মঙ্গলবার ১৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

 সাহারি খাওয়ার অভিজ্ঞতা ঃ আফরোজা ইসলাম

আফরোজা ইসলাম   |   শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   382 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

 সাহারি খাওয়ার অভিজ্ঞতা ঃ   আফরোজা ইসলাম

 

কান টানলে যেমন মাথাটা চলে আসে,তেমনি রোজার সাথে সাহারি খাওয়ার প্রসংগটাও আসে।ছোটকালে এই সাহারি খাওয়ার জন্য কতই না চেস্টা।ঘুম যাতে না আসার চেস্টা ,মা যদি ভোররাতে ডাক না দেন।পাছে ছোট তিন ভাই-বোনের পাল্লা দেয়া রোজায় পিছিয়ে পড়ি।মা কখনো কখনো ইচ্ছে করেই ডাকতেন না ।সকালে উঠে সে কি মন খারাপ। যাক সে সব সুন্দর স্মৃতির কথা ।

রমজান মাস হলো ঈমানদারের আমল এবং ইবাদতের ভরা বসন্ত ।নেক আমলের সবচেয়ে বড় মৌসুম।ঈমানদারের নেক আমলের কোন  ত্রুটি ,কোন ঘাটতি বা কোন কমতি থাকে ,তা হলে সেই নেক আমলের  ঘাটতি ও কমতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য আল্লাহ রমজানের এই বিশাল মৌসুম দিয়েছেন ।সাহারি খাওয়া এ মৌসুমে একটি স্বতন্ত্র ইবাদত।

 

 

আমরা অনেকে সাহারি না বলে সেহেরি বলে থাকি।কিন্তু সেহের শব্দের অর্থ যাদু।যে শব্দের অর্থ বাজে বা অর্থের মধ্যে বিকৃত ঘটে সেই শব্দ উচ্চারণ না করাটাই উত্তম।সাহারি বা সাহুর শেষ রাতের খাবার।মাঝ রাত থেকে শুরু করে ভোরের আগ পর্যন্ত সাহারির সময় ।সাহারি খাওয়ার মধ্যে বরকত এবং কল্যাণ নিহিত  আছে ।বরকত এবং কল্যাণের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সবার প্রিয় খলিল বিরিয়ানী রেস্টুরেন্ট এর সিইও খলিল ভাই দাওয়াত করেছিলেন ৪।১৫।২০২৩ তারিখে সাহারি খাওয়ার।এপ্রিল ১৩ তারিখে রাত আনুমানিক ১১:৩০ ব্রংকসে বসবাসরত হাবীব ভাই কর্তার ফোনে জানালেন এই সুন্নত খাওয়ার কথা ।সময় রাত ২টা।কৌতুহলী হলাম। সাথে এ্যাডভেঞ্জার ভাবের জগতে চলে গেলাম ।বাহ্ ভালোইতো রাত ২টায় সুন্নত পালন করতে সম্মতি হলাম ।১৪ই এপ্রিল (২০২৩) জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির উদ্যোগে ইফতার পার্টির আয়োজনে আমন্ত্রিত ছিলাম এবং যথারীতি গিয়েছিলাম ।বাংলাদেশ থেকে কর্তার কলিক সম্রাট ভাই এসেছিলেন । ওনাকে সাথে নিয়েই যোগ দেয়া । তারপর জ্যাকসন হাইটসে পুরোনো বন্ধুদের সাথে দেখা করা ।বন্ধু বলে কথা । আড্ডা দিয়ে রাত ১২:৩০ মিনিটে  বাসায় আসা ।তা হলে ঘুম ? না ঘুমাতে পারছি না । নামাজ শেষে তৈরী হয়ে রাত ১:৩০ মিনিটে সাহারি খাওয়া অর্থাৎ সুন্নত পালন করার উদ্দেশ্যে আমাদের সবার প্রিয় খলিল ভাইয়ের আমন্ত্রণে যোগ দিতে রওনা দেয়া ।

গাড়ি পার্ক করে যথারীতি হাজির ।বিশাল টেবিল ,সাহারি খাওয়ার জন্য। টেবিলের প্রস্তুতি দেখে ভালো লাগলো ।এক এক  করে সবাই বসলাম ।মনে হলো এ যেন বাংলাদেশে কোন আপন পরিবারের সাথে সাহারি খেতে বসেছি ।গত সপ্তাহের (সম্পর্ক) লেখাতে লিখেছিলাম যে ,রক্তের সম্পর্ক ছাড়াও কিছু কিছু সম্পর্ক খুব গভীর সম্পর্কে  পরিণত হয় । তেমনি একজন খলিল ভাই । পার্কচেষ্টারে যাবো আর খলিল ভাইয়ের রেস্টুরেন্টে চা না খেয়ে বিদায় এটা হতেই পারে না ।শুধু কি চা খাওয়া ? না খলিল ভাইয়ের সাথে চুটিয়ে আড্ডাও চলতো।

যা হোক যথারীতি খাবার নিলাম ।মজার মজার খাবার  যেমন ,মুরগী মাংস,গরুর মাংস সাথে আলু দিয়ে রান্না ,লাউ দিয়ে বড় বড় চিংড়ি,ইলিশ মাছ পিঁয়াজ দিয়ে ,আলু ভর্তা ,ঘন ডাল।শুধু তাই নয় দুধ,কলা,ফিরনি ও দই ছিল ।তৃপ্তি সহকারে আহার করলাম ।চমৎকার লাগছিল লম্বা হয়ে সবাই এক সাথে বসে সাহারি খাওয়ার যে আনন্দ পেলাম কিছু ক্ষনের জন্য ছোটকালে ফিরে গিয়েছিলাম ।ছোটকালে জয়েন্ট ফ্যামিলীতে সবাই একসাথে সাহারি করতাম এবং পরে  গল্প বা না ঘুমিয়ে শিউলী ফুল কুঁড়াতে যেতাম।শিউলী ফুল কুঁড়াবার বয়স আর নেই , তবে

ভোররাতের সাহারি খেয়ে আড্ডা এ অভিজ্ঞতার কথা সহজে ভোলার নয়।সেজন্য খলিল ভাইকে ধন্যবাদ  জানাই এতো সুন্দর আয়োজনের জন্য । দোয়া করি খলিল ভাইয়ের দীর্ঘ জীবনের ,যাতে প্রতিবারই যেন এই আনন্দটুকু উপভোগ করতে পারি।

(৪/২০/২০২৩, নিউইয়র্ক)

 

Facebook Comments Box

Posted ২:২১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com