শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে সরকার বদ্ধপরিকর

বাংলাদেশ ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   50 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে সরকার বদ্ধপরিকর

সংবিধান অনুযায়ী জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দাবি করেছে সরকার। গতকাল সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে শুনানি বা সর্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনায় (ইউপিআর) এ বক্তব্য তুলে ধরেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, সরকার সংবিধান অনুযায়ী জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর। নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীন, বিশ্বাসযোগ্য এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারে– এ জন্য তাদের যথেষ্ট ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিকে অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করে ইউনিভার্সেল পিরিয়ডিক রিভিউয়ে (ইউপিআর) আইনমন্ত্রী বলেন, এটি অসাংবিধানিক ও অবৈধ।
সংবিধানের বাধ্যবাধকতার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সব রাজনৈতিক দলকে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের অনুমোদন দিচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখছি বিএনপির কর্মীরা সহিংসতা ছড়াচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমকর্মী, নিরপরাধ মানুষ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্কুলকে সহিংস হামলার লক্ষ্য বানিয়েছে। কোনো রকমের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ আটক করছে।

বাংলাদেশের বিরোধী দলের ওপর রাজনৈতিক দমনপীড়নের অভিযোগ থাকলেও বর্তমান সরকারের অধীনে বরং তারা বেশি সুযোগ পাচ্ছে বলে দাবি করে আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক সুযোগের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য গুণগত পরিবর্তন ঘটেছে। সংসদে বিরোধী দলগুলো সর্বোচ্চ স্বাধীনতা ভোগ করছে। আগের রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিপরীতে সংসদীয় কমিটিতে কয়েকটি সভাপতির পদ বিরোধীদের দেওয়া হয়েছে। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রেও বিরোধী সংসদ সদস্যদের মতামতকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকারের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যে কোনো মানবাধিকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড করে থাকলে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আইনমন্ত্রী দাবি করেন, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে পূর্ণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে সরকার অনলাইন ও অফলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিয়েছে। বর্তমানে দেশে ৩৯টি টিভি চ্যানেল, ৫৭৬টি সংবাদপত্র ও ১৮২টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। ২ হাজার ৩২৮টি স্থানীয় এনজিও ও ২৬৭টি বিদেশি এনজিও কোনো ধরনের বাধা ছাড়া কাজ করছে।

এ ছাড়া শ্রমিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং সহিংসতার ঘটনাকে সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার নাশকতা হিসেবে দেখছে। এ ক্ষেত্রে সরকার শ্রমিকদের রক্ষা ও অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ায় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ইউপিআরে অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ১১১টি দেশের মধ্যে ৯০ ভাগ দেশ বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। তবে কানাডা এবং স্লোভাকিয়া বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। গতকাল রাতে পর্যালোচনা শেষে ভার্চুয়ালি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

আনিসুল হক আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং বেলজিয়াম সবাই আমাদের অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। কিছু কিছু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়াম নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করেছে। তারা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলেছে। সে ক্ষেত্রে আমি নির্বাচনের ব্যাপারে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি।

তিনি বলেন, এবারের সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যক্রম এবং ব্যবস্থাগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারকরণ, জাতীয় পর্যায়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে মানবাধিকার কমিশন ও বিভিন্ন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ, অভিবাসী শ্রমিকের সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়ন, বাল্যবিয়ে রোধকরণ জোরদার এবং মানব পাচার বন্ধে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা সম্পর্কিত কিছু সুপারিশ।

ইউপিআরে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সংলাপের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত জোরালোভাবে আমাদের যে অবস্থা, যা বাস্তব ও সত্য তা বলেছি।

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি-জামায়েতের ভূমিকা প্রসঙ্গে ইউপিআরে দেওয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত কী করছে আমরা সেটা বলেছি। আমি মনে করেছি, এটা বলা সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায্য। আমাদের সাংবিধানিক যে অবস্থান সেটা আমি তুলে ধরেছি।

Facebook Comments Box

Posted ৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com