়ি এবং কয়েক হাজার একর ফসলি জমি।
উপজেলার বেলকা চরের ফরমান আলী বলেন, নদীর থেকে তার ঘরের দূরত্ব এখন মাত্র ৪ হতে ৫ হাত। যে কোন মুহূর্তে তাঁর একমাত্র ঘরটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে গত দু’দিন ধরে পরিজন নিয়ে রাতে ঘুমাতে পারছেন না। তিনি জানান, ৫ বার তার বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ষষ্ঠবারের মতো আবারো নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। বারবার নতুন করে বসতবাড়ি গড়তে গিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। দিনমজুরি করে কোনমতে সংসার চালান তিনি। ফের বসতবাড়ি সরিয়ে নেয়ারমত সম্বল নেই তাঁর।
উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের লখিয়ার পাড়া গ্রামের জরিপ উদ্দিন বলেন, বন্যার পানি কমতে না কমতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাঁর বাড়ির আশপাশ গত দু’দিনে ১০টি পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে কমপক্ষে ২০টি পরিবার তাদের বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। তিনি জানান, তাঁর আমন ধানের চারা রোপন করা ২ বিঘা জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আজ–কালের মধ্যেই বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে।
কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মনজু মিয়া জানান, তার ইউনিয়নে কমপক্ষে ৫০টি পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে হাজারও পরিবার। রাস্তা ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিছিন্ন হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন ইউনিয়নে কমপক্ষে ১০০ পরিবারের বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়াম্যানদের কাছ থেকে ভাঙনকবলিত পরিবারদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক জানান, ভাঙন ঠেকাতে হরিপুর ইউনিয়নের কাশিমবাজার এলাকায় জিও টিউব ও জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নুর-এ আলম জানান, উপজেলার বেলকা, হরিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ভাঙনের মুখে পড়েছে অনেক পরিবার। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলোকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
Posted ৯:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter