রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাভাবিক উৎপাদনে পোশাক কারখানা

বাংলাদেশ ডেস্ক   |   সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   61 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

স্বাভাবিক উৎপাদনে পোশাক কারখানা

তৈরি পোশাক কারখানা ফিরছে স্বাভাবিক চেহারায়। দুই সপ্তাহের শ্রমিক অসন্তোষ কাটিয়ে গাজীপুর ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে গতকাল রোববার দেখা যায় কর্মচাঞ্চল্য। ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। দিনভর চলে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম।

গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা, কারখানা মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পরই পরিস্থিতির নতুন মোড় নেয়। ওই বৈঠকে শ্রমিকদের দাবি জেনে ব্যবস্থা এবং কারখানায় বিশৃঙ্খলা রোধে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে গতকাল কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সরকারের পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যরা আশুলিয়ার বেশ কয়েকটি কারখানা পরিদর্শন করেন।

বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, পোশাকশিল্পের স্বাভাবিক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন তারা। এখনও দু-একটি কারখানায় সমস্যা রয়েছে, যা সারা বছরই থাকে। উৎপাদন এবং রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় অনেক কারখানা কর্তৃপক্ষ অর্থ সংকটে পড়েছে। তাদের মজুরি বকেয়া পড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই এটি সমাধান হয়ে যাবে।

আশুলিয়ার প্রায় সব কারখানায় দিনভর স্বাভাবিক উৎপাদন চলে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাইন ধরে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। যদিও গতকাল ২০ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। এর মধ্যে ১৮টিতে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা এবং দুটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানা পরিদর্শন করে শ্রম-সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি। কমিটির ১১ সদস্য কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। কমিটির সদস্যরা সকালে প্রথমে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার অনন্ত গ্রুপ, পরে হা-মীম গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন করেন।

সরেজমিন হা-মীম গ্রুপ, অনন্ত গ্রুপ, শারমিন গ্রুপসহ বিভিন্ন পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করতে দেখা যায়। অন্যান্য এলাকার মধ্যে নিশ্চিন্তপুরের নিউএইজসহ নাসা গ্রুপের সবক’টি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে দেখা যায়। এসব কারখানায় গত কয়েক দিন ধরেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছিলেন।

এ ছাড়া বাইপাইল, জামগড়া সরকার মার্কেট, টঙ্গিবাড়ী, ঘোষবাগ, চারাবাগ এলাকাসহ শিল্পাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকার কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন চলেছে। তবে নরসিংহপুর এলাকায় মদিনা, পার্ল গার্মেন্টসহ ২০ কারখানা বন্ধ ছিল।

পরিদর্শনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক সবুর হোসেন বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আশা করছি আর অবনতি হবে না। সব কারখানা ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হবে। কোনো দাবিতে সড়ক ও কাজ বন্ধ রাখার প্রয়োজন পড়বে না।

শিল্পাঞ্চলে পুলিশ সতর্ক ছিল। আশুলিয়ার কাঠগড়া, জিরাবো, নরসিংহপুর, জামগড়া এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। একই সঙ্গে টহলও দেয়।

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রম আইন ১৩(১) ধারায় ১৮ ও দুটি কারখানায় সাধারণ ছুটির কারণে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বাকি সব কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন হয়েছে। শিল্পাঞ্চলে যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।

গাজীপুরে চালু ৯৫ শতাংশ কারখানা

গাজীপুরে ৯৫ শতাংশ পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। জেলা ও মহানগরের এসব কারখানায় দিনভর স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম চলে। কোথাও কোনো শ্রমিক আন্দোলনের খবর পাওয়া যায়নি। শিল্প পুলিশ জানায়, অর্থ সংকটের কারণে কোনো কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিতে পারেনি বলে কারখানা বন্ধ রাখেন তারা।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, টঙ্গী, গাজীপুর মহানগর, শ্রীপুর ও কালিয়াকৈর এলাকার ৯৫ ভাগ কারখানা খোলা ছিল। নিরাপত্তায় শিল্প পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দেন।

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক ও গাজীপুর প্রতিনিধি)

Facebook Comments Box

Posted ২:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com