রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গুরুত্ব পাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনীতি

জাতীয় ডেস্ক   |   রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   84 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

গুরুত্ব পাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও অর্থনীতি

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবচেয়ে বৈচিত্র্যময়। খুব কম খাতই রয়েছে, যাতে দুই দেশের অংশীদারিত্ব নেই। সম্পর্কের এ অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর। এরই ধারাবাহিকতায় সম্পর্ক আরও দৃঢ় ও এগিয়ে নেওয়ার বার্তা থাকবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে। সফরে বিশেষ গুরুত্ব পাবে দুই দেশের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে পারস্পরিক সহযোগিতা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়। পাশাপাশি আলোচনায় থাকবে ঋণ সহায়তা, সীমান্ত হত্যা ও তিস্তার পানি বণ্টনের মতো অমীমাংসিত বিষয়।

আগামী ২১ জুন দু’দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে হবে দুই প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বৈঠক। গত দেড় দশকের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক প্রত্যয়ের প্রতিফলন ঘটবে শীর্ষ বৈঠকে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর এটাই তাঁর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর। ২২ জুন শেখ হাসিনার ঢাকা ফিরে আসার কথা। গত ৯ জুন দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান জানান, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২১ ও ২২ জুন দিল্লি সফর করবেন। দ্বিপক্ষীয় এই সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইয়ের কথা রয়েছে। এর মধ্যে যে চুক্তি বা সমঝোতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেগুলোর কয়েকটি নবায়নের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক সামনে রেখে সফরের বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে দুই পক্ষ কাজ করছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক বিস্তৃত। প্রতিনিয়ত এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা থাকে দুই দেশের। এবারও প্রধানমন্ত্রীর সফরে তার ব্যতিক্রম হবে না। সফরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের মতো প্রেক্ষাপট বৈশ্বিকভাবে অর্থনীতিকে ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে গেছে। এর থেকে বাইরে নয় বাংলাদেশ ও ভারত। দুই দেশই উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, জ্বালানিসহ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই দুই দেশ কীভাবে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ ঝুঁকি মোকাবিলা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসতে পারে– বিষয়টি আলোচনায় থাকবে।

এ কারণে ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়নে নতুন রূপরেখা চুক্তি বা বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া মিয়ানমারের পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সংকট, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্য মণিপুর সংকটসহ এ অঞ্চলে বাড়তে থাকা চীনের প্রভাবসহ সার্বিক নিরাপত্তাও গুরুত্ব পাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

জানা গেছে, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সম্পর্কের সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া সর্বশেষ বৈঠকের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো– সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ও ঋণ সহায়তার মতো বিষয় তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, জ্বালানি, নতুন প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে ২২ জুন শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হবে। এ ছাড়া মহাকাশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর, ডিজিটাল অর্থনীতির মতো বিষয়গুলো সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের সফরের প্রস্তুতি হিসেবে গত মে মাসে ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে বাংলাদেশের সদস্য হওয়া, তিস্তা মহাপ্রকল্পে ভারতের আগ্রহ, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন, মাতারবাড়ীর গভীর সমুদ্রবন্দরের সর্বোচ্চ ব্যবহার, ব্রিকসে বাংলাদেশের সদস্যপদ, দ্বিপক্ষীয় ভিসা ইস্যু, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা), উপ-আঞ্চলিক বিদ্যুৎ সহযোগিতা, জাপানের বিগুবি পরিকল্পনা, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে দুই দেশের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।

Facebook Comments Box

Posted ৬:২৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com