
সারাদেশ ডেস্ক | রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট | 95 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
আষাঢ়ে বৃষ্টির বদৌলতে অসহনীয় গরম থেকে আপাতত মুক্তি মিললেও বিভিন্ন এলাকায় শোনা যাচ্ছে বন্যার পদধ্বনি। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এরইমধ্যে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সিলেট অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে। তবে এই বন্যা দুই থেকে তিন দিনের বেশি স্থায়ী হবে না। উত্তরে নদনদীর পানি বাড়লেও বন্যার শঙ্কা নেই মনে করছে সংস্থাটি।
রংপুর অফিস জানায়, উজানে বর্ষণ ও নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা (৫২.৬০ সেন্টিমিটার) ছুঁই ছুঁই করছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
রংপুর পাউবো সূত্র জানায়, তিস্তার উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গত পাঁচ দিনে নদীর পানি সমতল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ৬০ সেন্টিমিটার বেড়ে গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে ৫২.২ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হয়। তবে উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় এ পানি আবার বেড়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদ্দৌলা জানান, উজান থেকে আসা ঢল ও কয়েকদিনের অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বেড়েছে। তবে ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে থাকবে। পানি বাড়লে তিস্তাপারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। বন্যা মোকাবিলায় পাউবো প্রস্তুত আছে।
এদিকে তিস্তার পানি বাড়ার ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার নদীপারের মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মিটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার পানি বেড়েছে বলে খবর পেয়েছি। সব এলাকায় সবসময় খোঁজখবর রাখাসহ আমরা সতর্ক রয়েছি।
রংপুর পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, শনিবার সকালে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় নদীর পানিপ্রবাহ ছিল ৫২.৬ সেন্টিমিটার। যদিও পরে কমতে শুরু করেছে। এ সময়ে নদীর পানি বাড়বে-কমবে এটাই স্বাভাবিক।
এ দিকে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে। ফলে ঢল আর বৃষ্টিতে সিলেটের নদনদীর পানি বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং বিভিন্ন হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তবে সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিফ আহমেদ জানান, নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। সামান্য বাড়লেই তা অতিক্রম করবে।
এদিকে ভারতের আসাম রাজ্যে কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানকার ১১টি জেলার ৩৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাজ্যটির মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদ ও আরও কয়েকটি নদনদীর পানি বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
Posted ১২:০৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ জুন ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter