রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ঈদের বাজার: দাম ও বাজেটে বিস্তর ফারাক

সারাদেশ ডেস্ক   |   সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   188 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

ঈদের বাজার: দাম ও বাজেটে বিস্তর ফারাক

‘ভাতিজাকে নিয়ে বড় দোকানে গেলে সে যে পোশাক পছন্দ করেছে, তা ৭০০ টাকা চায়। ৫০০ টাকা বললাম, দিল না। পরে তাকে অনেক বুঝিয়ে ফুটপাত থেকে পোশাক কিনেছি।’ আলফাডাঙ্গার ফুটপাতে কথাগুলো বলছিলেন ভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম। উপজেলার চরডাঙ্গা গ্রামের রহিমা বেগম ছেলেমেয়েকে নিয়ে পোশাক কিনতে বড় দোকানে গিয়েছিলেন। তবে পছন্দ হলেও দাম বেশি দেখে ফুটপাতের দোকানে যান।

ঈদ উপলক্ষে পোশাক কিনতে শফিকুল বা রহিমার মতো নিম্ন আয়ের মানুষ ভিড় করছেন ফুটপাতে। এখানেও গত বছরের তুলনায় দাম বেশি। প্রতিটি পোশাকের দাম ৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অবশ্য ধীরে ধীরে ভিড় বাড়ছে ফুটপাত থেকে শুরু করে বিপণিবিতানে। এবার ভারতীয় পোশাকের চাহিদা বেশি। তবে দেশি-বিদেশি সব পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। বিক্রেতারা বলছেন, বেশি দামে কেনায় বিক্রিও করছেন বেশি দামে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর বেশ কিছু দোকান ঘুরে জানা গেছে, এবার তরুণীরা মুম্বাইয়ের নায়রা, কলকাতার গাউন, কাতান, গুলজার ও থ্রি-পিসে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ছেলেদের পছন্দ ভারতীয়, পাকিস্তানি ও খদ্দরের পাঞ্জাবি, দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টি-শার্ট, কাতুয়া ও জিন্স প্যান্ট। শিশুরাও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ভিড় থাকলেও বেচাকেনা কম বলে দাবি বিক্রেতাদের।

হরিণাকুণ্ডুর মুন্সী মার্কেটের ব্যবসায়ী ওহিদুল ইসলাম জানান, এবার নারীর ভিড় বেশি। গাউন ও লেহেঙ্গায় তাঁদের নজর থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় বিক্রিও কম। শিলা নামের এক তরুণী বলেন, ভারতীয় কাতান থ্রি-পিসের নতুন ডিজাইন দেখতে সুন্দর হলেও দাম বেশি।
তিনি সাড়ে চার হাজার টাকায় একটি থ্রি-পিস কিনেছেন।

আলফাডাঙ্গার অভিজাত এলাকা বলে পরিচিত কাপড়পট্টির ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের নায়রা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে ছয় হাজার টাকায়। দিল্লির গাউন সাড়ে চার হাজার থেকে আট হাজার টাকা। গত বছর তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। সারারা, বিনয়, ক্লাসিক ও শালিক বিক্রি হচ্ছে সাড়ে তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকায়। গত বছরের চেয়ে দাম বেড়েছে এক হাজার টাকার ওপরে।

ছেলেদের খদ্দর পাঞ্জাবির দাম আড়াই হাজার থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত। ভারতের ফ্রেবিক্সে বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকায়। সবগুলোর দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বেড়েছে। শার্ট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। জিন্সের প্যান্ট ডিজাইন ও ব্র্যান্ড ভেদে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকায়। শিশুদের বিভিন্ন ধরনের পোশাকে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। নারী, পুরুষ ও শিশুদের এক হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের পোশাক বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের পোশাক বেশি পছন্দ করলেও দাম বেশি দেখে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। আলফাডাঙ্গা সদর বাজারের আল-মদিনা বস্ত্র বিতানের মালিক রাজীব ইসলাম বলেন, বিক্রি কম হলেও রমজানের মাঝামাঝি সময়ে এসে ক্রেতার ভিড় বাড়ছে। একই ধরনের কথা বলেন কলেজ রোডের গাংচিল ব্র্যান্ড কালেকশনের মালিক শামিম তালুকদার।

স্কুলশিক্ষক কামাল হোসেন শহরের কাপড়পট্টিতে পরিবার নিয়ে কাপড় কিনছিলেন। তিনি বলেন, রমজানের শেষ দিকে অনেক ভিড় থাকে। এ জন্য এখনই পোশাক কিনছেন। তবে যে টাকা নিয়ে এসেছেন, তাতে বাচ্চাদের পোশাক কিনে নিজেদের জন্য কিছু থাকবে না বলে জানান। পৌরসভার বাসিন্দা মিনহাজ হোসেন বলেন, বাজার তদারকি না হলে ঈদবাজারে ক্রেতারা ঠকবেন।

আলফাডাঙ্গা বস্ত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সাতরং গার্মেন্টসের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল বলেন, ব্র্যান্ডের পোশাকের দাম বেশি। বাজারে সব শ্রেণির মানুষের কেনাকাটার ব্যবস্থা রয়েছে। ফুটপাত ও ভাসমান দোকানে গিয়েও পছন্দের পোশাক কিনতে পারছেন।

হরিণাকুণ্ডু বাজার এলাকার প্রসিদ্ধ কাপড় ব্যাবসায়ী পলাশ জানান, প্রতি বছরই তাঁর দোকানে ঈদের আগে ভালো বেচাকেনা হয়। এবার গতবারের চেয়ে একটু কম। তিনি দোকান সাজিয়েছেন দেশি-বিদেশি নানা ডিজাইনের পোশাকে। তরুণ-তরুণী, নারী, শিশুসহ সব বয়সের মানুষ দোকানে আসছেন।

ঝিনাইদহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মামুনুল হাসান বলেন, এরই মধ্যে কয়েকটি দোকানে তদারক করা হয়েছে। প্রতিটির চালান চেক করা হচ্ছে। তবে উপজেলা পর্যায়ে এখনও তদারকি করা হয়নি। দ্রুতই শুরু হবে। কোথাও বেশি দামে পোশাক বিক্রি করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com