সারাদেশ ডেস্ক | রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 143 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ঈদ যত এগিয়ে আসছে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট (বিপণিবিতান) ও রিয়াজউদ্দিন বাজার ততই জমজমাট হয়ে উঠছে। সকাল থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম থাকছে মার্কেট দুটি। দামাদামি করে ক্রেতারা পছন্দের পোশাক ও প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বাড়ি ফিরছেন। রিয়াজউদ্দিন বাজারের মধ্যে ১১০টি মার্কেটের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা তামাকুমণ্ডি লেনে সব ধরনের পোশাক ও পণ্য পাওয়া যায়। ঈদের জামা, ফুটওয়্যার, ইলেকট্রনিক পণ্য, জুয়েলারি থেকে শুরু করে সবকিছুই মিলছে এখানে। ঈদ সামনে রেখে প্রতিটি পণ্যের প্রচুর কালেকশন রয়েছে দোকানে।
নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও তামাকমুণ্ডি লেন বণিক কল্যাণ সমিতির আওতাধীন ২৬০টি ছোট-বড় মার্কেটেই এখন ঈদের বিকিকিনি চলছে বিরামহীন। ঈদ টার্গেট করে প্রচুর বিনিয়োগ করে নতুন পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু তামাকুমণ্ডি লেনেই রয়েছে ১১০টি মার্কেট। ঈদ পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, জুয়েলারি ও পাঞ্জাবিসহ নতুন নতুন কালেকশন রয়েছে প্রতিটি মার্কেটে। গভীর রাত পর্যন্ত সাধারণ ক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত থাকছে এই বিপণি কেন্দ্রটি।
তামাকুমণ্ডি লেন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তামাকুমণ্ডি লেনে ১১০টি মার্কেটে ১৫ হাজার দোকান রয়েছে। এখন ঈদের জমজমাট কেনাকাটা চলছে। এখানে হালকা পাইকারি বিক্রি হয়, খুচরাটা বেশি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তামাকুমণ্ডি লেন এমন একটা জায়গা যেখানে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। নিজস্ব উৎপাদন, ঢাকা থেকে কালেকশন, বিদেশ থেকে আমদানি সব ধরনের পণ্য এখানে আছে। রমজান ঘিরে এখানে প্রায় হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়।’
অন্যদিকে নগরের অভিজাত বিপণিবিতান নিউমার্কেটও ঈদের কেনাকাটায় জমজমাট। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচা-বিক্রির ধুম। চাঁদ রাতের ভিড় এড়াতে অনেকেই আগেভাগে সেরে ফেলছেন ঈদের কেনাকাটা। কিনছেন পছন্দের পণ্যটি।
শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, অনেকে সপরিবারে, কেউবা বন্ধু-বান্ধব আবার কেউ একা ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করা ঐতিহ্যবাহী মার্কেটটিতে মূলত শবেবরাতের পর থেকেই ঈদের কেনাকাটার ধুম পড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নতুন ডিজাইন ও বাহারি রঙের শাড়ি, থ্রি-পিস, জুতা, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট, টুপি, ঘর সাজানোর নানা অনুষঙ্গ সবকিছুই মিলছে এখানে। দামও সাধ্যের মধ্যে। বিপণিবিতানে ৫০৭টি দোকান রয়েছে। দেশীয় পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বিদেশি বিভিনœ ব্র্যান্ডের আউটলেট রয়েছে। এখন সব শ্রেণীর ক্রেতারই কেনাকাটার ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ নিউমার্কেট। নিচতলার আর্ট, নিউ পাঞ্জবি বিতান, ক্রাফট ক্যাসল, অনন্যায় শুধু ছেলেদের পোশাক, জুতা ও টুপি বিক্রি হচ্ছে। এখানকার বিক্রয়কর্মী ফয়সাল জানান, ঈদ উপলক্ষে এবার তাদের বিশেষ আকর্ষণ ডেনিমের পাঞ্জাবি। চট্টগ্রামে একমাত্র তারাই পাতলা জিন্সের এ পাঞ্জাবি বিক্রি করছেন। দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া এখানে মানভেদে টি-শাটের্র দাম রাখা হয়েছে ৯০০ থেকে দুই হাজার টাকা, ক্যাজুয়াল ও ফরমাল শার্ট ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, জিন্স প্যান্ট ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, গ্যাবাডিন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, নানা ডিজাইনের টুপি ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং বিভিনœ ধরনের জুতা পাওয়া যাচ্ছে ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকার ভেতর। এছাড়া নিচতলার রেভলন, রিচম্যান, হান্ডি বাজার, ক্যাটস আই, খাকি, মুনওয়াকার, জ্যান্টল পার্ক, শৈল্পিক, মেনজ ক্লাব এমন নামিদামি ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ছেলেদের বিভিনœ পোশাকের বৈচিত্রময় সংগ্রহ থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পণ্যটি কিনে নিচ্ছেন।
অভিজাত মার্কেটটির নিচতলার শাড়ির দোকানগুলোতে গৃহবধূ ও তরুণীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ঈদের ব্যতিক্রম শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ যাচাই-বাছাই কিনছেন নারী ও তরুণীরা। শাড়িকা, সিলকি ফ্যাশন, তারা শাড়িজ, শাড়ি কালেকশন, ওয়াদুদ ব্রাদার্স, পাবনা শাড়িজ, চারুলতা টাঙ্গাইল শাড়িজ, প্রাইড টেক্সটাইল, পারফেক্ট টেক্সটাইল ইত্যাদি দোকানগুলো দেশি-বিদেশি বিভিনœ শাড়ির সমাহার রয়েছে। শাড়ি বিক্রেতারা এবার ভারতীয় কাতান, বেনারসি, কাঞ্চিভরণ, মিনাকুমারী, মৌ মাস্তান, কাশ্মিরী সিল্ক ইত্যাদি শাড়ির চাহিদা বেশি। ক্রেতা মারুফ জামান বলেন, মার্কেট ও পণ্য অনুসারে কাপড়ের দাম একটু বেশি। ঈদ উপলক্ষে সাশ্রয়ীমূল্যে কেনার জন্য এসেছি। কিন্তু দরাদরি করার কোন সুযোগ দিচ্ছে না। সবগুলো নাকি একদামে বিক্রি করবে। তাই বাজেটের মধ্যে না হওয়াতে অন্য আরেকটি মার্কেটে যাচ্ছি। তবে দাম বাড়তির বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান বিপনী বিতান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সগীর। তিনি বলেন, সামান্য লাভ করে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। অতি মুনাফা বা মৌসুমী ব্যবসা করার জন্য অতিরিক্ত দাম রাখা হচ্ছে না।
Posted ১:৪৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter